বিএনপি নেতা গয়েশ্বরের কেরানীগঞ্জের বাড়িতে হামলার অভিযোগ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বাড়িতে হামলার অভিযোগে স্থানীয় বিএনপির সংবাদ সম্মেলন। মঙ্গলবার বিকেলে কেরানীগঞ্জে জিনজিরা বাসরোড এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছে। তাঁর বাড়িটি ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কোন্ডা ইউনিয়নের মির্জাপুর এলাকায়। গতকাল সোমবার রাত আটটার দিকে বাড়িটিতে হামলা করা হয় বলে স্থানীয় বিএনপি সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে কেরানীগঞ্জে জিনজিরা বাসরোড এলাকায় বিএনপির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোজাদ্দেদ আলী বাবু। তিনি বলেন, গয়েশ্বরের বাড়িতে হামলার নেতৃত্বে ছিলেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কেরানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ।

হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে শাহীন আহমেদ বলেন, সোমবার তিনি কেরানীগঞ্জে ছিলেন না। ব্যক্তিগত কাজে ঢাকার বাইরে ছিলেন। বিএনপির নেতা গয়েশ্বরের বাড়িতে কে বা কারা হামলা করেছে, এ বিষয়ে তিনি অবগত নন। রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য বিএনপির নেতারা ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বলে দাবি শাহীন আহমেদের।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দ্রব্যমূল্য ও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পাঁচটি ইউনিয়নের সাতটি সাংগঠনিক এলাকায় বিক্ষোভ কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেয় স্থানীয় বিএনপি। একই দিন সন্ধ্যায় কোন্ডা ইউনিয়নে শান্তিপূর্ণ মশালমিছিল হয়। এতে নেতৃত্ব দেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি নিপুণ রায় চৌধুরী। মশালমিছিল শেষে দলের নেতা-কর্মীরা এলাকা ত্যাগ করেন। এ সময় সময় শাহীন আহমেদের নেতৃত্বে যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বাড়িতে অতর্কিতে হামলা চালান।

ইটপাটকেল ছুড়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বাড়ির দরজা ও জানালা ভাঙচুর করা হয় জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পরে ওই এলাকা থেকে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মী মুন্না, বিপ্লব, সজীব ও শিকদারকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় পুলিশ। সেই সঙ্গে মিথ্যা মামলার নাটক সাজানোর জন্য আওয়ামী লীগের লোকজন একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিজেরাই পুড়িয়ে দেন। এরপর ৮৪ জন বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের মুক্তি দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বাড়িতে হামলার নিন্দা জানিয়ে বিএনপির ঢাকা জেলার সহসভাপতি নাজিমউদ্দিন মাস্টার বলেন, ‘আমাদের নেতা বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় একজন প্রথিতযশা রাজনীতিবিদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি এ দেশকে স্বাধীন করতে শত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন। একটা স্বাধীন দেশে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে এমন হামলা সব বর্বরতাকে হার মানায়।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঈশা খান, আশ্রাফ আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক মোশারফ হোসেন, জিনজিরা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ওমর শাহনেওয়াজ প্রমুখ।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহজামান বলেন, বিএনপির নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বাড়িতে হামলার ঘটনা তাঁর জানা নেই। এ ছাড়া তাঁর বাসার কাছ থেকে গত সোমবার রাতে পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করেনি। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির নেতা-কর্মীরা পুলিশের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য দিয়েছেন।