ভারতীয় পণ্য বয়কটের নামে বিএনপি দেশের বাজারব্যবস্থাকে অস্থির করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত: ওবায়দুল কাদের

সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের। আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে
ছবি: বাসস

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ভারতীয় পণ্য বয়কটের নামে বিএনপি দেশের বাজারব্যবস্থাকে অস্থির করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। বিএনপির ডাকে জনগণ সাড়া দেবে না।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করার দুরভিসন্ধি বিএনপির মানসিক বৈকল্যের বহিঃপ্রকাশ। বিএনপির ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দুই দেশের সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে না। যারা ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছে, দেশের জনগণ তাদেরই বয়কট করবে।

সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, একটা রাজনৈতিক দল কতটা দেউলিয়া হলে, উগ্র মানসিকতা সম্পন্ন অবিবেচক হলে, কতটা কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত হলে প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে বয়কটের মতো কথা বলে। আজকে বিশ্ববাস্তবতা ও আঞ্চলিক ভূ-কৌশলগত অবস্থানের দিক দিয়ে ভারত বাংলাদেশের তিন দিকেই বেষ্টিত।

একদিকে শুধু মিয়ানমার। বাংলাদেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বড় অংশই ভারত থেকে আসে। এর সুবিধাও আছে। দূর দেশ থেকে আমদানি খরচ বেশি। কাজেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করার দুরভিসন্ধি বিএনপির মানসিক বৈকল্যেরই বহিঃপ্রকাশ। নির্বাচনে না এসে তাদের মস্ত বড় খেসারত দিতে হচ্ছে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপির এক জ্যেষ্ঠ নেতা দেশের গণতন্ত্র উদ্ধারে প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্রের সহযোগিতা চাইছেন। অন্যদিকে বিএনপিরই এক কনিষ্ঠ নেতা ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিচ্ছেন। আসলে বিএনপির রাজনীতি এলোমেলো, গোলমেলে। এখন কাকে খুশি করতে চাইছেন তাঁরা, এটা তিনি বুঝতে পারছেন না। বিএনপি আসলে কোন পথে চলবে? তারা এখন পথহারা পথিকের মতো দিশাহারা হয়ে পড়েছে। দিশাহারা হয়ে যখন যা খুশি তা–ই বলছে, যা খুশি করছে।

বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ২১ বছর ভারতের সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক বাংলাদেশেরই বেশি ক্ষতি করেছে বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, সম্পর্ক ভালো রেখেই সুবিধা আদায় সম্ভব, যা করে দেখিয়েছে আওয়ামী লীগ। ছিটমহল বিনিময়, সীমান্তচুক্তি বাস্তবায়ন করেছে আওয়ামী লীগ। এখন তিস্তা, ফেনী নদীর পানিবণ্টনসহ যেগুলোর সমাধান হয়নি, সম্পর্ক ভালো থাকায় সেগুলো নিয়ে ইতিবাচক অগ্রগতি আছে। সমাধানও সম্ভব। প্রতিবেশীর সঙ্গে ঝগড়া করে লাভ নেই।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, পাকিস্তান আমল থেকেই ভারত-বিরোধিতার নামে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি চলছে। আজকে ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক তারই অবিচ্ছেদ্য অংশ।

বিএনপি নেতারা দমন–পীড়নের যে অভিযোগ করছেন, তার সমালোচনা করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর থেকে শুরু করে দলটির প্রায় সব নেতা একে একে জেল থেকে বের হয়ে গেছেন। অথচ মির্জা ফখরুল সিঙ্গাপুর থেকে বলছেন, তাঁদের ওপর দমন–পীড়ন চলছে। প্রায় সব নেতাই জেল থেকে জামিনে বেরিয়ে গেছেন। এখানে দমন–পীড়ন কোথায়? এটা কি স্ববিরোধী বক্তব্য নয়?

ভারতের ভূমি ব্যবহার করে ভুটান থেকে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ আমদানিতে নয়াদিল্লি নিমরাজি হবে না বলে মনে করেন সড়ক পরিবহনমন্ত্রী। তিনি বলেন, ভুটানের রাজা বাংলাদেশ আসছেন। তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে দেখা করবেন। ভুটানের রাজার পরিবারের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পারিবারিক সম্পর্ক আছে। ভারতের ভূমি ব্যবহার করে ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানিতে ভারত নিমরাজি হবে না বলে মনে করছেন তিনি।

ভুটান থেকে ভারতের ভূমি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ আমদানিতে সহযোগিতা চেয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেনসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।