সরকার দেশকে বিদেশি রাষ্ট্রের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে: গণ অধিকার পরিষদ

রাজধানীর পুরানা পল্টনে গণ অধিকার পরিষদের সমাবেশে উপস্থিত নেতা–কর্মীরা। আজ শুক্রবার বিকেলে
ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো নির্বাচন এবার হবে না। এই সরকারের অধীনেও নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে গণ অধিকার পরিষদ। আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক গণসমাবেশ থেকে দলটির নেতারা এ ঘোষণা দেন।

সমাবেশে দলটির সদস্যসচিব নুরুল হক বলেন, রাজপথে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা করে জনগণের ভোটের মাধ্যমে সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। তিনি  সম্প্রতি কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতদের বাড়তি নিরাপত্তা প্রত্যাহারের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকতে বাংলাদেশকে বিদেশি রাষ্ট্রের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে, যা বাংলাদেশের সংবিধান ও পররাষ্ট্রনীতি সমর্থন করে না।

বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা জোট গণতন্ত্র মঞ্চ থেকে বের হওয়ার পর আজ শুক্রবার প্রথম দলগত কর্মসূচি হিসেবে ‘দুর্নীতি ও দুঃশাসনবিরোধী’ শীর্ষক এই গণসমাবেশের মধ্য দিয়ে বড় জমায়েত করে গণ অধিকার পরিষদ। এতে দলের যুব ও ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতারাও বক্তব্য দেন। তবে দলের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া অনুপস্থিত ছিলেন। পরে দলের নেতারা প্রথম আলোকে বলেন, অসুস্থ থাকায় রেজা কিবরিয়া সমাবেশে আসতে পারেননি।

গণ অধিকার পরিষদের সমাবেশ মঞ্চে উপস্থিত নেতারা। আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনে
ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

সমাবেশের মূল বক্তা ছিলেন দলের সদস্যসচিব নুরুল হক। তিনি প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বিদেশ সফর এবং বিদেশি কূটনীতিকদের বাড়তি নিরাপত্তা প্রত্যাহারের ঘটনার সমালোচনা করেন।

নাইজেরিয়া ও নিকারাগুয়ায় ভোট ডাকাতিতে যুক্ত ব্যক্তিদের বিভিন্ন দেশ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে উল্লেখ করে নুরুল হক বলেন, আগামী নির্বাচনের আগে বর্তমান সরকারের পতন না ঘটাতে পারলে নতুন নতুন বিধিনিষেধ আসবে।

দেশ দুর্বৃত্তদের দুষ্টচক্রের দখলে চলে গেছে মন্তব্য করেন নুরুল হক। তিনি দাবি করেন, ‘এই সরকারের লোকজন শেয়ারবাজার খেয়েছে, ব্যাংক, শিক্ষা খাত, স্বাস্থ্য খাত, বিদ্যুৎ খাত খেয়ে ফেলেছে। সরকারি দলের সুবিধাভোগীরা হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করছে। জনগণের টাকায় বেতন পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসনের লোকজন জনগণের বিপক্ষে দাঁড়াচ্ছে।’ তিনি বলেন, সংবিধানের দোহাই দিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকা জায়েজ করা যাবে না।

গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো নির্বাচন এবার হবে না। শুধু নির্বাচন বর্জন নয়, প্রতিহত করা হবে। তাঁর দাবি, আমেরিকা-ইউরোপ আওয়ামী লীগ সরকারকে বর্জন করেছে, সেই ক্ষোভ থেকে রাষ্ট্রদূতদের পুলিশি নিরাপত্তা বাতিল করা হয়েছে।

দলের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, জনগণ ২০১৪-২০১৮ সালের নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি। এই সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন হলে সেখানেও ভোট দিতে পারবে না। নিজেদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হলে জনগণকে আন্দোলনে নামতে হবে।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক সাদ্দাম হোসেন, শাকিল উজ্জামান, সোহরাব হোসেন, আবু হানিফ, জিশান মহসীন, বিপ্লব কুমার পোদ্দার, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামান, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোরশেদ, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা প্রমুখ। সমাবেশ থেকে আগামী ২৬ মে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করে গণ অধিকার পরিষদ।