খালেদা জিয়ার শারীরিক জটিলতা কমেনি: চিকিৎসক জাহিদ হোসেন
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লিভার, কিডনিসহ মূল প্রত্যঙ্গগুলোর জটিলতা কমেনি বলে জানিয়েছেন তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি প্রথম আলোকে এ তথ্য জানান।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপি নেত্রীর লিভার, কিডনি, হৃদযন্ত্র, ফুসফুস ইত্যাদি প্রত্যঙ্গে নতুন নতুন সমস্যা বা উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। তাঁর স্বাস্থ্যের জটিলতা বা সমস্যাগুলো এমন পর্যায়ে গেছে যে এখন দেশে চিকিৎসা দিয়ে সেসব সমস্যার উন্নতি আশা করা যায় না। সে জন্য নতুন নতুন উপসর্গ বা সমস্যা যা দেখা দিচ্ছে, সেগুলো প্রশমন করা হচ্ছে বা কোনোভাবে ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা রয়েছে, যাতে রোগীর কষ্ট কমানো যায়।
এই চিকিৎসক বলেন, এখন যত দ্রুত সম্ভব, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে তাঁর লিভার প্রতিস্থাপন করা প্রয়োজন। মেডিকেল বোর্ড আবারও এ পরামর্শ দিয়েছে। কারণ, দেশে সেটা সম্ভব নয়। ফলে এখন সমস্যাগুলো কোনোভাবে প্রশমিত করে রাখা ছাড়া চিকিৎসকদের করার কিছু নেই।
গত ৯ আগস্ট ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় খালেদা জিয়াকে। ওই হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড তাঁকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছে। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা তুলে ধরতে এই মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে কয়েক দিনের মধ্যে সংবাদ সম্মেলন করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার ও হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছেন। তাঁর লিভার সিরোসিসের কারণে হৃদ্যন্ত্র, কিডনি ও ফুসফুসের জটিলতা বেড়েছে।
এদিকে খালেদা জিয়াকে স্থায়ীভাবে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসা দেওয়ার অনুমতি চেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার গত সোমবার এ আবেদন করেন।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আজ প্রথম আলোকে বলেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে করা আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে আবেদনটি যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার সাজা হয়। সেদিন থেকে তিনি প্রায় দুই বছর কারাবন্দী ছিলেন। এ ছাড়া জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার আরও সাত বছরের সাজা রয়েছে।
২০২০ সালের ২৫ মার্চ করোনা মহামারির শুরুতে খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার তাঁর সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দিয়েছিল। তখন থেকে তাঁর মুক্তির মেয়াদ ছয় মাস করে বাড়ানো হচ্ছে।