শান্তি সমাবেশের আচরণ ‘শান্তি কমিটির’ মতোই: নজরুল ইসলাম খান

নজরুল ইসলাম খান
ফাইল ছবি

বিএনপির কর্মসূচির পাল্টা ক্ষমতাসীনদের ‘শান্তি সমাবেশ’কে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি রাজাকার-আলবদরদের ‘শান্তি কমিটি’র সঙ্গে তুলনা করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেছেন, ক্ষমতাসীনেরা এখন যে শান্তি সমাবেশ করছে, সেটি অনেকটা শান্তি কমিটির মতোই।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।

প্রশ্ন ছিল, বিএনপি কী এভাবে একের পর এক শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিই চালিয়ে যাবে? জবাবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘গণতান্ত্রিক কোনো রাজনৈতিক দল তো অশান্তিপূর্ণ আন্দোলনের কথা বলে না। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনই করতে চাই। পাকিস্তান আমলে যুদ্ধের (মুক্তিযুদ্ধ) সময়ে শান্তি কমিটি হয়েছিল, এই সরকার এখন শান্তি সমাবেশ করতেছে এবং আচরণ অনেকটা শান্তি কমিটির মতোই। এটা চলতে থাকলে তো বলা মুশকিল যে কী হবে। তবে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যেতে চাই।’

এর আগে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ১২–দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট এবং অলি আহমদের লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক হয়। ২০-দলীয় জোট অনানুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে দেওয়ার পর সেই জোটের দলগুলো পৃথকভাবে ১২–দলীয় জোট ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট গঠন করে বিএনপির নেতৃত্ব যুগপৎ আন্দোলনে রয়েছে। তবে এই প্রথম ওই দুটি জোট ও একটি দলের সঙ্গে একত্রে বৈঠক করল বিএনপি।

বৈঠক শেষে জোটের নেতাদের নিয়ে সংবাদ ব্রিফিং করেন নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক অবস্থা নিয়ে তাঁরা আলোচনা করেছেন। বিশেষ করে গত বেশ কিছুদিন ধরে তাঁরা যে একসঙ্গে আন্দোলন করছেন, সেটা কেমন হয়েছে, জনগণের মধ্যে তার প্রভাব কতটা, আন্দোলন কতটা অগ্রসর হয়েছে, আগামী দিনে কী করণীয়—এসব বিষয় আলোচনা হয়েছে।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এই সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি এবং অনাচার, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, লুট, পাচার এবং সম্পদের অপচয়ের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি যেভাবে বিপর্যস্ত করা হয়েছে—এটা জনগণ আর সইতে পারছে না। তারা দ্রুত পরিবর্তন চায়। সেই পরিবর্তনের নেতৃত্ব এর আগেও যেমন বাংলাদেশে বিরোধী দল দিয়েছে, এবারও তাই দেবে ইনশা আল্লাহ। এটা শুধু সময়ের প্রশ্ন।’

বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘যে বিশ্বাস নিয়ে আমরা ঐক্য করেছি, যে বিশ্বাস নিয়ে আমরা যুগপৎ আন্দোলন করছি, আমরা সেই বিশ্বাসে অটুট আছি এবং সেই বিশ্বাস নিয়ে আগামী দিনে ঐক্যবদ্ধভাবে যুগপৎ আন্দোলন নিয়ে এগিয়ে যাব।’

বৈঠকে বিএনপির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। ১২–দলীয় জোট নেতাদের মধ্যে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, এনডিপির আবু তাহের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের নেতাদের মধ্যে এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, গণদলের এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরী, ডেমোক্রেটিক লীগের সাইফুদ্দিন আহম্মেদ, বাংলাদেশ ন্যাপের শাওন সাদেকী, সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নুরুল ইসলাম, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, নুরুল আলম, নেয়ামুল বশির ও এমএম মোর্শেদ উপস্থিত ছিলেন।