ভোটের বাকি আর চার দিন। আপনারা ভোট হতে দেবেন না বলেছিলেন। শেষ সময়ে আপনারা কী করতে চাইছেন?
সেলিমা রহমান: আমরা তো লাঠি-তলোয়ার নিয়ে আসিনি। আমাদের কাছে অস্ত্র নেই। আমরা যুদ্ধ করতেও নামিনি। জনগণের ভোটাধিকার আদায়ের জন্য শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। জনগণ এই তামাশার নির্বাচনের সঙ্গে নেই। আমরা আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাব।
আওয়ামী লীগ বলছে ভোট উৎসবমুখর হবে। আপনারা কী দেখছেন?
সেলিমা রহমান: নির্বাচন তো হয়েই গেছে। এখন ঘোষণা বাকি। কারা কারা জিতবে, তা ঠিক হয়ে গেছে। ৭ জানুয়ারি ঘোষণা করা হবে। তামাশার নির্বাচনে ভোটার দেখানোর জন্য ঘরে ঘরে পিস্তল নিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে যে ভোটকেন্দ্রে না গেলে ক্ষতি হবে। সামাজিক সুরক্ষার ভাতা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ভোটার আনার চেষ্টা করছে। এতেই তো প্রমাণ হয়ে গেছে, জনগণ এই নির্বাচনের সঙ্গে নেই।
৭ জানুয়ারি তামাশার নির্বাচন বলছেন। কিন্তু আপনাদের এই ব্যাখ্যা কতটা মানুষের মধ্যে প্রভাব ফেলেছে?
সেলিমা রহমান: নির্বাচন হয় জনগণের মধ্যে। কিন্তু এবারের নির্বাচন হচ্ছে সুবিধাভোগী কিছু দলের মধ্যে ভাগাভাগি করে। এই ভাগাভাগি হচ্ছে টাকাপয়সার, আসনের। এই সুবিধাভোগীরা ১৫ বছর ধরে দেশের ব্যাংক লুট করছে। কোটি কোটি টাকা পাচার করেছে। দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। এরা তাদের লুটপাট, অপশাসন, জবরদস্তির শাসন অব্যাহত রাখার জন্য এক হয়েছে। অন্যদিকে সাধারণ মানুষ যাঁরা দ্রব্যমূল্যের চাপে নিষ্পেষিত, ভোটাধিকার হারিয়েছেন। এই সাধারণ মানুষ বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতৃত্বে সংগঠিত হয়েছে। তারা এই লুটপাট ও অপশাসনের পরিবর্তন আনবেই।
আপনাদের এই ব্যাখ্যা (ন্যারেটিভ) দেশ-বিদেশে কতটা প্রভাব ফেলতে পেরেছে বলে মনে করেন?
সেলিমা রহমান: এ দেশে গণতন্ত্র নেই। গুম, খুন ও বিরোধীদের দমনপীড়ন চলছে। গভীর রাত পর্যন্ত বিচারকাজ চালিয়ে মিথ্যা মামলায় বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের সাজা দেওয়া হচ্ছে। এই দেশে মানবাধিকার বলতে কিছু নেই। এটা এখন সারা বিশ্ব জানে। আর বাংলাদেশের মানুষ তো ভুক্তভোগী। সুতরাং বিএনপি যে আন্দোলন করছে, যে কথাগুলো বলছে, তা মানুষের মনের কথা।
আপনারা বলছেন ২০ হাজারের বেশি নেতা-কর্মী কারাগারে। সরকার ও আওয়ামী লীগ বলছে সংখ্যাটি ১০ হাজারের মতো। আসলে বিষয়টি কী?
সেলিমা রহমান: আওয়ামী লীগ দানবীয় কায়দায় দেশ শাসন করছে। তারা পুরোপুরি মিথ্যার ওপর আছে। বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মী, এমনকি নারী ও আইনজীবী কেউ গ্রেপ্তার থেকে রেহাই পায়নি। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত গ্রেপ্তার অভিযান চলছে। এটা তো লুকানোর কিছু নেই। সরকার না করলেই তো সত্য বিষয় মিথ্যা হয়ে যাবে না।