এনসিসির মতো প্রতিষ্ঠান গঠনের তাগিদ অনুভব করছে দলগুলো: আলী রীয়াজ
সাংবিধানিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেওয়ার জন্য জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) মতো প্রতিষ্ঠান গঠনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো তাগিদ অনুভব করছে বলে মনে করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
সংস্কার প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের তৃতীয় বৈঠক বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে অনুষ্ঠিত হয়। পরে কমিশনের সহসভাপতি এ কথা বলেন।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় এ আলোচনা শুরু হয়। এতে অংশ নেন বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, গণ অধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। এদিনের আলোচ্যসূচির মধ্যে ছিল আগের অসমাপ্ত আলোচনা শেষ করা, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি), রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও জেলা সমন্বয় কাউন্সিল।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে আমরা বোঝার চেষ্টা করেছি, রাজনৈতিক দলগুলো সাংবিধানিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেওয়ার কোনো প্রতিষ্ঠান গঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে কি না। আমরা দেখেছি, দলগুলো এ বিষয়ে তাগিদ দেখিয়েছে। তারা বিভিন্নভাবে সেটা বলার চেষ্টা করেছে।’
দু-একটি রাজনৈতিক দল এনসিসি গঠনের বিপক্ষে মত দিয়েছে উল্লেখ করে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে আমরা এনসিসির মতো একটি প্রতিষ্ঠান গঠনের তাগিদ দেখতে পেয়েছি। অনেকে কাঠামো এবং পরিধি নিয়ে মত দিয়েছেন। অনেকে নামের পরিবর্তন নিয়েও কথা বলেছেন। আলোচনা আগামী সপ্তাহে অব্যাহত থাকবে।’
যেকোনো আলোচনায় মতভিন্নতা থাকে উল্লেখ করে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা দলগুলোর সঙ্গে ভিন্ন ভিন্ন আলোচনায় বিভিন্ন মতামত পেয়েছি। তাই দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় সব দলের মতবিনিময় করার সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে।’
আলোচনায় বিএনপির পক্ষ থেকে এনসিসির জবাবদিহি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘কেবল প্রধান বিচারপতি ছাড়া এনসিসির বাকি সব সদস্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। কাজেই তারা জনগণের কাছে জবাবদিহি করবে। প্রতিষ্ঠান হিসেবে যদি এনসিসির জবাবদিহির প্রশ্ন ওঠে, আমাদের মনে রাখতে হবে, এই ব্যবস্থা কাঠামোগত উপায়ে করা যায়। তবে এনসিসি গঠনের বিষয়ে একমত হওয়া প্রথম কাজ।’
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে সংস্কার কমিশন ইলেকটোরাল পদ্ধতির কথা বলেছে। বুধবারের আলোচনায় বিষয়টির মীমাংসা হয়নি। এ ছাড়া জেলা সমন্বয় কাউন্সিল নিয়েও তেমন আলোচনা না হওয়ার কথা জানিয়েছেন ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান তুলে ধরে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, এ ক্ষেত্রে দুটি প্রস্তাব এসেছে। প্রথমত রাষ্ট্রপতিকে সরাসরি নির্বাচনে অংশ নেওয়া আর অপরটি হলো ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষায় রাষ্ট্রপতিকে আরও ক্ষমতা দেওয়া। দুটি বিষয়ে আলোচনা চলমান থাকবে।
আলোচনায় জামায়াতে ইসলামীকে সময় বেশি দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে বামপন্থী কয়েকটি রাজনৈতিক দল। এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘সব রাজনৈতিক দল আমাদের সহযোগিতা করছে। তবে সময়স্বল্পতার কারণে কিছু অভিযোগ আসতে পারে। আমরা বিষয়টি আমলে নিয়ে সে অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা জানিয়েছি।’