প্রস্তাবে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা না গেলে গত কয়েক দশকে গড়ে ওঠা সুবিধাবাদী, সন্ত্রাসী ও লুটেরা শক্তিকে পরাস্ত করা সম্ভব হবে না। আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জনগণের বিজয় নিশ্চিত না করে তথাকথিত জাতীয় বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থা অক্ষুণ্ন রেখে ক্ষমতা লাভের খায়েশমাত্র। তাই ফ্যাসিস্ট শক্তিকে উৎখাত করে জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল ছোট-বড় সব দলকে নিয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকার গঠন করা হবে।

প্রস্তাবে আরও বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ হচ্ছে গঠনতন্ত্র প্রণয়ন সভা আহ্বান করা এবং জনগণের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে বাংলাদেশকে নতুনভাবে গঠন করা। নতুন গঠনতন্ত্রে স্বাধীন, নিরপেক্ষ, শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনী ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য নির্বাচনের সময় সব নির্বাহী ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকবে। নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়নের পরপরই অন্তর্বর্তী জাতীয় সরকার পদত্যাগ করবে এবং নতুন গঠনতন্ত্রের ভিত্তিতে নতুন জাতীয় নির্বাচন হবে। জনগণের ইচ্ছা ও অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে নতুনভাবে বাংলাদেশ গঠনের এটাই সঠিক পথ।

যদিও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বিএনপি বলেছে, ওই নির্বাচনে জয়ী হলে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করবে তারা। এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই প্রস্তাবিত জাতীয় সরকারের ২৭ দফা রূপরেখা দিয়ে কয়েকটি দল ও জোটকে সঙ্গে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেছে বিএনপি। এর মধ্যেই ইনসাফ কায়েম কমিটি বাংলাদেশের নতুন সংবিধান প্রণয়ন এবং তার অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকার গঠনের অভিমত প্রকাশ করল।

নৈশভোজের আগে জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটির আহ্বায়ক ফরহাদ মজহার স্বাগত বক্তব্য দেন। ভোজে অংশ নেওয়া একাধিক সূত্র জানায়, এতে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান (মান্না), গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী, সাবেক রাষ্ট্রদূত সাকিব আলী, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ, গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানসহ পুলিশের সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তা অংশ নেন।

ফরহাদ মজহার প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০১৩ সালে জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি গঠিত হয়। এরপর নানা প্রতিকূলতার কারণে সেটি আর সক্রিয় করা হয়নি। আমি একটি নীতি-আদর্শ নিয়ে চলি। সেটি কারও কাছে যদি গ্রহণযোগ্য হয়, তিনি আমার সঙ্গে থাকবেন। এখানে স্বাধীনতার তিন মূলনীতি সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার বা ইনসাফের বাইরে অন্য কিছু নেই।’