মন্ত্রীরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে উত্তপ্ত করেছেন: জামায়াত
আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীদের কটাক্ষপূর্ণ মন্তব্য করে সরকারের মন্ত্রীরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে উত্তপ্ত করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনের ব্যাপারে যৌক্তিক সমাধানের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে জামায়াতের সেক্রেটারি মিয়া গোলাম পরওয়ার এ আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে গোলাম পরওয়ার বলেন, সরকারি চাকরিতে বর্তমান কোটাপদ্ধতি বাতিলের দাবিতে গোটা ছাত্রসমাজ শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ছাত্রসমাজের দাবির যৌক্তিক সমাধানের পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সরকারের মন্ত্রীরা ছাত্রসমাজকে কটাক্ষ করে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে সহিংসতা সৃষ্টি করে ছাত্রসমাজের আন্দোলন বানচালের ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশে ছাত্রলীগ ও বহিরাগত আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের ব্যাপক হামলায় গতকাল পাঁচ শতাধিক ছাত্রছাত্রী আহত হয়েছেন।
জামায়াতের সেক্রেটারি আরও বলেন, ১৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারী ছাত্রসমাজকে ‘রাজাকারের নাতি-পুতি’ আখ্যা দিয়ে কটাক্ষপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। পরদিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আত্মস্বীকৃত রাজাকারদের জবাব দিতে ছাত্রলীগই যথেষ্ট।’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এবং আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ছাত্রছাত্রী ও তাঁদের মা–বাবাকে কটাক্ষ করে অবমাননাকর মন্তব্য ছুড়ে দিয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে উত্তপ্ত করেছেন।
বিবৃতিতে মিয়া পরওয়ার সন্ত্রাসী তাণ্ডব বন্ধ করে ছাত্রছাত্রীদের যৌক্তিক দাবির সুষ্ঠু সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। একই সঙ্গে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।
রাজধানীতে ছাত্রশিবিরের মিছিল
এ দিকে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের সশস্ত্র হামলার প্রতিবাদে দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে মিছিল করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। মিছিলটি শাপলা চত্বর থেকে শুরু হয়ে ইত্তেফাক মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
ছাত্রশিবির জানিয়েছে, সংগঠনের ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে এই মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম।
মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে নুরুল ইসলাম বলেন, দমনপীড়নের মাধ্যমে বর্তমান আওয়ামী সরকার গণতন্ত্রকামী মানুষের যেকোনো আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দেওয়ার ঘৃণ্য পন্থা অবলম্বন করে আসছে। একই কায়দায় বৈষম্যমূলক কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনকে বানচাল করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দিয়েছে। ছাত্রলীগ তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নিরীহ ছাত্রদের রক্তাক্ত করেছে। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তাণ্ডব চালিয়েছে। তিনি ছাত্রলীগের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
মিছিলে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সিবগাতুল্লাহ, আজিজুর রহমান, সাদেক আবদুল্লাহ, আবদুল্লাহ আল মামুনসহ ঢাকা মহানগরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।