বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ক্ষমতাসীন দল সারা দেশে দলীয় কর্মসূচিতে সন্ত্রাসী হামলা, নেতা–কর্মীদের মারধর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা করছে। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একবারও তারা (ক্ষমতাসীন দল) চিন্তা করছে না, যে কাজটা তারা শুরু করেছে, এটা সমগ্র দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করবে।’
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সারা দেশে চলমান কর্মসূচিতে ক্ষমতাসীনদের হামলার ঘটনা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম এ কথা বলেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, এ পর্যন্ত এসব হামলার ঘটনায় আহত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ৭০০ নেতা-কর্মী। মিথ্যা মামলা করা হয়েছে কয়েক হাজার নেতা-কর্মীর নামে। মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৬০ জনের অধিক।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, সারা দেশে এত দিন ধরে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ত্রাস সৃষ্টি করেছে। তারা এখন একটা নতুন মাত্রা যোগ করেছে, নেতা-কর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা শুরু করেছে। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে, দলীয় কার্যালয়ে ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আওয়ামী লীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা চালাচ্ছে, মিথ্যা মামলা দিচ্ছে ও নেতা-কর্মীদের খুন-জখম করছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে এই আন্দোলনে সম্পূর্ণভাবে বর্তমান অবৈধ সরকার ভীত হয়ে, সন্ত্রস্ত হয়ে আজকে আবার সেই তাদের দমননীতি চালিয়ে যেতে শুরু করেছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কিছুদিন আগে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী বললেন যে কাউকেই গ্রেপ্তার করা হবে না, সভা-সমিতির সবকিছু করতে দেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, তারা কথা বলবেন একটা আর কাজ করবেন আরেকটা। এখন দেখা যাচ্ছে যে ঠিক উল্টো কাজটি তাঁরা করছেন। এটাই আওয়ামী লীগের চরিত্র। তাদের যে সন্ত্রাসী চরিত্র, সেটা আরও একবার এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে দেশের জনগণের কাছে উদ্ভাসিত হয়েছে। এভাবেই তাঁরা এ দেশে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছেন, বাংলাদেশকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন।
কর্মসূচি চলবে
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের ঘোষিত উপজেলা-থানা-পৌরসভা-ইউনিয়ন পর্যায়ের কর্মসূচি আগামী ১০ সেপ্টম্বর পর্যন্ত চলবে। যেসব উপজেলা ও থানায় কর্মসূচি হয়নি, সেগুলোতে বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। এরপরে আমরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।’
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে ২২ আগস্ট থেকে উপজেলা, থানা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি।
সংবাদ সম্মেলনে যশোর, মুন্সিগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ফেনী, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম, বাগেরহাট, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, ঠাকুরগাঁও, লক্ষ্মীপুর, ময়মনসিংহ, মাগুরা, গাইবান্ধা, বরিশাল, খুলনা, নেত্রকোনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদী, রাজশাহী, নোয়াখালী, ভোলা, নাটোর, কুমিল্লা ও নড়াইলের বিভিন্ন উপজেলায় ২২ আগস্ট থেকে চলমান বিক্ষোভ সমাবেশে আওয়ামী লীগ ও পুলিশি হামলার ঘটনাগুলো তুলে ধরেন বিএনপির মহাসচিব।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক, আবদুস সালাম আজাদ, মীর সরফত আলী, আবুল কালাম আজাদ, আসাদুল করীম প্রমুখ।