আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ‘সংশোধন’ হতে বললেন খন্দকার মোশাররফ

পীরজঙ্গি মাজারের সামনে জনসমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনসহ অন্য নেতারা। ঢাকা, ২০ মে
ছবি: প্রথম আলো

‘শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে’ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যেসব সদস্য ‘আক্রমণ করছেন’, তাঁদের ‘সংশোধন’ হতে বলেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘এখনো আপনারা সংশোধন হোন, এখন থেকে জনগণের পক্ষে থাকবেন। ভবিষ্যতে যে সরকার আসবে, আপনাদের ক্ষমা করে দেবে।’

রাজধানীর মতিঝিলে পীরজঙ্গি মাজারের সামনে আজ শনিবার বিকেলে এক জনসমাবেশে খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ কথা বলেন। গতকাল খুলনার পর আজ রাজবাড়ী ও পটুয়াখালীতে বিএনপির কর্মসূচিতে পুলিশি হামলার কথা উল্লেখ করে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি এ জনসমাবেশের আয়োজন করে।

খন্দকার মোশাররফ হুঁশিয়ারি জানিয়ে বলেন, ‘এখন থেকে যাঁরা জনগণের বিপক্ষে গিয়ে এভাবে গুলি চালাবেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেবেন, আগামী দিনে কিন্তু এ দেশের জনগণের সরকার আপনাদের ক্ষমা করবে না।’

খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘যাঁরা প্রশাসনে আছেন, যাঁরা বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য আছেন, আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী। এ দেশের খেটে খাওয়া মানুষের টাকায় আপনারা বেতন পান। আপনাদের জনগণের সেবক হওয়ার কথা। কিন্তু জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এ দেশের মানুষের ওপর আপনারা গুলি চালাচ্ছেন। আপনারা এ পর্যন্ত যা করেছেন, জনগণের বিপক্ষে কাজ করেছেন।’

সরকারের ‘অন্যায় নির্দেশ শুনতে গিয়ে’ র‍্যাব যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার শিকার হয়েছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি প্রশাসন ও বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, ‘এই সরকারের অন্যায় হুকুম আপনারা মানবেন না। আপনারা জনগণের পাশেই থাকেন।’ তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করছি। এখন পর্যন্ত একটি কর্মসূচিতেও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়নি। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এই সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে চাই।’

সরকারের সমালোচনা করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, যে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র হত্যা করেছে, সে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে পারবে না। যে আওয়ামী লীগ অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে, তারা অর্থনীতিকে মেরামত করতে পারবে না। যারা সিন্ডিকেট করে দ্রব্যমূল্য বাড়িয়েছে, তারা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। এই সরকারকে যত দ্রুত সম্ভব, বিদায় করতে হবে।

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আজ ব্যালটের বদলে বাংলাদেশের মানুষ বুলেট খাচ্ছে। মানুষ যখন সত্য, ন্যায়, অধিকারের কথা বলে, তখন পুলিশের পিটুনি খাচ্ছে। এই সরকার ভোটের তোয়াক্কা করে না। তারা জনগণকে ধাপ্পা দিয়ে দিনের ভোট রাতে করে ক্ষমতায় টিকতে থাকতে চায়।

খুলনার পর আজ রাজবাড়ী ও পটুয়াখালীতে বিএনপির কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় উষ্মা প্রকাশ করেন মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, ‘মিছিল করতে দেবেন না, মিটিং করতে দেবেন না, কথা বলতে দেবেন না, ভোট দেবেন না—এটা কারও পৈতৃক রাজত্ব নয়। আমরা কারও রাজত্বে বসবাস করি না।’

বিএনপি হাঁটু ভাঙা দল, সরকারের এক মন্ত্রীর এমন বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমরা চাই, জনগণ ভোট দিয়ে সরকার নির্বাচিত করুক। দলটা কি হাঁটু ভাঙা, না কোমর ভাঙা—সেটা পরে টের পাবেন। বিএনপির কোমরে কত জোর, হাঁটুতে কত জোর তখন বুঝতে পারবেন। এখন বুঝতে পারবেন না; কারণ, এখন তো ক্ষমতায় আছেন।’

আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দলের কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, নাসির উদ্দিন অসীম, কামরুজ্জামান রতন প্রমুখ।