স্বাধীনতার পরে আ.লীগ দেশটাকে দুঃশাসনের রাজ্য বানিয়েছিল: মির্জা ফখরুল

জিয়াউর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন উপলক্ষে শুক্রবার সকালে গুলশানেব বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, স্বাধীনতার পরে আওয়ামী লীগ এই দেশটাকে দুঃশাসনের রাজ্য বানিয়েছিল, একটা লুটপাটের রাজত্ব তৈরি করেছিল। তাদের নিজেদের তৈরি সংবিধান ভেঙেচুরে জরুরি অবস্থা, বিশেষ ক্ষমতা আইন এবং সবশেষে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল।

শুক্রবার সকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জিয়াউর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, সিপাহী-জনতার বিপ্লবে যখন জিয়াউর রহমানকে দায়িত্ব দেওয়া হলো, তখন তিনি দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের ঘটনার সঙ্গে জিয়াউর রহমান জড়িত ছিলেন বলে প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাকে মিথ্যাচার বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ফখরুল বলেন, এখন ওরা এমন সব অলিক গল্প ফাঁদে যে শহীদ জিয়াউর রহমান প্রয়াত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। শুধু ইতিহাসকে বিকৃত করতে তারা এটা করছে। জনগণের যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, গণতন্ত্র ফেরাতে সেই আন্দোলনকে বিপথে পরিচালিত করতে সরকার এসব বক্তব্য দিচ্ছে। কিন্তু তখন তো বিএনপির জন্মই হয়নি। তিনি বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান তখন সেনাবাহিনীর প্রধান ছিলেন না, তিনি ছিলেন ডেপুটি প্রধান। তৎকালীন সেনাবাহিনীর প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান, বিমানবাহিনী প্রধান—ওই দুর্ঘটনার (শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড) পরে যখন খন্দকার মোশতাকের নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়েছিল, তখন তাঁরা সবাই স্যালুট করে খন্দকার মোশতাকের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছিলেন।

মিথ্যাচার করে জিয়াউর রহমানের অবদানকে মুছে ফেলা যাবে না বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা এই কথাও ভুলতে পারি না যে শেখ মুজিবুর রহমানের লাশ তাঁর বাড়ির সিঁড়িতে পড়ে ছিল…তারপরে আওয়ামী লীগের নেতারা সরকার তৈরি করে সেই সরকার গঠন করেছিলেন। যাঁরা আজকে মিথ্যা প্রচার চালান যে এখানে জিয়াউর রহমান সাহেব জড়িত ছিলেন। তাঁদের একটাই উদ্দেশ্য, জিয়াউর রহমানকে হেয়প্রতিপন্ন করা এবং তাঁকে একেবারে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা। সেটা সম্ভব নয়।’

ফখরুল বলেন, যেসব ক্ষণজন্মা মানুষ, যাঁরা ইতিহাস তৈরি করেন; যাঁরা একটা রাষ্ট্রের জন্মের জন্য যুদ্ধ ঘোষণা করেন; যাঁরা জনগণের কল্যাণের জন্য একটা রাষ্ট্র নির্মাণের সব ভিত্তি তৈরি করেন; তাঁদের এভাবে মুছে ফেলা যায় না, ভুলিয়ে দেওয়া যায় না। এ সময় তিনি সাড়ে তিন বছরে জিয়াউর রহমানের আধুনিক রাষ্ট্র গঠনের পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন।

জিয়াউর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতা হয়। এতে তিন পর্বে মোট ৬৯ জনকে পুরস্কার দেওয়া হয়। এর মধ্যে প্রাথমিক স্তরে জিহাদ ইবনে ইমরান, মোস্তাকিম হাসান, হুমায়রা জান্নাত প্রার্থনা; মাধ্যমিক স্তরে এফতেখার এনাম নাহিদ, তালাম মাহমুদ নিবাস, আবু হাসান নাহিয়ান এবং উচ্চতর ও উন্মুক্ত স্তরে কানিজ ফাতেমা কনিক, আজম ইকবাল শিপন ও মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল নোমান নিজ নিজ বিভাগে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছে। অনুষ্ঠানে রচনা প্রতিযোগিতা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দারের সভাপতিত্ব করেন। বক্তব্য দেন বিএনপির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম।