দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থার কফিনে শেষ পেরেকটি ঠোকানো হয়েছে: মির্জা ফখরুল

নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ছবি: দীপু মালাকার

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থার কফিনে শেষ পেরেকটি ঠোকানো হয়েছে।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। এ সময় তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির তথাকথিত নির্বাচন বাতিলের দাবি জানান। নতুন করে সুষ্ঠুভাবে এ নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানান তিনি।

গত বুধ ও বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন হয়। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হইচই, হট্টগোল, হাতাহাতি, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও পুলিশি পিটুনির ঘটনা ঘটে। নির্বাচনের ফল গতকাল গভীর রাতে ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত ফলে সভাপতি-সম্পাদকসহ সমিতির ১৪টি পদের সব কটিতেই জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব বলেন, তিনি কল্পনাও করতে পারেন না যে সুপ্রিম কোর্টে পুলিশ ঢুকে আইনজীবীদের ওপর আক্রমণ করবে। সুপ্রিম কোর্টের ভেতরে পুলিশ কিছু করবে না, সেটাই মনে করা হতো। কিন্তু সেই জায়গাও এখন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেল।

মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগ আজ এমন একটি দেউলিয়া দলে পরিণত হয়েছে যে আইনজীবীদের একটি সমিতির নির্বাচনেও পুলিশের পাশাপাশি বহিরাগতদের ব্যবহার করে নিজেদের প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করতে হয়। এটা বড় লজ্জার বিষয়।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন নিয়ে বিজ্ঞ আইনজীবীদের পাশাপাশি দেশের সাধারণ মানুষের ব্যাপক আগ্রহ ছিল বলে উল্লেখ করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে লক্ষ্য করেছেন, দেশের অন্য সব নির্বাচনের মতো সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের সমিতির নির্বাচনেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যে রাজনৈতিক চরিত্র, তার নগ্ন বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। আইনগতভাবে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলেও নির্বাচনের নাটক সাজিয়ে একতরফাভাবে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের অবৈধভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, তাঁরা সব সময় বলে আসছেন যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের ছত্রচ্ছায়ায় দেশের কোথাও কোনো অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়। তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা জনগণের ভোটাধিকার বিশ্বাসী নয়। গত ২০১৪ ও ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ বিভিন্ন স্তরের স্থানীয় নির্বাচনে ইতিপূর্বে বারবার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। সর্বশেষ প্রমাণ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন।

এর আগে ঢাকা আইনজীবী সমিতি নির্বাচনেও একই ধরনের প্রহসনের নির্বাচন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, তাঁদের প্রত্যাশা ছিল, দেশের সাধারণ মানুষের আইনের আশ্রয় নেওয়ার শেষ ভরসাস্থল বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের সমিতিতে নগ্ন হস্তক্ষেপ থেকে ক্ষমতাসীন দল বিরত থাকবে। কিন্তু এখানেও নির্বাচনের নামে প্রহসন করা হয়েছে। এটা শুধু আইনজীবী সমাজেরই নয়, পুরো জাতির জন্যই কলঙ্কজনক।