উপজেলা নির্বাচনকে ‘একতরফা’ বলল বাম জোট, উদ্বেগ প্রকাশ

বাম গণতান্ত্রিক জোটছবি: সংগৃহীত

বাম গণতান্ত্রিক জোট বলেছে, বিরোধী দলগুলো নির্বাচন বর্জন করার পরও সরকার একতরফাভাবে উপজেলা নির্বাচন করছে। এর মাধ্যমে জাতীয় সংসদের পর স্থানীয় নির্বাচনেও টাকার খেলা, পেশিশক্তির দৌরাত্ম্য, মন্ত্রী-এমপিদের পারিবারিক আধিপত্যের পুনরাবৃত্তি ঘটবে।

আজ মঙ্গলবার বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সভায় গৃহীত প্রস্তাবে এসব কথা বলা হয়েছে। রাজধানীর পুরানা পল্টনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) কার্যালয়ে এ সভা হয়। সভার প্রস্তাবে উপজেলা নির্বাচনকে একতরফা উল্লেখ করে উদ্বেগের কথাও বলা হয়।

সভার প্রস্তাবে বলা হয়, সরকার নির্বাচনী ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এ ধরনের নির্বাচন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী না করে দলীয়, গোষ্ঠীতন্ত্র ও পরিবারতন্ত্রের আধিপত্যকেই বিস্তৃত করবে। ভোটে দাঁড়ানো ও জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা ছাড়া নির্বাচন কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না। এ জন্য নির্বাচনী ব্যবস্থার আমূল সংস্কারসহ ভোটাধিকার ও গণতন্ত্রের দাবিতে দেশবাসীকে সোচ্চার হতে হবে।

বাম গণতান্ত্রিক জোটের সভায় সভাপতিত্ব করেন বাম জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। সভায় উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সভাপতি শাহ আলম, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবীর জাহিদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদ (মার্ক্সবাদী) নেতা জয়দীপ ভট্টাচার্য, সমাজতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি আবদুল আলী, সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, বাসদের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নিখিল দাস, কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আবদুর সাত্তার, শামীম ইমাম ও সমাজতান্ত্রিক পার্টির যুগ্ম সম্পাদক রুবেল শিকদার।

সভায় এক প্রস্তাবে বলা হয়, ‘আমি ও ডামি’র নির্বাচনে গঠিত জাতীয় সংসদে ইউনিয়ন পরিষদ (সংশোধন) বিল ২০২৪ উত্থাপন করে নির্বাচনকে নির্বাসনে পাঠানো এবং গ্রাম পর্যন্ত কর্তৃত্ববাদী শাসনকে বিস্তৃত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। এই গণবিরোধী বিল প্রত্যাহার করতে হবে। প্রস্তাবে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণমুক্তভাবে দক্ষ ও শক্তিশালী স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে এই দাবিতে গ্রাম-শহরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়।

সভায় অপর এক প্রস্তাবে দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতি এবং দফায় দফায় বিদ্যুৎ-জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বলা হয়, মুদ্রাস্ফীতির ফলে এমনিতেই জনজীবন অতিষ্ঠ। জনগণের নাভিশ্বাস চলছে। তার মধ্যে দ্রব্যমূল্য ও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির ঘটনায় শ্রমজীবী মধ্যবিত্ত মানুষের বেঁচে থাকাই কঠিন হয়ে পড়বে। দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি রোধ, সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, সারা দেশে সর্বজনীন রেশনিং ব্যবস্থা ও ন্যায্যমূল্যের দোকান চালু, জ্বালানি ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি না করে দুর্নীতি অব্যবস্থাপনা ও ভুলনীতি পরিহার করারও আহ্বান জানানো হয় সভা থেকে।