ফিনিশার বলেন, স্ট্রাইকার বলেন—তাঁরাই আমাদের নেতা

জনগণের অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সরকারের পতন ঘটাতে চায় বিএনপি। এ লক্ষ্যে শক্ত আন্দোলনের প্রস্তুতি চলছে। এ আন্দোলনের ‘ফিনিশার’ বা ‘স্ট্রাইকার’ হচ্ছেন খালেদা জিয়া, তাঁর অবর্তমানে তারেক রহমান। যখন সরকার পড়তে বাধ্য হবে, তখনই এ আন্দোলনের সমাপ্তি হবে।

প্রথম আলোর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে কথাগুলো বলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম। এ ছাড়া আন্দোলন, আগামী নির্বাচনসহ দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নানা প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি সেলিম জাহিদ

মির্জা ফখরুল ইসলাম

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন, এর শেষ কোথায়?

মির্জা ফখরুল ইসলাম: এই আন্দোলনের শেষ তো হচ্ছে এই সরকারের পতন। কারণ, আমরা যে আন্দোলনটা শুরু করছি, তা জনগণের মৌলিক দাবিগুলো নিয়ে। তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য—যা ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। অথচ সাধারণ মানুষের আয় বৃদ্ধি পায়নি। কিন্তু আওয়ামী লীগের যে আয়, যে অর্থ উপার্জন, যে বিত্তসম্পদ গড়ে উঠেছে, সেটা ভয়াবহ রকমের বেশি। সে বৈষম্যটা এত বেশি যে সমাজের ওখানেই কিন্তু মারাত্মক ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়েছে। এটা একটা বিষয়।
২ নম্বর হচ্ছে, আমরা এই যে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন করছি, আমাদের আন্দোলনের বৈশিষ্ট নিশ্চিতভাবে আপনারা লক্ষ করেছেন, একেবারেই অহিংস আন্দোলন। এবং সম্পূর্ণভাবে একটা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন যেভাবে করতে হয়, সেভাবেই আমরা প্রতিবাদ সমাবেশ করছি। কিন্তু মিছিল করতে গেলেই আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ আক্রমণ করছে এবং পুলিশ দিয়েও হামলা করাচ্ছে। এর একটা পরিণতি আছে। সে পরিণতিটা হচ্ছে, এখান থেকে যে মানুষ সম্পৃক্ত হচ্ছে, আমাদের লক্ষ্যটা ওই জায়গায়। মানুষকে সম্পৃক্ত করে এর পরে মূল যে আন্দোলনটি হবে, সেটি সরকার পতনের আন্দোলন। এই পতনের লক্ষ্যে আমরা ইতিমধ্যে অনেকগুলো কাজ করেছি। সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেছি। আমরা সবাই একমত হয়ে একটা যৌথ ঘোষণার দিকে কাজ করছি। আশা করি খুব শিগগিরই সেটা হয়ে যাবে। এটা হয়ে গেলে আমাদের এ আন্দোলন চূড়ান্ত লক্ষ্যে যেটা আপনি জিজ্ঞেস করেছেন, শেষ হবে এ সরকার যখন পদত্যাগ করবে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে—তখনই হবে এ আন্দোলনের শেষ।

আরও পড়ুন

প্রশ্ন :

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যৌথ ঘোষণার কথা বললেন। কিন্তু আমরা দেখছি, ২০১৪-১৮ সালে যারা আপনাদের সঙ্গে ছিল, এখনো তারাই। এ আন্দোলনে বলার মতো নতুন কোনো শক্তি কি যোগ হয়েছে?

মির্জা ফখরুল: এখানে বামদের একটা অংশ যুক্ত হয়েছে। যারা যুগপৎ আন্দোলন করতে চায়। যেমন সাকি সাহেবের (জোনায়েদ সাকি) দল, সাইফুল হক সাহেবের দল—এরা যুক্ত হয়েছে। আরও কিছু কিছু আমরা কথা বলছি, তাদেরও যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আর আমরা ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে কথা বলেছি, তারাও আছে। আমাদের ২০ দলে যারা ছিল, তারাও আছে।

আরও পড়ুন

প্রশ্ন :

জোট নিষ্ক্রিয় করে যুগপৎ আন্দোলনে যাচ্ছেন। এ প্রক্রিয়ায় বাড়তি কোনো সুবিধা আছে?

মির্জা ফখরুল: বাড়তি সুবিধাটা হচ্ছে এখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন মত আছে। তাদের মধ্যে কিছু কিছু সমস্যা আছে যে অমুক দল থাকলে আমরা থাকব না, তুমুক দল থাকলে আমরা থাকব না। এ ধরনের মানসিকতার কারণে আমরা যুগপৎ আন্দোলন শুরু করছি। আন্দোলনই বলে দেবে যে আমরা শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়াব।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম

প্রশ্ন :

এই জায়গাটাতে এসে জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে কথা উঠেছে। সম্প্রতি জামায়াতের আমিরের ফাঁস হওয়া বক্তব্য এবং বিএনপির যে অবস্থান—তাতে সম্পর্কটা আসলে কোন পর্যায়ে।

মির্জা ফখরুল: উনি (জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান) যেটা বলেছেন, আমরাও সেটা বলেছি। আমরা তো এখন যুগপৎ আন্দোলন করছি। আমরা তো এখন আর জোটবদ্ধ কোনো আন্দোলন করছি না। সুতরাং ওই জায়গাটা পরিষ্কার যে আমরা যুগপৎ আন্দোলন করছি, আমাদের সঙ্গে এ আন্দোলনে যারা আসার, তারা আসবে।

আরও পড়ুন

প্রশ্ন :

সরকারি দলের পক্ষ থেকে একটা কথা ঘুরেফিরে আসছে যে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন। আপনি জবাবও দিয়েছেন। এ আলোচনার পেছনের কারণ কী?

মির্জা ফখরুল : যেহেতু আমাদের চেয়ারপারসন (খালেদা জিয়া) বন্দী অবস্থায় আছেন, যেহেতু আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশের বাইরে আছেন। যাঁদের আমরা বলছি যে, তাঁরাই প্রধানমন্ত্রী হবেন। সুতরাং ওই কথাটা বলে দেশের মানুষের মধ্যে এবং আন্তর্জাতিকভাবে একটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা, যে তাদের নেতৃত্বে সমস্যা আছে। কিন্তু আমরা পরিষ্কার করে যেটা বারবার বলছি এবং আপনারা দেখছেন, আমাদের দল অত্যন্ত সুন্দরভাবে চলছে। খালেদা জিয়া যেহেতু অসুস্থ এবং গৃহবন্দী অবস্থায় আছেন; তারেক রহমান সাহেব দেশের বাইরে আছেন, তাঁর নির্দেশনা, নেতৃত্বে এবং স্থায়ী কমিটির যৌথ নেতৃত্বে আমাদের দল সুষ্ঠুভাবে চলছে।

আরও পড়ুন

প্রশ্ন :

আলোচনা আছে, তারেক রহমানকে দেশে–বিদেশে অনেকে পছন্দ করছেন না।

মির্জা ফখরুল: এগুলো হচ্ছে আওয়ামী লীগের প্রচারণা। কিছুটা আন্তর্জাতিক প্রচারণাও এর মধ্যে জড়িত ছিল বলে মনে করি। যে কারণে এ ধরনের প্রচারণাগুলো তারা চালিয়েছে, এখন কিন্তু সে অবস্থায় নেই। এখন দলে, দেশের রাজনীতিতে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও তাঁর (তারেক রহমান) গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি।

প্রশ্ন :

অনেকের মতে, বিএনপির ক্ষমতায় আসার পথে তারেক রহমান একটা বাধা। আপনিও কি মনে করেন?

মির্জা ফখরুল: না। আমরা বিশ্বাস করি জনগণের শক্তিতে। আমরা আগেই বলেছি, যদি জনগণের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করে এই সরকারের পতন ঘটাতে পারি, তাহলে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হবেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। তাঁর পক্ষে সম্ভব না হলে তাঁর অবর্তমানে তারেক রহমান সাহেব প্রধানমন্ত্রী হবেন।

প্রশ্ন :

‘হাওয়া ভবনের’ কারণে অনেকে বলছেন তারেক রহমান ক্ষমতায় এলে পরিস্থিতি এখনকার চেয়েও খারাপ হবে।

মির্জা ফখরুল: এ কথার পেছনে কোনো যুক্তি নেই। এর পেছনে অপপ্রচার আছে। যা সেই এক-এগারোর আগে থেকেই শুরু হয়েছে। তখন যেসব বুদ্ধিজীবী-পেশাজীবী মিলে তুমুল অপপ্রচার চালাচ্ছিলেন, হাওয়া ভবনের নাম করে ও আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে; কিন্তু পরে দেখা গেছে, এগুলোর মধ্যে ৯৯ ভাগই সত্য নয়। এসব অপপ্রচার হচ্ছে রাজনৈতিক কারণে। বিএনপি এবং এর নেতৃত্বকে জনগণের কাছে হেয়প্রতিপন্ন এবং ভুল ধারণা সৃষ্টি করার জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের মধ্য দিয়ে এসব অপপ্রচার চলছে। বাস্তবতা হচ্ছে, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে চালানো অপপ্রচার আওয়ামী লীগাররা প্রমাণ করতে পারেননি।  

প্রশ্ন :

এ মুহূর্তে বিএনপি কতটা সংগঠিত।

মির্জা ফখরুল: যেকোনো সময়ের চেয়ে বিএনপি এখন অনেক বেশি সংগঠিত। নিশ্চয়ই লক্ষ করছেন, বিএনপির কর্মসূচিগুলোতে অংশগ্রহণ সাংগঠনিকভাবে কিন্তু চোখে পড়ার মতো। একটা বড় দলে অনেক সমস্যা থাকে। কিন্তু এই আন্দোলনে সব সমস্যা মিটিয়ে সবাই একসঙ্গে আন্দোলন করছে। এমনকি যেসব সংসদীয় আসনে আমাদের তিনজন–চারজন করে প্রার্থী ছিল নির্বাচনের জন্য, সে জায়গাগুলোতে সবাই একসঙ্গেই আন্দোলন করছে, এটা একটা ইতিবাচক দিক। সেদিক থেকে আমরা অনেক বেশি আশাবাদী। বিএনপির সবাই এখন মরিয়া। কারণ, আমাদের কোনো বিকল্প নেই তো। আমাদের এবার হয় জিততে হবে, না হয় মরতে হবে।

প্রশ্ন :

আপনি প্রায়ই বলেন, সারা দেশে বিএনপির ৩৫ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলার কথা। এসব মামলায় সাজা হয়ে গেলে কীভাবে আপনারা নির্বাচন করবেন?

মির্জা ফখরুল: সাজা দেওয়া পর্যায়ে খুব বেশি মামলা তারা নিয়ে আসতে পারেনি। ইতিমধ্যে লক্ষ করেছেন, অনেক মামলা খারিজ হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ বিচারপর্যায়ে সেগুলো টিকছে না। তা ছাড়া মামলা–মোকদ্দমা নিয়েই তো আমরা রাজনীতি করছি। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের কথা বলি। ১৯৬৬ সালে ছয় দফা দেওয়ার পরে কিন্তু আওয়ামী লীগের অফিসে বাতি জ্বালানোর মতো লোকও ছিল না। কিন্তু তারা অল্প সময়ের মধ্যে সফল হয়েছে। আমরা অতীতের আন্দোলনে দেখেছি, ’৯০–এর আন্দোলনেও দেখেছি, ২০০১ সালে দেখেছি; পরবর্তীকালে ২০১৪ সালে দেখলাম মামলা কখনো বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। মামলা দিয়ে আন্দোলন দমিয়ে রাখা সম্ভব হয় না।

প্রশ্ন :

বলছিলেন নেতা-কর্মীরা এখন অনেক বেশি সংগঠিত। কিন্তু প্রায়ই তো জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে মতের অমিলের কথা শোনা যায়।

মির্জা ফখরুল: হয়তো বিভিন্ন মিডিয়া থেকে শোনেন। কিন্তু আমি যতটুকু দেখেছি, আগে যতটুকু সমস্যা ছিল এখন সেটা একেবারেই নেই। আমাদের সর্বস্তরের নেতাদের মধ্যে এই ঐক্য লক্ষ করছি এবং সবাই কাজ করতে চাচ্ছেন। এ বিষয়গুলো কিন্তু সাম্প্রতিক। যাঁরা রাজনীতি করেছেন বিএনপির সঙ্গে, ছাত্রদলের সঙ্গে, যুবদলের সঙ্গে—তাঁরা এখন আগ্রহী হচ্ছেন আমাদের সঙ্গে কাজ করার জন্য। এমনকি পেশাজীবী-চাকরিজীবী যাঁরা কখনোই রাজনীতির ভেতরে আসেন না; তাঁরাও কিন্তু এখন আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, কথা বলছেন। বিষয়গুলোকে আমরা ইতিবাচক লক্ষণ হিসেবে দেখছি।

প্রশ্ন :

আপনার সঙ্গে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর দ্বন্দ্ব-বিরোধের কথা প্রায় শোনা যায়, আসলে কী?

মির্জা ফখরুল: প্রশ্নই ওঠে না। রুহুল কবির রিজভী একে তো বয়সে আমার অনেক ছোট। দুই নম্বর হচ্ছে, বিএনপিতে তাঁর যে অবস্থান, তাঁর যে অবদান, সেটা সব সময় স্বীকার করে নিয়েই আমরা কাজ করি। আমার সঙ্গে রিজভীর আজ পর্যন্ত কোনো দিন কোনো সমস্যা হয়েছে, তা কেউ বলতে পারবে না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এই প্রচারণাটা আসে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে, যাতে করে এখানে উত্তাপ সৃষ্টি করা যায়।

প্রশ্ন :

বিএনপিতে ভাঙন আসন্ন, এমন একটা গুঞ্জন উঠেছে। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান সম্প্রতি বলেছেন, নতুন বিএনপি হচ্ছে।

মির্জা ফখরুল: বাজে কথা এগুলো। আমি আগেও বলেছি, এখনো বলছি, তাঁরা যেগুলো চিন্তা করেন আর কোন কথাটা বললে তাঁদের জন্য ভালো হবে, সেটাই বলেন। এই কথা তাঁরা বলার পরে কর্নেল অলি সাহেবের (এলডিপির নেতা) নিজস্ব হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে গেলে দেখবেন যে তিনি খুব কঠিনভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি পরিষ্কারভাবে বলেছেন যে তিনি বিএনপির সঙ্গে আন্দোলন করছেন, বিএনপির সঙ্গে আছেন। আমরা তো এখন পর্যন্ত সেটার (ভাঙনের) কোনো আলামত খুঁজে পাইনি।
এ নিয়ে আমরা চিন্তিতও না। ইতিপূর্বেও বহুবার বিএনপিকে ভাঙার চেষ্টা করা হয়েছে, ভেঙেছেও। যেমন বিএনপির দুঃসময়ে এলে তখন ভাঙার চেষ্টা হয়, যখন নির্বাচন আসে তখন কিছু সুবিধাবাদী মানুষকে সরকারের পক্ষ থেকে টোপ দিয়ে অন্য দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এগুলো ধোপে টেকে না। কারণ, বিএনপি হচ্ছে একটা বেগবান স্রোতস্বিনী নদীর মতো। এই নদী চলছে, এখানে কেউ আসবে আবার কেউ যাবে। খড়কুটো কিছু চলে গেলে তাতে বিএনপির মূল যে স্রোত, সেটা কখনো আটকে থাকে না।

প্রশ্ন :

এমন কারও যাওয়ার বার্তা আছে কি?

মির্জা ফখরুল: আমি তো দেখি না। আমার কাছে এখন পর্যন্ত সে ধরনের কোনো ক্ল্যাসিফায়েড (গোপন) তথ্য নেই। বাতাসে তো অনেক কিছুই শোনা যায়, আপনারাও অনেক কিছু লেখেন। কিন্তু সে ধরনের কিছু আমার জানা নেই।

প্রশ্ন :

কমিটি নিয়ে বিএনপিতে অনেক ক্ষোভ–অসন্তোষের খবর প্রায়ই ছাপা হয়। দল ভাঙতে এই অংশটি ব্যবহৃত হতে পারে?

মির্জা ফখরুল: এটা তো হচ্ছে প্রচলিত ধারণা। বিএনপি থেকে বের হয়ে কেউ ভালো করতে পারবে না, পারেনি এখন পর্যন্ত। আর বিএনপির মতো বড় দলে সব সময়ই হাজার হাজার যোগ্য লোক থাকে; সেখানে ১৫১ জনের একটি কমিটি দেওয়া হলে স্বাভাবিকভাবে যোগ্য অনেকে বাদ পড়বে। দায়িত্ব হচ্ছে এই ১৫১ জনকে আমাদের মূল ধারায় নিয়ে এসে কাজ করানো। সেই কাজটাই এখন হচ্ছে।

প্রশ্ন :

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের পর আপনি বলেছেন, ভারতও এখন আর তাদের ওপর খুশি নয়। এটা কোন বাস্তবতায়?

মির্জা ফখরুল: আমাকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ভারতে গেলেন, কী পেলেন? এই নির্বাচনের আগে তাঁর ভারতে যাওয়ার প্রধান উদ্দেশ্য তো হবে যে ভারতের সঙ্গে আমাদের অমীমাংসিত বিষয়গুলোর সমাধান, তাই না? কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই বিষয়গুলো আমরা দেখতে পাইনি। একমাত্র কুশিয়ারা নদীর পানি, যেটা আমাদের জন্য বড় সমস্যাও না। সেখানটায় ১৫৩ কিউসেক পানি ছাড়া আমাদের তিস্তার পানির সমস্যা, সীমান্ত হত্যা, বাণিজ্যঘাটতি কমিয়ে নিয়ে আসা, রোহিঙ্গা সমস্যায় ভারতে একটা ইতিবাচক ভূমিকা পালন করা—এই বিষয়গুলোর কোনো সমাধান বা ফল আমরা পাইনি। পেয়েছি খুব চমৎকার চমৎকার বক্তব্য, যে ভালো সম্পর্ক, তারা এখানে একটা স্থিতিশীল সরকার দেখতে চায়।
যেকোনো দেশই বলবে যে বাংলাদেশকে স্থিতিশীল দেখতে চায়, আমরাও দেখতে চাই, সবাই দেখতে চায়। এটা প্রমাণ করে না যে তাদের সঙ্গে এমন একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছে, যেটা আশা করেছিলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতে গিয়ে যা বলেছেন। সেই ধরনের কোনো বক্তব্য আমরা দেখতে পাইনি। যদিও ওবায়দুল কাদের সাহেব বলার চেষ্টা করেছেন যে এই বক্তব্যের মধ্যে আছে স্থিতিশীল বাংলাদেশ দেখার। কিন্তু স্থিতিশীল বাংলাদেশ দেখা আর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় দেখা তো এক জিনিস নয়।
যদি ভূরাজনীতি বিশ্লেষণ করেন, সেখানে আমরা যেটা দেখতে পাই, ইদানীং চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের যে আর্থিক-ব্যবসায়িক সম্পর্ক, তা অনেক বেড়ে গেছে। চীনের প্রভাব বাংলাদেশে নিঃসন্দেহে অনেক বেড়েছে। ভারত তার ভূরাজনৈতিক কারণে, তার স্বার্থে চাইবে না যে তার বাইরে অন্য কোনো শক্তি এখানে অনেক বেশি প্রভাব বিস্তার করুক। এটা একটা কারণ।
আরেকটা কারণ হচ্ছে, আমরা যেটা মনে করি ভারতের যেটা প্রয়োজন, বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। ভারতের রাজনীতিকেরা অনেক বিচক্ষণ। তাঁরা পরিষ্কার দেখছেন যে এই দেশে জনগণের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক অনেক দূরে চলে গেছে, বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এ ছাড়া এখানে ভারতে যেটা দরকার; কানেকটিভিটি (সংযুক্তি) ও ব্যবসা-বাণিজ্য এগুলো তো হয়ে গেছে। এ অবস্থায় একটা অজনপ্রিয় রাজনৈতিক দলকে সমর্থন দেবে?

প্রশ্ন :

ভারতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক উন্নতি হয়েছে?

মির্জা ফখরুল: আমি বলব অবশ্যই সম্পর্ক আগের চেয়ে অনেক বেশি ভালো হয়েছে। তারা এখন আমাদের সঙ্গে কথা বলছে। আমাদের দেশ নিয়ে, দেশের অবস্থা নিয়ে, অর্থনীতি নিয়ে, কীভাবে আরও উন্নয়ন করা যায়, সম্পর্ক আরও কী করে বৃদ্ধি করা যায়—এ বিষয়গুলো নিয়ে আমরা কথা বলেছি কয়েকবার।

প্রশ্ন :

তাতে কি মনে হয় ভারতের বর্তমান সরকার বিএনপির ওপর সন্তুষ্ট?

মির্জা ফখরুল: সন্তুষ্টি–অসন্তুষ্টির প্রশ্ন নয়। প্রশ্ন হচ্ছে, বিষয়গুলোকে তারা কতটুকু গুরুত্ব দিচ্ছে। এখানে একটা নিরপেক্ষ অবাধ নির্বাচন যেকোনো গণতান্ত্রিক দেশ চাইবে। তারাও চায়, তারাও খুব পরিষ্কার করে বলে যে এখানে নিরপেক্ষ নির্বাচন হওয়া উচিত। এবং এটা বলাই তো স্বাভাবিক, যেহেতু তারা একটি গণতান্ত্রিক দেশ।

প্রশ্ন :

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের পর আওয়ামী লীগকে উজ্জীবিত মনে হয়?

মির্জা ফখরুল: আমি বলতে পারব না। আমি তো উজ্জীবিত হওয়ার কোনো কারণ দেখি না।

প্রশ্ন :

বিএনপি কি হতাশ?

মির্জা ফখরুল: প্রশ্নই ওঠে না। বিএনপি অনেক বেশি উজ্জীবিত।

প্রশ্ন :

অনেকে মনে করেন, বাংলাদেশের নির্বাচন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও সুশাসনের প্রশ্নে ভারত ও চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমের দেশগুলোর অবস্থানগত পার্থক্য আছে। আগামী নির্বাচনে এর কী প্রভাব পড়তে পারে?

মির্জা ফখরুল: আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ করেছেন, ইতিমধ্যে পশ্চিমা বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলো—যারা দেখতে চায় সারা পৃথিবীতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা থাকুক, তারা কিন্তু তাদের বক্তব্য খুব স্পষ্টভাবে দিচ্ছে। তারা বাংলাদেশে স্থিতিশীল গণতন্ত্র দেখতে চায়, একটা টেকসই গণতন্ত্র দেখতে চায়। টেকসই গণতন্ত্রের একটা প্রধান অংশ হচ্ছে একটা সুষ্ঠু অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। সে জায়গায় তারা খুব পরিষ্কার করে বলছে, তারা কাজ করছে। তারা ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করেছে। সুতরাং এ বিষয়ে পশ্চিমা বিশ্বের বক্তব্য খুব পরিষ্কার।
আর চীন রাজনৈতিক বিষয়ে খুব বেশি কথা বলে না। ভারতও তাদের কৌশলগত কারণে এ মুহূর্তে সে ধরনের কোনো বিবৃতি দেবে বলে আমরা মনে করি না। এটা নির্ভর করবে আমরা জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে কত দ্রুত মানুষকে সঙ্গে নিয়ে একটা যৌক্তিক আন্দোলন সৃষ্টি করতে পারছি। যার মাধ্যমে একটা অবাধ–সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে আমরা যেতে পারি এবং সরকারকে বাধ্য করতে পারি যে একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার জন্য।

প্রশ্ন :

নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও আইজিপি বেনজীর আহমেদ জাতিসংঘের আমন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রে গেলেন। বলা হচ্ছে, তিনি আমেরিকা জয় করে এসেছেন।

মির্জা ফখরুল: বাংলাদেশে দুর্ভাগ্যজনকভাবে কিছু কিছু গণমাধ্যম আছে, যারা প্রথম থেকেই এ কথাগুলো বলছে। কিন্তু বিষয়টা তো জানেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যাননি, গেছেন জাতিসংঘের পুলিশপ্রধানদের সম্মেলনে। এবং বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকেই কিন্তু তাঁর নামটা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জাতিসংঘের যে চুক্তি আছে, সেই অনুযায়ী জাতিসংঘে যদি কারও দাওয়াত থাকে তাঁকে ভিসা দিতে যুক্তরাষ্ট্র বাধ্য। মাত্র তিন দিনের ভিসা দিয়েছে এবং সেটাও শর্ত সাপেক্ষে; নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে যেতে পারবেন না। তো জয়টা কোথায় করল!

প্রশ্ন :

আপনি প্রায়ই বলেন, এই সরকার একটি ‘ফ্যাসিবাদী’ সরকার। যেভাবে বিএনপির আন্দোলন চলছে, তাতে পরিবর্তন ঘটানো কতটা সম্ভব?

মির্জা ফখরুল: ফ্যাসিবাদের সঙ্গে লড়াই করা একটি গণতান্ত্রিক দলের জন্য খুব কঠিন ব্যাপার। এ ক্ষেত্রে জনগণকে সংগঠিত করাই একমাত্র পথ। কারণ, আমরা তো অন্য পথ জানি না। আমরা সশস্ত্র সংগ্রামে বিশ্বাস করি না, আমরা সশস্ত্র বিপ্লবে বিশ্বাস করি না। আমরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে জনগণের অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সরকারের পতন ঘটাতে চাই। আমাদের যেটা অভিজ্ঞতা, জনগণ যখন রাস্তায় নেমে আসে, জনগণের মধ্যে যখন আলোড়ন সৃষ্টি হয়, তখন কিন্তু রাষ্ট্রের বিভিন্ন যন্ত্রগুলোর মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। তখন রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান একটা অবস্থানে চলে আসে, জনগণের পক্ষে চলে আসে। ১৯৫২ সাল থেকে আমরা এটাই দেখে আসছি। সুতরাং আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের মানুষের ন্যায়সংগত যে দাবিগুলো রয়েছে, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, এখানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা, এগুলোতে সবাই যুক্ত হবে।

প্রশ্ন :

২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে আলোচনা ছিল যে বিএনপিকে ৫০-৬০টি আসন দেওয়া হবে। এবারও বলাবলি হচ্ছে, বিএনপি নির্বাচনে যাবে, তাদের বিরোধী দলের আসনে বসানো হবে।

মির্জা ফখরুল: এটা একেবারেই ভ্রান্ত ধারণা। এ ধরনের কোনো গুঞ্জন থাকতে পারে, কিন্তু এর কোনো বাস্তবতা নেই। আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচনে যাব না। কারণ, এ সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন দেবে না, আমাদের আদায় করতে হবে। আদায় করার জন্যই তো আন্দোলন করছি। সরকার কেন দেবে, ও কী মরতে চাইবে? তবে সরকারের জন্য বাঁচার একটিই পথ, নিরাপদ প্রস্থান। যেটা আমি বলেছি যে এখনো সময় আছে বলে দেন যে আপনারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেবেন। সমস্যাগুলোর সমাধান করেন, তাহলেই হয়ে যাবে।

প্রশ্ন :

আপনি প্রায় বক্তব্যেই বলেন, বর্তমান সরকার দেশের সব সাংবিধানিক, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে দিয়েছে। এগুলো ঠিক করা হবে কীভাবে?

মির্জা ফখরুল: আমরা বলেছি, নির্বাচনের পরে আন্দোলনকারী সব দলকে নিয়ে একটা জাতীয় সরকার করব। এবং যেসব প্রতিষ্ঠানে ইতিমধ্যে যে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে, সেগুলো মেরামত করার জন্য যৌথ শাসনের মধ্য দিয়ে সেগুলো ঠিক করা হবে।

প্রশ্ন :

আপনারা চাচ্ছেন আপনাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের নিয়ে জাতীয় সরকার হবে। ভিন্ন ভাবনাটি হচ্ছে নির্বাচনের আগেই ‘জাতীয় সরকার’। যাতে প্রশাসন, নির্বাচন কমিশনসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিক করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করা যায়।

মির্জা ফখরুল: নির্বাচনের আগে জাতীয় সরকার করার প্রস্তাবটা আছে, অনেকের মধ্যেই আছে। এটাকে খুব একটা বাস্তবসম্মত মনে হয় না। নির্বাচনের আগে জাতীয় সরকারটা কীভাবে তৈরি হবে? তার তো কোনো ম্যান্ডেট থাকবে না, কোনো বৈধতা থাকবে না। আমরা সে জন্যই খুব বাস্তবভিত্তিক প্রস্তাবটা দিয়েছি যে নির্বাচনের পরে অংশগ্রহণকারী দলগুলোকে নিয়ে একটা সরকার গঠন করা এবং সেই সরকারই এই সব সমস্যার সমাধান করবে। আমরা আমাদের ভিশন-২০৩০–এ এটা বলেছি। অনেকগুলো সংস্কারের কথা বলেছি, এর মধ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতাকে একটা যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসার কথা বলেছি। আমরা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের কথা বলেছি। এ কথাগুলো তো নিঃসন্দেহে একটা রাজনৈতিক সংস্কারের কথা। অর্থনৈতিক সংস্কারের কথাও আমরা বলেছি। যাতে এই বিষয়গুলোতে অন্যান্য দলের সঙ্গে আলোচনা করে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করতে পারি।

প্রশ্ন :

পদ্মা সেতু উদ্বোধন হয়েছে। সামনে আসছে মেট্রোরেল, কর্ণফুলী ট্যানেল ও এক্সপ্রেসওয়ে। সরকারের উন্নয়নকে অস্বীকার করবেন কীভাবে?

মির্জা ফখরুল: এটা বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোনো সমস্যা না। কারণ হচ্ছে আইয়ুব খান তাঁর পতনের কয়েক দিন আগেও উন্নয়নের দশক পালন করেছেন। এরশাদ বহু উন্নয়ন করেছেন, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু জনগণের মৌলিক বিষয়গুলো যদি আপনি সমাধান করতে না পারেন, একটা হচ্ছে তার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বিষয়টি। অন্যদিকে তার মানসিক যে চাহিদা আছে, একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশে বাস করা, যে মানুষগুলো গত দুই নির্বাচনে ভোটই দিতে পারেনি, এমনকি কোনো স্থানীয় সরকারের নির্বাচনেও। এ অবস্থায় গ্রামে–গঞ্জে আওয়ামী লীগের যে প্রচণ্ড দৌরাত্ম্য—তাদের যে প্রবল দখল করার ব্যাপারটা চলছে, সেখানে সাধারণ মানুষ সরকারকে পছন্দ করে না। যতই উন্নয়ন দেন, যা কিছু কিছু দেন, আপনি যদি মানুষের মৌলিক বিষয়গুলো, তার রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান করতে না পারেন, তার অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান করতে না পারেন, শুধু উড়ালসেতু, মেট্রোরেল আর পদ্মা সেতু দিয়ে কোনো ফায়দা হবে না।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমেদ প্রশ্ন তুলেছেন, বিএনপির ফিনিশার কে?

মির্জা ফখরুল: এই প্রশ্নের উত্তরটা আমি আপনাকে দিয়েছি। উনি একজন কলামিস্ট, আপনারা তো আপনাদের চিন্তা থেকে বলবেন, লিখবেন। আমাদের বক্তব্য খুব স্পষ্ট, আমাদের চেয়ারম্যান খালেদা জিয়া এবং ওনার অবর্তমানে তারেক রহমান। ফিনিশার বলেন, স্ট্রাইকার বলেন, যা-ই বলেন—তাঁরাই আমাদের নেতা, তাঁরাই আমাদের ফিনিশার। মাঝখানে কিছু নেই।