জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে নারীরা দেখিয়েছিলেন, তাঁদের ভূমিকা শুধু অংশগ্রহণের নয়, সিদ্ধান্ত গ্রহণেরও। নারীর এই সাহসী ভূমিকাকে সামনে আনা দরকার।
নির্বাচনকেন্দ্রিক রাজনীতিতে পেশিশক্তি, টাকার খেলা ও পারিবারিক উত্তরাধিকার—এসব সাধারণ প্রবণতা। এ বিষয়গুলো অতিক্রম করতে নারী প্রার্থীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। নারী নেতৃত্বকে সামনে নিয়ে আসতে রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা খুব জরুরি ছিল। এ জায়গায় আমরা সবচেয়ে বেশি হতাশ হয়েছি। রাজনৈতিক দলগুলো সারাক্ষণ খালি ‘নয়া বন্দোবস্ত’, ‘নয়া বন্দোবস্ত’ বলে। কিন্তু তাদের ‘নয়া বন্দোবস্ত’ বাস্তবায়নে নতুন কিছুই দেখলাম না।
নারীরা ‘নীরব’ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটার। এবারের নির্বাচনে নারীদের ভোট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নারীরা হবেন নির্বাচনের ফলাফল–নির্ধারক। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত–শিক্ষিত নারীরা দল ও প্রার্থীর ভূমিকা দেখে ভোট দেবেন বলে মনে করি।
নারীর নিরাপত্তা দিতে গত ১৫ মাসে এ সরকারের যে ব্যর্থতা, তার প্রভাবও নির্বাচনে পড়বে বলে মনে করি। তবে ভোটের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত না হলে নারীরা ভোট দিতে বের হবেন না। তবে হ্যাঁ, ভোট না দিলে অনেক বেশি নিপীড়নের মুখে পড়ার ভয় থাকলে নারীরা ভোট দিতে যেতে পারেন। অপর দিকে নারীর ভোট বিপক্ষে যাবে মনে করলে একটা গোষ্ঠী নারীদের ঘরে রাখার চেষ্টা করতে পারে। গত ১৫–১৬ মাসে সে চেষ্টা যে হয়নি, তা নয়। নারীর চলাচল সীমিত করা হয়েছে, নিপীড়ন করা হয়েছে, নৈতিক পাহাদারি করা হয়েছে। এসব কর্মকাণ্ড আভাস দেয় যে নারী যাতে ঘর থেকে বের না হন, ভোট না দেন।
আমার প্রত্যাশা থাকবে, পেশিশক্তি ও টাকার জৌলুশের বাইরে গিয়ে যে দল নারীবান্ধব কাজ করবে, সে দলকে যেন ভোট দেন ভোটাররা। আর সরকারের প্রতি আহ্বান থাকবে, ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন, সে পরিবেশ যেন তারা সৃষ্টি করে।
সামিনা লুৎফা, অধ্যাপক, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়