পুলিশকে ১২ আনা ধন্যবাদ, বাকিটা দেওয়া গেল না: সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম

রাজধানীর বিজয় নগরে গণ-অবস্থান কর্মসূচি শেষ করার আগে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেয় ১২–দলীয় জোট
ছবি: সাজিদ হোসেন

সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে ১৬ জানুয়ারি দেশের সব বিভাগ, জেলা, উপজেলা, পৌরসভায় মিছিল ও সমাবেশ করবে ১২-দলীয় জোট। জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক এই ঘোষণা দিয়েছেন।

আজ বুধবার বেলা সোয়া একটার দিকে রাজধানীর বিজয়নগরে পানির ট্যাঙ্কির উত্তর পাশের সড়কে গণ-অবস্থান কর্মসূচি শেষ করার আগে নতুন এই কর্মসূচির ঘোষণা দেয় জোটটি। বিএনপির গণ-অবস্থান কর্মসূচির সঙ্গে মিল রেখে এই কর্মসূচি পালন করে ১২-দলীয় জোট।

কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের উদ্দেশে সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, ‘কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেওয়ার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। তবে ধন্যবাদ ১২ আনা, বাকি ৪ আনা দেওয়া গেল না। কারণ, কর্মসূচি শেষ হওয়ার আগেই রাস্তা দিয়ে যানচলাচল শুরু করে দেওয়া হয়েছে।’

বেলা ১১টার দিকে বিজয়নগরে পানির ট্যাঙ্কির উত্তর পাশের সড়কে জোটের গণ-অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। তখন সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম প্রথম আলোকে বলেছিলেন, তাঁরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন আড়াই ঘণ্টা। সে হিসাবে বেলা দেড়টার দিকে কর্মসূচি শেষ হওয়ার কথা ছিল।

বিজয়নগর পানির ট্যাংকির উত্তর পাশের সড়ক হয়ে দুই দিকেই গাড়ি চলাচলের পথ রয়েছে। এর মধ্যে সড়কের দক্ষিণ অংশে ১২-দলীয় জোটের নেতা-কর্মীরা অবস্থান নিয়েছিলেন। এ জন্য কর্মসূচি চলাকালে সড়ক সরু হয়ে কেবল উত্তর পাশ দিয়ে গাড়ি চলাচল করছিল।

বেলা একটার দিকে জোটের মুখপাত্র সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম যখন বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন, তখন দক্ষিণ পাশের সড়ক হয়ে যানচলাচল শুরু হয়। এ অবস্থায় তিনি আরও ১০ মিনিট সময় দিতে উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের প্রতি অনুরোধ জানান। কিন্তু পুলিশ তাঁর অনুরোধ আমলে নেয়নি।

পরে সড়কে অবস্থান নেওয়া নেতা-কর্মীরা ফুটপাতে অবস্থান নেন। এ সময় সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম পুলিশের উদ্দেশে কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান। তবে কর্মসূচি শেষ হওয়ার আগেই রাস্তা দিয়ে যান চলাচল শুরু করে দেওয়ার কারণে তিনি পুলিশকে পুরোপুরি ধন্যবাদ দিতে পারছেন না বলে উল্লেখ করেন।

কর্মসূচি শেষ হওয়ার আগে জোটের শীর্ষ নেতা মোস্তফা জামাল হায়দার (জাতীয় পার্টি, কাজী জাফর) বলেন, ‘ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান থেকে আমরা অভিন্ন কর্মসূচি প্রণয়ন করেছি। সবাই এই কর্মসূচি পালন করবে। এই সরকারের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এই আন্দোলনে সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হবে।’

সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের গতি ও ব্যাপ্তি বাড়াতে গত ৯ ডিসেম্বর ২০-দলীয় জোট অনানুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে দেয় বিএনপি। কোনো না কোনোভাবে ২০-দলীয় জোটে ছিল এমন ১২টি দল মিলে গত ২২ ডিসেম্বর ১২-দলীয় জোট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

১২-দলীয় জোটে রয়েছে মোস্তফা জামাল হায়দারের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি (জাফর), মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীকের নেতৃত্বে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ লেবার পার্টি, সৈয়দ এহসানুল হুদার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয় দল, কে এম আবু তাহেরের নেতৃত্বে এনডিপি, শাহাদাত হোসেন সেলিমের নেতৃত্বে বাংলাদেশ এলডিপি, জুলফিকার বুলবুল চৌধুরীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, মুফতি মহিউদ্দিন ইকরামের নেতৃত্বে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, মাওলানা আবদুর রকীবের নেতৃত্বে ইসলামী ঐক্যজোট, তাসমিয়া প্রধানের নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল, আবুল কাসেমের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টি।