আ.লীগ মুখে বলে ভালো কথা, কাজ করে উল্টো: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ফাইল ছবি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ মুখে ভালো, সুন্দর সুন্দর কথা বলে। কিন্তু কাজ করে এর উল্টো। কোন কালে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের পক্ষে ছিল—এমন প্রশ্ন করে তিনি বলেন, তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাসই করে না। তাদের চরিত্রই হচ্ছে প্রতারণার চরিত্র।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজের) প্রতিষ্ঠার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা’ শীর্ষক শিরোনামে এ সভার আয়োজন করা হয়।

অত্যন্ত খারাপ সময় যাচ্ছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক বয়স হয়েছে। এত খারাপ সময় আগে কখনো দেখিনি। দেশে সামগ্রিক একটা প্রতারণা চলছে।’ তিনি বলেন, অসংখ্য পত্রিকা বের হয়। সংখ্যা সঠিক জানা নেই। আওয়ামী লীগের বদনাম ছিল। তারা বাকশাল করে গণমাধ্যমকে নিষিদ্ধ করেছিল। এখন সেটাকে পাল্টে অসংখ্য পত্রিকা করেছে। ওগুলো এখন আওয়ামী লীগের গুণগান গাইছে।

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যারা লিখেছে, তাদের পত্রিকা, টেলিভিশন চ্যানেল বন্ধ করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও কেউ যাতে তাদের বিরুদ্ধে লিখতে বা প্রচার করতে না পারে, সে জন্য অসংখ্য আইন তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট সবচেয়ে ভয়ংকর। এ ছাড়া অনেক সাংবাদিককে হত্যা কিংবা মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে নিয়ে অত্যাচার করা হয়েছে। এটাই তাদের চরিত্র।

প্রতারণার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, তারা কখনো তসবি পড়ে, কখনো হিজাব লাগায়। কখনো কপালে আবার টিপও পরে। এই চরিত্রের আওয়ামী লীগই আবার ইসলাম ধর্মের আলেম-ওলামাদের কারাগারে পাঠায়, হত্যা করে, ফাঁসি দেয়। এদের লেবাস হচ্ছে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে ফখরুল বলেন, ‘তিনি বলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে নাকি আবার নতুন করে চক্রান্ত শুরু হয়েছে, তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য। তিনি নাকি তাঁদের চেনেন। আমি পরিষ্কারভাবে জানতে চাই, দয়া করে আপনি তাদের নামগুলো উচ্চারণ করুন। কারা চক্রান্ত করেছে, জানতে চাই। জাতি জানতে চায়।’

সভায় দেশে চলমান বিদ্যুৎ–সংকট নিয়ে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘বেশি কিছু বলতে চাই না। যে বিদ্যুৎ তারা চুরি করেছে, তা কল্পনার বাইরে। কোনো উৎপাদন না করেই গত ১৪ বছরে প্রায় ৭৮ হাজার কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ হিসেবে কেটে নিয়ে গেছে। এখন তো আবার লোডশেডিংয়ে ফিরিয়ে নিয়ে এলেন। তাহলে উন্নতি কোথায় এল?’

জ্বালানি আমদানির বিষয়ে ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, সরকার জ্বালানি গ্যাস উত্তোলনে কোনো ব্যবস্থাই করেনি। কারণ, এলএনজি আমদানি না করলে তাদের নিজস্ব ব্যবসায়ীরা কীভাবে কমিশন খাবেন, কীভাবে আয় করবেন?

সভায় ডিইউজে সভাপতি কাদের গনি চৌধুরীর সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী, শওকত মাহমুদ, এম আবদুল্লাহ, আবদুল হাই শিকদার প্রমুখ।