উপদেষ্টাদের পদত্যাগের পাল্টাপাল্টি দাবি অনভিপ্রেত

বিএনপির পক্ষ থেকে দুজন উপদেষ্টা ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি এবং এনসিপির পক্ষ থেকে তিন উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি রাজনীতিতে উত্তেজনা বাড়িয়েছে। সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অভিমত দিয়েছেন এই রাজনীতিক।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নাফাইল ছবি

বর্তমান পরিস্থিতি খুবই ঘোলাটে। সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ঘোষণা নেই। কিন্তু প্রধান সেনাপতি (সেনাপ্রধান) নির্বাচনের একটা ডেডলাইন (সময়সীমা) দিয়ে দিয়েছেন। এ বিষয়ে অবশ্য এখন পর্যন্ত সরকার কিছু বলেনি।

আমি প্রথম থেকেই সরকারকে বলে আসছি যে সুশাসনের সঙ্গে রাজনীতি জড়িত। রাজনীতি বাদ দিয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা যায় না। রাজনীতিকে উপেক্ষা করে দেশ শাসন করা সম্ভব নয়। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার রাজনীতিকে উপেক্ষা করেই দেশ শাসন করতে চেয়েছে। এ কারণেই রাজনৈতিক বিতর্কগুলো সামনে চলে আসছে। এটা আসাটা খুব স্বাভাবিক।

আরও পড়ুন

তবে এটা নিষ্পত্তি করা যাবে। আমি মনে করি, সে জন্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের এখন বলিষ্ঠ ভূমিকা নেওয়া দরকার। তিনি সরাসরি বলুন। যখন সেনাবাহিনী বলতে পারে, তিনি কেন বলতে পারবেন না? জাতীয় নির্বাচনের ডেডলাইন বা রোডম্যাপ দিতে কোনো অসুবিধা থাকা উচিত নয়। রোডম্যাপটা দেওয়া হলে বিএনপির দিক থেকে বিতর্ক কমে যাবে। একই কারণে এনসিপির (জাতীয় নাগরিক পার্টি) সম্পর্কেও বিতর্ক কমে যাবে। বাকি অন্য বিতর্কগুলোও তখন এমনিতেই কমে যাওয়ার কথা।

বিএনপির পক্ষ থেকে বর্তমান সরকারের দুজন উপদেষ্টা ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি এবং এনসিপির পক্ষ থেকে তিনজন উপদেষ্টাকে ‘বিএনপিপন্থী’ হিসেবে আখ্যায়িত করে পদত্যাগ দাবি—এই বিতর্কটা অনভিপ্রেত। এর কোনো প্রয়োজন ছিল না। প্রত্যেকে যদি এভাবে কথা বলেন, তাহলে তো হবে না। তবে এ বিষয়টি মূলত রাজনৈতিক।

আরও পড়ুন

বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেনের বিষয়টি নিয়ে আদালত একটা রায় দিয়ে দিয়েছেন। নিশ্চয়ই প্রশাসন বা সবাই এটা মেনে চলবে। এই রায় কতখানি ঠিক, কতখানি বেঠিক, মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও দেওয়া হলো কি না—এই বিতর্কের আমি কোনো মানে দেখছি না। এখন যদি আর কোনো রকম সমস্যা তৈরি না হয়, আপিল না হয়, বিষয়টি এখানেই নিষ্পত্তি হয়ে গেলে ভালো।

সবার বোঝা উচিত যে এটা শুধু বিএনপির একজন নেতাকে সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে বসানোর জন্য আন্দোলন ছিল না। এই আন্দোলনের মাধ্যমে বিএনপি দেশবাসী, সরকার, সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন পক্ষকে বোঝাতে চেয়েছে যে বিএনপি এখনো বড় রাজনৈতিক দল, তাদের উপেক্ষা করা যাবে না। এটাই তারা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছে। আমার মনে হয়, এ ক্ষেত্রে তারা সফলও হয়েছে।

মাহমুদুর রহমান মান্না

সভাপতি, নাগরিক ঐক্য