বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রী জোবায়দা রহমানের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার আদেশকে ‘ফরমায়েশি রায়’ আখ্যা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের ডাকা বিক্ষোভ মিছিলে ধাওয়া দিয়েছে ছাত্রলীগ।
তবে ছাত্রলীগ বলছে, অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে মারামারির শঙ্কা দেখে তাঁদের কিছু নেতা-কর্মী ধমক দিলে ভয় পেয়ে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা পালিয়ে যান।
আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর বকশীবাজার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় গত বৃহস্পতিবার ঢাকার একটি আদালত তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রীর সম্পত্তি ক্রোক করার আদেশ দেন।
এ আদেশের প্রতিবাদেই আজ বিক্ষোভ-মিছিল কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। কর্মসূচি পালনকালে প্রদর্শন করা ব্যানারে লেখা ছিল, ‘তারেক রহমান ও জোবায়দা রহমানের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি সরকারের পোষ্য আদালত কর্তৃক বাজেয়াপ্ত করার ফরমায়েশি রায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল’।
ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা চলে যাওয়ার পর শহীদ মিনার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করতে দেখা যায় ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মীকে। এ সময় তাঁদের বেশির ভাগের হাতেই ছিল লাঠিসোঁটা।
বেলা তিনটার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ বি এম ইজাজুল কবির ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে মিছিলটি শুরু হয়। মিছিল শহীদ মিনার-সংলগ্ন জগন্নাথ হল ক্রসিং হয়ে বকশীবাজার মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
ছাত্রদলের এ কর্মসূচির খবর পেয়ে আগেই বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। কর্মসূচির শেষ দিকে বকশীবাজার মোড়ে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া দেন জগন্নাথ হল শাখা ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী। ধাওয়ায় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। একটি অংশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভেতরে ঢুকে পড়েন, কেউ কেউ আবার দৌড়ে অন্য দিকে চলে যান।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর বকশীবাজার মোড়ে ছাত্রলীগ ধাওয়া দেয়। ধাওয়ায় নেতা-কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। তবে কেউ আহত হননি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে ছাত্রলীগ বদ্ধপরিকর। আমরা চাই না যে অরাজকতা সৃষ্টি করে কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করুক। আমরা খবর পাই, ছাত্রদলের কিছু নেতা-কর্মী নাশকতার উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাসে আসছেন।’
তানভীর হাসানের দাবি, ‘ক্যাম্পাসে আসা নিয়ে ছাত্রদলের দুই পক্ষের মধ্যে মতবিরোধ ছিল। এ নিয়ে বকশীবাজার মোড়ে তারা নিজেদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। তারা যাতে মারামারিতে না জড়ায়, সে জন্য একপ্রকার ধমক দেন ওই এলাকায় থাকা আমাদের জগন্নাথ হল শাখার কিছু কর্মী। ধমকে ভয় পেয়ে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা চলে যান।’
এদিকে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা চলে যাওয়ার পর শহীদ মিনার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করতে দেখা যায় ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মীকে। এ সময় তাঁদের বেশির ভাগের হাতেই ছিল লাঠিসোঁটা।