খাদ্যপণ্যের ‘পর্যাপ্ত মজুদ’ থাকলে দাম বাড়ছে কেন, প্রশ্ন খন্দকার মোশাররফের

খন্দকার মোশাররফ হোসেন
ফাইল ছবি

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, সরকারের যারা মদদপুষ্ট ব্যবসায়ী, তাদের সিন্ডিকেটের কারণেই জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। জনগণের পকেট থেকে তারা অর্থ লুট করে নিয়ে যাচ্ছে দাম বাড়িয়ে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মেগা প্রজেক্ট করার কারণে, মেগা দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে দ্রব্যমূল্যের ঊধ্বগতি হচ্ছে। এই লুটপাটের কারণে দেশের অর্থনীতি আজ ধ্বংসের কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আজ সোমবার দুপুরে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে খন্দকার মোশাররফ এসব কথা বলেন। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জিয়া পরিষদের উদ্যোগে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে রচিত ‘মৃত্যুকূপে ধাবমান বাংলাদেশ’ শীর্ষক গ্রন্থের দ্বিতীয় খণ্ডের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়।

খাদ্যপণ্যের মজুদ দিয়ে সরকার ‘মিথ্যাচার’ করছে বলেও মন্তব্য করেন খন্দকার মোশাররফ। বাজারের বর্তমান চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আজকের পত্রিকায় আছে যে জিনিসপত্রের দাম হুহু করে বাড়ছে। রমজানের মাসে কীভাবে চলবে—মানুষ দিশেহারা। চিনির দাম এখন ১২০ টাকা, গরুর মাংস ৮০০ টাকার ওপরে, লবণের দাম ৪২ টাকার ওপরে, ব্রয়লার মুরগির দাম যেটা ১২০-১৪০ টাকা ছিল, এখন এটার কত দাম? বাজারে গিয়ে দেখেন মানুষ কী পরিমাণ সরকারকে গালাগালি করে।’

দেশে খাদ্যপণ্যের ‘পর্যাপ্ত মজুদ’ থাকলে দাম বাড়ছে কেন প্রশ্ন তুলেছেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, গতকাল (রোববার) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় একটা মিটিং করেছে দ্রব্যমূল্যের ঊধর্বগতির ব্যাপারে। সেখানে বলেছে যে দেশে না কি খাদ্যপণ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মজুদ পর্যাপ্ত আছে... জনগণকে বলেছে যে আতঙ্কিত হয়ে বেশি কেনাকাটা না করতে।

সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘কিন্তু বাজারের অবস্থা কী আপনারা জানেন। আমরা জানতে চাই, এত খাদ্যপণ্য মজুদ থাকলে দাম বাড়ছে কেন? সরকার সুস্পষ্টভাবে তার ব্যাখ্যা জনগণকে দেন।’

অতীতে কখনো মুরগি, ইলিশ মাছ, রুই মাছ কেটে ১০০-২০০ গ্রাম অথবা আড়াই শ গ্রাম ভাগ করে বিক্রি করার কোনো রেওয়াজ এ দেশে ছিল না বলে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তারপরেও সরকার বলছে, দেশে নাকি খাদ্যপণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ আছে। কী পরিমাণ চাপাবাজি করছে ওরা জনগণের সাথে।’

‘বিএনপি না গেলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না’

খন্দকার মোশাররফ বলেন, বাংলাদেশের সবচাইতে জনপ্রিয় দল বিএনপি খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে যদি এ দেশে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে, সেটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে না, হতে পারে না। তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনকে ভোট ডাকাতি ও ২০১৪ সালের নির্বাচনকে বয়কটের নির্বাচন হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ‘এগুলোকে আন্তর্জাতিক মহল নির্বাচন মনে করে না।’

এ অবস্থা থেকে উত্তরণে বিএনপির দেওয়া ১০ দফার আন্দোলনেই সরকারে পরিবর্তন আনতে হবে বলে পেশাজীবীদের আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জিয়া পরিষদের সদস্য লুতফুর রহমান, আবদুল লতিফ, ইয়ারুল কবির, শামসুল আলম প্রমুখ বক্তব্য দেন।