ভাঙচুরের হুকুমদাতাকে ধরে এনে শাস্তি দেওয়া হবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের উদ্বোধন করার পর আরামবাগে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য দেন। ঢাকা, ৪ নভেম্বর
ছবি: পিআইডি

ভাঙচুরের হুকুমদাতা দেশে বা বিদেশে যেখানেই থাকুন, তাঁকে ধরে এনে শাস্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিএনপি-জামায়াতের হরতাল-অবরোধ ও পোশাকশ্রমিকদের আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মজুরি কমিশন বসেছে। ধৈর্য ধরতে হবে। কারা উসকানি দিচ্ছে, সেটা আমরা জানি—যারা ভাঙচুরে জড়িত, বিএনপির নেতা কর্মীদের বলব হুকুমদাতা দেশেই থাকুক বিদেশেই থাকুক। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি আর ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগ গ্রহণ করে হুকুমজারি করছে।ওই বিদেশ থেকে ধরে এনে বাংলাদেশে শাস্তি দেব ওই কুলাঙ্গারকে। কেউ ছাড়া পাবে না।’

আজ শনিবার মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের উদ্বোধন করে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। আরামবাগ এলাকায় এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনে দলীয় নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত যেন দেশের মানুষকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মারতে না পারে, অত্যাচার করতে না পারে, তার জন্য সজাগ থাকতে হবে।

নির্বাচনে নেতা-কর্মীদের করণীয় সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে কাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, সেটা আমরা ঠিক করে দেব। যাকে মনোনয়ন দেব, ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে কাজ করতে হবে; যেন আবার আমরা এ দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারি। এখনো অনেক উন্নয়নের কাজ বাকি সেগুলো যেন সম্পন্ন করতে পারি। কারণ, ওই সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদীরা আসলে এ দেশকে টিকতে দেবে না। সেই জন্য জনগণের স্বার্থে, কল্যাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী ঢাকাবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘নৌকা মার্কায় ভোট পেয়েছি বলেই আজকে এত উন্নতি হচ্ছে। সেই কথাটা যেন তারা মনে রাখে। আগামী নির্বাচনের তফসিল যেকোনো সময় ঘোষণা হবে। আগামী নির্বাচনে যাকেই প্রার্থী করি, সেটা কানা, খোঁড়া যেই হোক, তাদের নৌকায় মার্কায় ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন। করবেন কি না হাত তুলে ওয়াদা করেন। এ সময় উপস্থিত জনতা হাত নেড়ে সমর্থন জানান।’

শেখ হাসিনা তাঁর বক্তৃতা শেষ করেন কয়েকবার জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দিয়ে। একদম শেষ বাক্য ছিল ‘এবার জিতবে নৌকা’, ‘এবার জিতবে নৌকা’।

এর আগে পোশাকশ্রমিকদের বেতন-ভাতা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০০৯ সালে তাঁর সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১ হাজার ৬০০ টাকা থেকে পর্যায়ক্রমে পোশাক খাতের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার ৩০০ কোটি টাকায় উন্নীত করেছেন।

শ্রমিকদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে কারখানা আপনাদের রুটি-রুজি দেয়, শ্রম দিয়ে পয়সা কমাই করেন, সেই কারখানা ভাঙচুর করলে আল্লাহও নারাজ হবে। আপনাদের যা প্রয়োজন হয়, অসুবিধা আমরা দেখি।’

এ সময় কারখানায় শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী । তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় ছিল তখন তো কিছু করেনি, যা করেছে আওয়ামী লীগ সরকারই করেছে। আওয়ামী লীগ জানে মানুষের কষ্ট দূর করতে।

প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের উদ্দেশে আরও বলেন, ‘অন্যের কথায় নেচে কারখানায় হামলা করে, কারখানা ভেঙে, সেখানে অস্বাভাবিক পরিবেশ সৃষ্টি করে দেশের ক্ষতি করলে নিজেরই ক্ষতি হবে। আর কারখানা বন্ধ করলে ওই গ্রামেই ফিরে যেতে হবে। বিনা কাজে জীবনযাপন করতে হবে।’