বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সমাবেশ
এনসিটিবির সামনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার দাবি
রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সামনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ এবং জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। আজ বুধবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
জাতিগত বিভাজন জিইয়ে রাখার অপচেষ্টা, জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বে অবহেলা, সংবিধান থেকে বিভিন্ন জাতি–গোষ্ঠীর মানুষকে আলাদা করে রাখা এবং বিদেশি চক্রান্তে পা না দেওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে সমাবেশে কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘যারা অপরাধী, যারা হামলা করেছে, তাদের ছবি জাতির কাছে স্পষ্ট; কিন্তু আমরা দেখছি, তাদের সেফ এক্সিট দেওয়ার জন্য ট্যাগিং ব্লেমিং গেম শুরু হয়েছে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, যে দলেরই হোক না কেন, যারা আজ হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছে, তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। জাতিগত সম্প্রীতিকে পুঁজি করে যারা দেশ ভাগের দেশি এবং বিদেশি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে, তারা বাংলাদেশের শত্রু।’
সমাবেশে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘আমরা সরকারকে বলতে চাই, যারা এই হামলার নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের তো গ্রেপ্তার করতেই হবে, যারা পেছন থেকে মদদ জুগিয়েছে, এটা খুঁটিয়ে দেখতে হবে। এই হামলার পেছনে শক্তি যারা, তাদেরও আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাতে হবে।’
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এটার যদি দৃশ্যমান কোনো বিচার না হয়, তাহলে সরকারের প্রতি আমাদের জায়গাটা, সেটা নষ্ট হবে। আর সেটা যদি নষ্ট হয়, তাহলে এই সিস্টেমকে কীভাবে নতুন করে ভেঙে গড়তে হবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি জানে।’
জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘১৯৭২ সালে একটি জাতিসত্তা বাঙালিকে নিয়ে যে বাংলাদেশের রাষ্ট্র গঠন করা হয়েছে, সংবিধান তৈরি করা হয়েছে, বিভিন্ন জাতিসত্তাকে সেই সংবিধান থেকে খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। সে কারণেই আজ আমার বোন হসপিটালে। সেই সংবিধান বাতিল চাই। বাহাত্তরের যে মুজিববাদী সংবিধান রয়েছে, যে সংবিধান আমাদের রক্ত ঝরিয়েছে, আমরা আগামীতে সেই সংবিধান যদি বাতিল করতে না পারি, তাহলে প্রতিনিয়ত এই হত্যাযজ্ঞ চলতে থাকবে।’
কোনো প্রকার ষড়যন্ত্র বা চক্রান্তে পা না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘পাহাড়ে যাঁরা রয়েছেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আপনারা শান্ত থাকুন। আপনারা বিভিন্ন জায়গায় সমবেত হচ্ছেন আমরা খবর পেয়েছি, সেই জায়গায় যাঁরা বাঙালি রয়েছেন এবং বিভিন্ন জাতিসত্তার যাঁরা পাহাড়ে অবস্থান করছেন, কোনোভাবেই বিদেশি কোনো চক্রান্তে পা দেওয়া যাবে না।’