সঠিক ইতিহাস জানলে বিএনপি-জামায়াতের মিছিলে লোক যেত না: আমু
সঠিক ইতিহাস জানতে দেওয়া হয়নি বলেই নতুন প্রজন্মের একাংশ আজ পথভ্রষ্ট, বিপথগামী হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু। তিনি বলেছেন, দীর্ঘ ৩১ বছর বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে দেওয়া হয়নি। সঠিক ইতিহাস জানলে বিএনপি ও জামায়াতের মিছিলে লোক যেত না, জনসমাগম হতো না।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নগর ভবন প্রাঙ্গণে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস’ উপলক্ষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমির হোসেন আমু এসব কথা বলেন।
১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে বলেছিলেন, “রাজনৈতিক স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যাবে যদি আমি অর্থনৈতিক মুক্তি দিতে না পারি।” অর্থনৈতিক মুক্তি দেওয়ার জন্য যখন তিনি দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক দিলেন, ঠিক সেই মুহূর্তেই তাঁকে হত্যা করা হলো। প্রজন্মের পর প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে দেওয়া হলো না। যদি মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানত, তাহলে বিএনপির মিছিলে লোক যেত না। ছাত্রদল কেউ করত না। যুবদল করার প্রশ্নই আসে না। জামায়াতে ইসলামের আয়োজনে জনসমাগম হওয়ার কথা নয়।’ আমাদের দেশে নতুন প্রজন্মের একাংশ পথভ্রষ্ট, বিপথগামী বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বাঙালিকে স্বাধীনতা এনে দেওয়ার প্রতিহিংসায় সেদিন এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করা হয়েছিল উল্লেখ করে আমির হোসেন আমু বলেন, ‘স্বাধীনতাকে যারা সহ্য করতে পারেনি, সেই স্বাধীনতার যারা পরাজিত শক্তি, তারা প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে একটি প্রতিবিপ্লব সংঘটিত করল। বাংলাদেশকে স্বাধীন করার অপরাধে সেদিন জাতির পিতাকে সপরিবার নির্বংশ করা হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাত্রিতে এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় ফিরিয়ে নেওয়ার চক্রান্ত পূর্ণতা পেয়েছিল।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, ‘জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছেন। তাঁর সন্তান তারেক রহমান আমার প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। আল্লাহর রহমতে পারে নাই।’
বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যের কুশীলবদের বিচার দাবি করে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘যে কমিশন করা হবে, সেই কমিশনের মাধ্যমে খুনি জিয়াউর রহমান, খুনি মোশতাকসহ নেপথ্যে যারা জড়িত, তাদের সকলের মুখোশ উন্মোচন করে তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে এবং যাঁরা ইতিমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন, তাঁদের মরণোত্তর বিচার সম্পূর্ণ করতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের সকল কর্মকাণ্ডই ছিল প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির পক্ষে, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী। তিনি রাজাকার, আলবাদর, আলশামসদের পুনর্বাসন করেছেন। তাদের গাড়িতে বাংলাদেশের রক্তরঞ্জিত পতাকা উঠিয়ে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন। মন্ত্রী বানিয়েছেন।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, সংসদ সদস্যদের মধ্যে ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম, সংরক্ষিত আসনের জিন্নাতুল বাকিয়া, করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।