সাঈদীর মৃত্যুতে বিএনপির শোক

বিএনপি

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে বিএনপি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পৃথক শোকবার্তা দিয়েছেন। দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরে বিএনপির দুই নেতার ওই শোকবার্তা সোমবার মধ্যরাতে গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শোকবার্তায় বলেন, কারাবন্দী অবস্থায় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যু গভীর শোকাবহ। এই আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামি পণ্ডিত বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন ইসলামের আলোকিত পথে। ক্ষমতাসীন শক্তি তাঁকে কোনোভাবেই প্রভাবিত করতে পারেনি। তিনি তাঁর নিজস্ব মতাদর্শে ছিলেন অবিচল।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ধর্মপ্রাণ মানুষের প্রতি সহমর্মী মানুষটি জনসাধারণের মধ্যে বিশুদ্ধ ইসলামি জ্ঞানের চর্চা ও প্রচারে নিজেকে নিবেদিত রেখেছিলেন। জাতীয় সংসদেও তিনি ছিলেন ধৈর্যশীল ও তেজস্বী বক্তা।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘গুরুতর অসুস্থ মরহুম দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী গত ১৩ বছর বন্দী অবস্থায় থাকলেও তাঁকে কোনো সুচিকিৎসা দেওয়া হয়নি। তাঁর মৃত্যু স্বৈরশাসনের এক নির্দয় নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’

দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে বিএনপির পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ করা হলো। তবে এর আগে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের যাঁদের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসি হয়েছে এবং কারাবন্দী অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে, তখন বিএনপিকে শোক প্রকাশ করতে দেখা যায়নি।

গতকাল সোমবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএসএমইউ) দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যু হয়। রোববার বিকেলে বুকে ব্যথা অনুভব করলে সাঈদীকে কাশিমপুর কারাগার থেকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে রাজধানীর বিএসএসএমইউতে আনা হয়।

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগের মামলায় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ঢাকায় তাঁর শাহীনবাগের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ২০১০ সালের ২৯ জুন। তখন থেকেই তিনি কারাগারে রয়েছেন। তাঁকে গ্রেপ্তারের পর একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিচারের মুখোমুখি করা হয়।

২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, নির্যাতন ও ধর্মান্তরে বাধ্য করার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। তাঁর আপিলের ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে রায় দেন ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর। সেই রায়ে সাজা কমিয়ে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়।