সরকারের পতন ঘটানোর শক্তি বিএনপির নেই: হানিফ

নয়াপল্টনে জামাতখানায় পল্টন থানা ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ
ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান সরকারের পতন ঘটানোর শক্তি বিএনপি বা কারও নেই বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। তিনি বলেছেন, ‘বিএনপির নেতারা ১০ ডিসেম্বরের স্বপ্ন দেখছেন। আওয়ামী লীগ কোনো ভুঁইফোড় সংগঠন নয়। কোনো কচুপাতার পানি নয় যে ধাক্কা দিলে টলমল করে পড়ে যাবে।

আওয়ামী লীগ জাতির পিতার হাতে গড়া দল। ৭৩ বছরের আওয়ামী লীগের শিকড় বাংলার মাটির অনেক গভীরে। সরকার পতনের এসব হুংকার বন্ধ করুন।’

আজ শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে জামাতখানায় পল্টন থানা ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন হানিফ।
বিএনপির সমালোচনা করে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, বিএনপি ক্ষমতা যাওয়ার জন্য আন্দোলন করছে। কিন্তু তাদের মধ্যে দেশ পরিচালনার মেধা ও দক্ষতা নেই। রাজনৈতিক কর্মসূচি যদি গণতান্ত্রিকভাবে পালন করতে পারে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোনো বাধা নেই। আন্দোলনের দোহাই দিয়ে দেশে সন্ত্রাস, সহিংসতা, নাশকতা করে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে চাইলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোরভাবে দমন করবে। আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মোকাবিলার প্রয়োজন পড়বে না। তাদের মোকাবেলার জন্য সরকারই যথেষ্ট।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধানের আলোকে বর্তমান সরকারের অধীন হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচনকে আরও অধিক গ্রহণযোগ্য করার জন্য যদি সংবিধানের মধ্যে থেকে কোনো পরামর্শ থাকে, তা দিতে পারে। সরকার ও নির্বাচন কমিশন অবশ্যই বিবেচনা করবে।

নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে দাবি করে মাহবুব উল আলম বলেন, গাইবান্ধা উপনির্বাচনে কোথাও সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। ইসি ঢাকায় বসে সিসিটিভিতে দেখেছে, কোনো বুথে নাকি একজন ভোট দেওয়ার সময় আরেকজন গেছেন। অন্যায়ভাবে কেউ বুথের মধ্যে গেলে তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা যায়। কিন্তু একজনের কারণে ওই এলাকার সব ভোটারের অধিকার বঞ্চিত করা কোনোমতেই সঠিক সিদ্ধান্ত হতে পারে না। তারপরও ইসি স্বাধীন সংস্থা। তারা প্রমাণ করেছে যে তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে এবং এই সিদ্ধান্তের ফলে এটাও প্রমাণ হয়েছে, আওয়ামী লীগ কখনো ইসির কাজে হস্তক্ষেপ করে না।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান–সংক্রান্ত বক্তব্যের সমালোচনা করে হানিফ বলেন, রাষ্ট্রদ্রোহী বক্তব্যের জন্য দেশের জনগণ বিএনপির ওপর স্থায়ীভাবে নিষেধাজ্ঞা দেবে। তিনি বলেন, লজ্জায় মাথা হেট হয়ে যায়। দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবি করে মির্জা ফখরুল যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত। এর মাধ্যমে বিএনপি মহাসচিব রাষ্ট্রদোহের কাজ করেছেন।

২০১২ সালে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জিএসপি বাতিল করে পোশাকশিল্পে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে চিঠি লিখেছিলেন জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, তারা স্বাধীন বাংলাদেশে বিশ্বাসী নয়।

বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা এনে দেশকে পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ করতে চায়।
ত্রিবার্ষিক সম্মেলন উদ্বোধন করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন পল্টন থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুল হক। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মোস্তবা জামান।