আওয়ামী লীগই সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর চন্দ্র

জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘অন্তরে মম শহীদ জিয়া’ নামের একটি সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ জিয়াউর রহমানের ভূমিকা ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারাছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগই ‘সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেছেন, এটা বর্জন করলেই শেষ। ভোট বর্জন করে জনগণ এ সরকারকে ইতিমধ্যে বর্জন করেছে। আওয়ামী লীগ নামক পণ্যকে এখন বর্জন করলেই জাতি বন্দিদশা থেকে মুক্তি পাবে।

আজ শুক্রবার দুপুরে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ জিয়াউর রহমানের ভূমিকা ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এসব কথা বলেন। মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে এই সভার আয়োজন করে ‘অন্তরে মম শহীদ জিয়া’ নামের একটি সংগঠন।

ভারত পাশে ছিল বলেই বাংলাদেশের নির্বাচনে বিশ্বের বড় বড় রাষ্ট্র অশুভ হস্তক্ষেপ করতে পারেনি বলে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তাঁর ওই বক্তব্য ধরেই ভারতীয় পণ্য বর্জন নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে বলে দাবি করেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

জিয়াউর রহমান যদি স্বাধীনতার ঘোষণার পাঠক হন, তাহলে লেখক কোথায়, সেই কাগজটি কোথায়—এ প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানই স্বাধীনতাযুদ্ধের সরাসরি আহ্বান জানিয়েছিলেন দাবি করে তিনি বলেন, ‘বড় বড় টুর্নামেন্টে যেমন সময়, স্থান, খেলোয়াড় দর্শক সব থাকে, কিন্তু রেফারি বা আম্পায়ার বাঁশি না দেওয়া পর্যন্ত খেলা শুরু হয় না। তেমনি শেখ মুজিবুর রহমান সংগ্রামের টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছেন, সবাই বাঁশের লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। যার যা ছিল তাই নিয়েই দাঁড়িয়ে ছিল। মানুষের এই চেতনাবোধকে জিয়াউর রহমান অনুভব করতে পেরেছেন, বুকে সাহস নিয়ে ঘোষণা দিয়ে দিয়েছেন। জিয়াউর রহমানই সরাসরি স্বাধীনতাযুদ্ধের আহ্বান জানিয়ে ছিলেন। আজকে জিয়াউর রহমানকে ছোট করে শেখ মুজিবকে বড় করতে পারবেন না।’

জিয়াউর রহমানকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তাদের (বিএনপি) কোনো প্রচেষ্টার প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেন গয়েশ্বর চন্দ্র। তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান নিজেই নিজের কর্মগুণে প্রতিষ্ঠিত জাতির অন্তরে, ইতিহাসে। জিয়াউর রহমানকে ছাড়া বাংলাদেশের ইতিহাস লেখা কখনোই সম্ভব নয়। আজকের ইতিহাস কখনোই পরিপূর্ণ ইতিহাস নয়।’

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘জিয়াউর রহমান যখন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রিভোল্ট (বিদ্রোহ) ঘোষণা করলেন, তখন তিনি মাঝারি ধরনের কর্মকর্তা, মেজর। কতটুকু সাহস থাকলে একজন মেজর একটি রেগুলার আর্মির বিরুদ্ধে, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রিভোল্ট ঘোষণা করলেন। সেটা বোঝার মতো ক্ষমতা আওয়ামী লীগের কারও নেই। এই ধরনের সাহস আওয়ামী লীগের কোনো নেতার নেই। আওয়ামী লীগের সাহস আসে ক্ষমতায় থাকলে। আর যখন ক্ষমতায় থাকে না, তখন কী অবস্থা তা বলার মতো না।’

শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া ৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে আপত্তি নেই উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘তিনি (শেখ মুজিবুর রহমান) তখন বলেছেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। আমি কথাটার সঙ্গে এখনো একমত। কারণ, আমাদের মুক্তি-স্বাধীনতার সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি। আমরা সেই মুক্তির সংগ্রাম এখনো করছি। আমরা মুক্ত নই। খালেদা জিয়া বন্দী আছেন, শুধু তাঁকে নয়, পুরো দেশ-জাতিকে আমরা মুক্ত করতে চাই একটি রাহুর গ্রাসের কবল থেকে।’

আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা ঢালী আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাছের মো. রহমতুল্লাহ, রফিক সিকদার, সাবেক যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর হাওলাদার, জাতীয়তাবাদী তাঁতি দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহবায়ক কাজী মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।