শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে ছাত্রশিবিরসহ ২২টি ছাত্রসংগঠন

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ ২২টি ছাত্রসংগঠন। এক যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনগুলো এই প্রতিবাদ জানায়।

বিবৃতিতে ২২ সংগঠনের নেতারা বলেন, ‘কোটাব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র হামলা চালায়। এই বর্বর হামলায় নারীসহ অসংখ্য শিক্ষার্থী আহত এবং ছয়জন নিহত হন। আওয়ামী লীগ নেতাদের হুকুমে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে এ নৃশংস হামলা চালানো হয়। নিরীহ শিক্ষার্থীদের ওপর এমন ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডে দেশবাসী চরমভাবে সংক্ষুব্ধ।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বর্তমান অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি মেনে না নিয়ে উল্টো তাঁদের অকথ্য ভাষায় বিদ্রূপ করেন। কোটা সংস্কারের গণতান্ত্রিক দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে নেতিবাচক মন্তব্য করলে ছাত্রসমাজ আরও সংক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় ছাত্রসমাজ রাস্তায় নেমে এলে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা তাঁদের ওপর নৃশংস হামলা চালায়।’

ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতারা যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা লক্ষ করছি, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চলাকালে পুলিশ অজানা কারণে নীরব ভূমিকা পালন করে। এমনকি হতাহত সাধারণ শিক্ষার্থীরা চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানেও হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে রাতের অন্ধকারে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের ক্যাডার বাহিনী লাঠিসোঁটা, রড, চাপাতি ও রামদা নিয়ে হামলা করে। নিরুপায় হয়ে শিক্ষার্থীরা ভিসির কাছে নিরাপত্তা চাইতে গেলে সেখানেও নরপশুরা হামলা চালায়। মুহুর্মুহু বোমাবর্ষণ ও এলোপাতাড়ি গুলিতে নারীসহ অসংখ্য শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সাংবাদিক আহত হন।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসের কাছে ছাত্রসমাজ মাথা নত করবে না। ক্যাম্পাসে ছাত্রদের নিরাপত্তার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে উদ্ভূত পরিস্থিতি দ্রুত সমাধানের দাবি জানিয়েছে ২২টি সংগঠন।

যৌথ বিবৃতি প্রদানকারী নেতারা হলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের (চরমোনাইপীরের দল) সভাপতি নূরুল বশর আজিজী, ইসলামী ছাত্র মজলিসের সভাপতি বিলাল আহমদ চৌধুরী, গণতান্ত্রিক ছাত্রদলের (এলডিপি) সভাপতি মেহেদি হাসান মাহবুব, জাগপা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুর রহমান ফারুকী, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের (জেএসডি) সভাপতি তৌফিক উজ জামান, জাতীয় ছাত্র সমাজের (কাজী ফয়েজ) সভাপতি কাজী ফয়েজ আহমেদ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিসের সভাপতি মুহাম্মদ আশিকুর রহমান জাকারিয়া, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসের সভাপতি মুহাম্মাদ কামাল উদ্দীন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র সমাজের সভাপতি এহতেশামুল হক, নাগরিক ছাত্র ঐক্যের (মান্না) সভাপতি মেহেদী হাসান, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সভাপতি খালেদ মাহমুদ, ছাত্র ফোরামের (মোস্তফা মহসীন মন্টু) সভাপতি সানজিত রহমান, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক ছাত্র আন্দোলনের (ববি হাজ্জাজ) সভাপতি মাসুদ রানা জুয়েল, বাংলাদেশ ছাত্র মিশনের (ইরান) সভাপতি সৈয়দ মো. মিলন, বাংলাদেশ মুসলিম ছাত্রলীগের সভাপতি নুরুল আলম, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মোল্লা রহমাতুল্লাহ্, রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক আহমেদ ইসহাক, বিপ্লবী ছাত্র সংহতির আহ্বায়ক ফাইজুর রহমান মনির, বাংলাদেশ ছাত্র মিশনের (ফারুক) সভাপতি মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ ও পিপলস অ্যালায়েন্সের আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন।