সরকার শুধু ‘ইয়েস’ শুনতে চায়: জি এম কাদের

রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে জিএম কাদের
ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান সরকার শুধু ‘ইয়েস’ শুনতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জি এম কাদের)। তিনি বলেছেন, ক্ষমতাসীনরা গঠনমূলক সমালোচনাও সহ্য করতে পারে না। সে কারণেই চিকিৎসক, ব্যবসায়ী, প্রকৌশলীসহ সব পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃত্বে তাদের নিজেদের লোক বসাতে চায়। ফলে দেশের প্রকৃত সত্য বা বাস্তবতা বুঝতে পারে না সরকার।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে জি এম কাদের এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে জাপার ভাইস চেয়ারম্যান সালমা হোসেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক নির্বাচিত হওয়ায় জি এম কাদেরকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

সালমা হোসেনকে অভিনন্দন জানিয়ে জি এম কাদের বলেন, সব পেশাজীবীদের দলীয়করণ করলে দেশ ও মানুষের কল্যাণে নেওয়া উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত হয়। পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃত্বে নিজস্ব লোক নিয়োগ করলে সরকারের উপকার হয় না, এটাও সরকার বুঝতে চায় না।

সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী জি এম কাদের বলেন, পেশাজীবী সংগঠনগুলো করা হয় একটি উদ্দেশ্য থেকে। যেমন কখন কোন পণ্য আমদানি করতে হবে, কোন পণ্যের কত দাম হবে এবং ব্যবসায়ীরা কী পরিমাণ ব্যবসা করবেন, তা নির্ধারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। সে ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠনগুলো ‘হেল্পিং হ্যান্ড’ হিসেবে সহায়তা করতে পারে। এভাবে প্রতিটি সেক্টরের পেশাজীবী সংগঠনগুলো সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা ও পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করতে পারে। সব ব্যবসায়ী সংগঠন তথ্য দিয়ে সরকারকে সহায়তা করতে পারে। আবার সরকার ইচ্ছা করলে সংশ্লিষ্ট সংগঠনের নেতাদের সঙ্গেও আলোচনা করতে পারে।

এতে সরকার প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে কর নির্ধারণ করা হবে বা কোন পণ্যে কর নির্ধারণ করা হবে না, তা সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হয়। কোন পণ্যে কর ছাড় দিলে জনগণ উপকৃত হবে, তা সরকার বুঝতে পারে।

পেশাজীবী সংগঠনগুলোতে কোন দল বা কোন মতের লোক নির্বাচিত হবে, এটা গুরুত্বপূর্ণ নয় মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, এখন পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃত্বেও দলীয়করণ করা হচ্ছে। দলের প্রতি আনুগত্য ভুলে পেশাজীবী সংগঠনের নেতাদের আলোচনা করতে হবে সরকারের সঙ্গে। সব পেশাজীবী সংগঠন তৈরি করা হয় জনগণের কল্যাণের জন্য। পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা নিরপেক্ষভাবে ভূমিকা রাখতে পারছে না। কারণ, সরকার সব পেশাজীবী সংগঠন দলীয়কণের মাধ্যমে নষ্ট করেছে। এখন সরকার যা বলছে, পেশাজীবী সংগঠনগুলো ইয়েস স্যার বলছে।

পেশাজীবী সংগঠনগুলো জনগণের কথা চিন্তা না করে সরকারকে সমর্থন দিতেই ব্যস্ত হয়ে থাকে বলে মন্তব্য করেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, অথচ সরকারকে সঠিক পথে রাখতেই এই সংগঠনগুলো সৃষ্টি হয়েছিল। এখন বাজার অস্থির, নিত্যপণ্যের অভাব, ব্যবসায়ীরা বেশি মুনাফা করছেন, কিন্তু সরকার তা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। সবাই সরকারের পক্ষে কথা বলেন, সবাই ইয়েস স্যার বলতেই ব্যস্ত। এবার এফবিসিসিআইয়ে নেতৃত্ব নির্বাচনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে, এটাকে সরকারের স্বার্থেই সম্পূর্ণ স্বাধীন করে দেওয়া উচিত।

অনুষ্ঠানে জাপার কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা সেলিম উদ্দিন, খলিলুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আমির উদ্দিন আহমেদ, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব বেলাল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।