জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি সমর্থন করি না: ফখরুল

জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আজ রোববার রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের (বীর উত্তম) ৪৩তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরছবি: প্রথম আলো

এখনকার তরুণ প্রজন্ম পড়াশোনা করে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘আমি জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি সমর্থন করি না। কিন্তু তাদের রাজনীতির যে কৌশল, তা অত্যন্ত বিজ্ঞানসম্মত। ঠিক কমিউনিস্ট পার্টির মতো।’

এর ব্যাখ্যা দিয়ে ফখরুল বলেন, ‘তাদের ছাত্রশিবিরের স্টাডি সেল আছে। তাদের প্রত্যেককে লেখাপড়া করতে হয়। নিজেরা বই-পত্রিকা প্রকাশ করে। জ্ঞানের চর্চা ছাড়া সফল হতে পারবেন না।’

আজ রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের (বীর উত্তম) ৪৩তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ)।

বর্তমান সরকারকে ‘বর্গি’ দাবি করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘পত্রিকা খুললে শুধু লুট আর লুট। তারা দেশ থেকে লুট করে বিদেশে পাচার করছে। ক্ষমতা চলে গেলেই বিদেশে চলে যাবে।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘যারা রাষ্ট্রের বড় দায়িত্বে, তারা লুটপাট করছে। সংসদ সদস্য চোরাচালানে জড়িত। শেয়ারবাজারে রথী–মহারথীরা লুটপাট করছে। কেউ দরবেশ, কেউ সন্ন্যাসী বেশে এসব কাজের সঙ্গে জড়িত। কোনো জবাবদিহি নেই, চিন্তা নেই। একটাই ভাবনা—ক্ষমতায় থাকতে হবে। সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে রক্ষী তৈরি করেছে এই সরকার।’

ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ঋণের বোঝায় ডুবিয়ে দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, মাথাপিছু ঋণ এখন ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন শর্তে যেসব ঋণ নেওয়া হচ্ছে, সুস্থ মানুষের দেশপ্রেম থাকলে এগুলো করতে পারত না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সব প্রতিকূলতা থেকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হলে জিয়াউর রহমানকে জানতে হবে বলে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, শুধু স্লোগান দিয়ে রাজনীতি করলে হবে না। জেনেশুনে রাজনীতি করতে হবে। জিয়াউর রহমানকে বুঝতে হলে তাঁর কাজের গভীরে যেতে হবে। এখন জিয়াউর রহমানকে নিয়ে কথা বলা যায় না। সত্য বললে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দিয়ে দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক নূরুল আমিন ব্যাপারী বলেন, জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে রাষ্ট্র ও জাতি গঠন শুরু করেছিলেন। জ্ঞানভিত্তিক আলোকিত সমাজ গড়তে শুরু করেছিলেন জিয়াউর রহমান। শিক্ষার মাধ্যমে দেশকে উন্নত করতে চেয়েছিলেন।

বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্যসচিব কাদের গণি চৌধুরী বলেন, রাজনীতিকে তৃণমূলে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে ইমার্জিং টাইগারে পরিণত করেছিলেন।

সভাপতির বক্তব্যে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ফরহাদ হালিম বলেন, বইপুস্তক থেকে জিয়াউর রহমানকে মুছে ফেলা হচ্ছে। নতুন প্রজন্মকে জিয়াউর রহমান সম্পর্কে জানাতে তাঁর জীবন ও কর্ম নিয়ে ছোট ছোট বই প্রকাশ করা হবে।