ভিসা নীতি জনগণের দাবির সুস্পষ্ট প্রতিফলন: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ফাইল ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি ‘বাংলাদেশের জনগণের দীর্ঘদিনের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিরই প্রতিধ্বনি’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।

বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গত বুধবার একটি নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছ যুক্তরাষ্ট্র। নতুন নীতির আওতায় বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বাংলাদেশিদের ভিসা দেবে না দেশটি। বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেন।

আরও পড়ুন

মির্জা ফখরুল তাঁর বিবৃতিতে বলেন, ‘বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক পরিবর্তিত ভিসা নীতি” গতকাল (বুধবার) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এটি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে ৩ মে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন কর্তৃত্ববাদী সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছিল। দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্তৃক প্রকাশিত সংবাদসূত্রে আমরা তা অবহিত হয়েছি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্যভাবে আয়োজনে সব প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য এবং একই সঙ্গে ভোট কারচুপি, ভোটারদের ভয় দেখানো, জনগণের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার স্বাধীনতা ও অধিকারচর্চাকে সহিংসভাবে দমনের যেকোনো নীতির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সরকার যে অবস্থান নিয়েছে, তা বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি। এটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিরই সুস্পষ্ট প্রতিধ্বনি। বিএনপি মনে করে, মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য বিএনপিসহ বাংলাদেশের গণতন্ত্রপ্রিয় জনগণ দীর্ঘদিন যাবৎ যে দাবি জানিয়ে আসছিলেন, পরিবর্তিত মার্কিন এই ভিসা নীতিতে এর সুস্পষ্ট প্রতিফলন ঘটেছে।
মির্জা ফখরুল তাঁর বিবৃতিতে বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে, বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের অধীন কোনোভাবেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না। কেবল একটি নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকারের অধীনই তা সম্ভব। আর সে কারণেই বিএনপি দেশের সব গণতান্ত্রিক দল ও শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকার আদায়ের লক্ষ্যে নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করে চলছে।

আরও পড়ুন

বিএনপির মহাসচিব বিবৃতিতে বলেন, পরিবর্তিত মার্কিন এই ভিসা নীতিতে শুধু পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেই আওতাভুক্ত করা হয়নি; সুনির্দিষ্টভাবে বিচার বিভাগ, প্রশাসন, নিরাপত্তা–সংশ্লিষ্ট সরকারি জনবল, সাবেক ও বর্তমান সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ, যে বা যারা, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, নির্বাচনব্যবস্থাকে ব্যাহত করতে চেষ্টা করবে, তাদের এবং তাদের পরিবারবর্গকে আওতাভুক্ত করা হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আবারও দাবি করি, অনির্বাচিত এই ফ্যাসিবাদী সরকার দেশে ও বিদেশে তার “প্রত্যাখ্যাত অবস্থাকে” অনুধাবন করে অবিলম্বে পদত্যাগ করবে এবং ভোটারবিহীন জাতীয় সংসদ বাতিল ঘোষণা করবে। নির্বাচনকালীন নির্দলীয়–নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করাই দেশবাসী ও আন্তর্জাতিক সব মহলের দাবি ও প্রত্যাশা। চলমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক তথা জাতীয় সংকট থেকে মুক্তিলাভের এটাই একমাত্র পথ।’

আরও পড়ুন