মার্কিন নতুন ভিসা নীতি সুষ্ঠু নির্বাচনে বড় পদক্ষেপ: আমীর খসরু

গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয় প্রাঙ্গণে আমীর খসরু মাহমুদ সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া জানান। পাশে ছিলেন শামা ওবায়েদ
ছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতিকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি। এ বিষয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির প্রধান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথে এটি একটা বড় পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপকে আমরা স্বাগত জানাই।’

আজ বৃহস্পতিবার বেলা দুইটায় গুলশানের বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয় প্রাঙ্গণে আমীর খসরু মাহমুদ সাংবাদিকদের কাছে এ প্রতিক্রিয়া জানান। এর আগে গুশলানে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বাসভবনে বৈঠক করেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির (জাপা) ছয় নেতা। বৈঠকে বিএনপির পক্ষে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও শামা ওবায়েদ ছিলেন। সেখান থেকে ফিরে এসে আমীর খসরু সাংবাদিকদের প্রতিক্রিয়া জানান।

এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচন সামনে রেখে যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, তারই প্রতিফলন হিসেবে এ পদক্ষেপ এসেছে। তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে বাংলাদেশের মানুষের যে শঙ্কা নির্বাচন নিয়ে—এ ধরনের একটি পদক্ষেপ আগামী নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এটার মাধ্যমে যে সবকিছু হবে তা নয়। কিন্তু এটা একটা বার্তা।’

আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ভোট দিতে পারছে না, মানুষের সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, জীবনের নিরাপত্তা শঙ্কার মধ্যে আছে। যাদের কথা এখানে (মার্কিন ভিসা নীতির ঘোষণায়) উল্লেখ করেছে, এই লোকগুলো, এই সংস্থাগুলো বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা। এটা একটা বড় পদক্ষেপ।

আরও পড়ুন

বিএনপি এটাকে স্বাগত জানাচ্ছে কি না, জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, ‘আমরা তো ওয়েলকাম করছি। কারণ, বিএনপি তো ভোট চুরির প্রক্রিয়াতে নাই।’

সরকারের তরফ থেকেও বলা হয়েছে, তারা এ ঘোষণায় উদ্বিগ্ন নয়। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আমীর খসরু বলেন, ‘তারা উদ্বিগ্ন না থাকলে তো ভালো কথা। তাহলে তাদের বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটাধিকার, আইনের শাসন, জীবনের নিরাপত্তা—এগুলো ফিরিয়ে দিতে হবে। এগুলো ফিরিয়ে না দিলে তাদের উদ্বিগ্ন হতে হবে।’

মার্কিন চাপে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশের মানুষকে অর্জন করতে হবে। বাংলাদেশে আগামী দিনের গণতন্ত্র থাকবে কি থাকবে না, মানবাধিকার, আইনের শাসন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, জীবনের নিরাপত্তা—এই মুক্তির সংগ্রামের পথে এটা হয়তো একটা পদক্ষেপ। আরও অনেক পদক্ষেপ এখানে নিতে হবে, যাতে আবারও তারা (সরকার) ভোট চুরি করে দেশের ক্ষমতা দখল করতে না পারে।

আরও পড়ুন

অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে ঘোষিত মার্কিন ভিসা নীতির পদক্ষেপকে বিএনপি সফলতা হিসেবে দেখছেন কি না, জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, ‘এখানে বিএনপির সফলতার বিষয় নয়। সফলতা হবে যেদিন বাংলাদেশের মানুষ তাদের ভোট প্রয়োগ করে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করে সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবে।...দেশবাসী এটা সাদরে গ্রহণ করেছে।’

নতুন মার্কিন ভিসা নীতি মাধ্যমে যারা ভোট চুরির সঙ্গে জড়িত, সেটা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে হোক, সেটা বিচার বিভাগে হোক, সেটা গণমাধ্যমে হোক, সেটা সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে হোক—সবার জন্য একটি পরিষ্কার বার্তা। এর চেয়ে পরিষ্কার বার্তা আর কিছু হতে পারে না।

নির্বাচনের এখনো ছয়-সাত মাস বাকি। এত আগে কেন এ ঘোষণা (মার্কিন ভিসা নীতি)—এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভোট চুরি তো শুধু নির্বাচনের দিন হবে না। ভোট চুরির প্রক্রিয়া তো এখন থেকেই চলছে। সে জন্য সেটা এখন থেকেই প্রয়োগ করছে। আমাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাগুলো, গ্রেপ্তার, গুলি করে হত্যা, আমাদের মিটিং-মিছিল ভেঙে দেওয়া—এগুলো তো ভোট চুরির প্রক্রিয়ার অংশ। সে জন্য তারা (যুক্তরাষ্ট্র) জিনিসটা ওইভাবে অ্যাড্রেস করেছে।’

আরও পড়ুন