তারেক রহমানকে স্বাগত জানিয়ে কী বললেন নাহিদ, আখতার, হাসনাত ও সারজিস

(উপরে বাঁ থেকে) নাহিদ ইসলাম ও আখতার হোসেন, (নিচে বাঁ থেকে) সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ

দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফিরে আসা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে স্বাগত জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম। তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে তাঁরা বাংলাদেশের ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক সংগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হিসেবে দেখছেন।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকায় ফিরেছেন তারেক রহমান। এরপর পৃথক পৃথক ফেসবুক পোস্টে তাঁকে স্বাগত জানান জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির ছাত্রনেতৃত্বের রাজনৈতিক দল এনসিপির শীর্ষ নেতারা। পোস্টে তাঁরা তারেক রহমানের দীর্ঘ নির্বাসিত জীবন ও নির্যাতন–নিপীড়নের শিকার হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।

নাহিদ ইসলাম

আজ বিকেলে এক ফেসবুক পোস্টে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম লিখেছেন, তারেক রহমানকে স্বদেশে স্বাগত জানাই। দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে তাঁর অংশগ্রহণ ফলপ্রসূ হোক।

নাহিদ লেখেন, ‘দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফিরেছেন জনাব তারেক রহমান। একজন বাংলাদেশি নাগরিক ও রাজনৈতিক নেতার নিজ ভূমিতে ফেরার এ অধিকারটি পুনরুদ্ধার হওয়া আমাদের গণতান্ত্রিক লড়াইয়েরই একটি ইতিবাচক প্রতিফলন। তারেক রহমান এবং তাঁর পরিবার রাজনৈতিক ভিন্নমতের কারণে রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন এবং তাঁকে দীর্ঘ সময় নির্বাসিত থাকতে হয়েছে। হাজারো শহীদের রক্তদানের মধ্য দিয়ে গণ–অভ্যুত্থানের ফলে এমন প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে যেখানে তিনি ও তাঁর পরিবার দেশে ফিরে আসতে পেরেছেন।’

তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন দেশের বহুদলীয় গণতন্ত্রের চর্চাকে আরও সুসংহত করবে বলে নিজের বিশ্বাসের কথা উল্লেখ করে নাহিদ আরও লিখেছেন, ‘নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় সহাবস্থান এবং সুস্থ প্রতিযোগিতার সংস্কৃতি গড়ে তোলাই এখন আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ।’

আখতার হোসেন

এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন সকালে তারেক রহমানকে স্বাগত জানিয়ে পোস্ট দেন। সেই পোস্টের শুরুতেই তিনি লিখেছেন, ‘স্বাগতম, তারেক রহমান!’ এরপর আখতার লেখেন, ‘দীর্ঘ ১৭ বছর জুলুমের শিকার হয়ে পরবাসী থেকে অবশেষে আজ দেশে ফিরেছেন। ফের বাংলাদেশের সম্মুখ রাজনীতিতে আপনাকে স্বাগতম। আপনি, আপনার পরিবার ফ্যাসিবাদের কালে নিদারুণ কষ্ট, জুলুম, নিপীড়ন, লাঞ্ছনা, নিগ্রহ সত্ত্বেও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক অটুট রেখেছেন। একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে এটা গর্বের, সম্মানের।’

আজকের এই প্রত্যাবর্তনের কারিগর জুলাইয়ের শহীদেরা—এ কথা উল্লেখ করে আখতার হোসেন লিখেছেন, ‘আমাদের সেই শহীদেরা নতুন বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষায় জীবন দিয়েছেন। নতুন এক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে আপনার আজকের প্রত্যাবর্তন। প্রত্যাশা করি, জুলাইয়ের সেই কাঙ্ক্ষিত নতুন দেশ, নতুন রাজনীতি আর নতুন স্বপ্নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আপনার পরবর্তী পদক্ষেপ পরিচালিত হবে নতুন শপথ পূরণের পথে। শুভকামনা।’

হাসনাত আবদুল্লাহ

তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ব্যক্তিগত কিংবা সাংগঠনিক অর্জনে সীমাবদ্ধ করতে নয়, বরং বাংলাদেশের ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক সংগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হিসেবেই মূল্যায়ন করতে চান এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। আজ সন্ধ্যায় এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন প্রমাণ করে একজন বাংলাদেশি নাগরিক ও রাজনৈতিক নেতার নিজ ভূমিতে ফেরার অধিকারকে রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নের মাধ্যমেও ঠেকিয়ে রাখা যায় না। স্বৈরাচার যত শক্তিশালীই হোক, জনগণের রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তিকে চিরতরে দমিয়ে রাখতে পারে না।’

হাসনাত আবদুল্লাহ লিখেছেন, ‘স্বদেশে প্রত্যাবর্তনকারী জনাব তারেক রহমানকে স্বাগত জানাই। বেগম খালেদা জিয়া যেন দ্রুতই সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের অসম্পূর্ণ লড়াই পূর্ণ করার দিকনির্দেশনা দিতে পারেন, সেই দোয়া করি।’

সারজিস আলম

আজ সকালে এক ফেসবুক পোস্টে তারেক রহমানকে স্বাগত জানান এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমও। তিনি লিখেছেন, ‘জনাব তারেক রহমান প্রায় দেড় যুগ পর বাংলাদেশে ফিরছেন। স্বৈরাচারের পতন, পরিবর্তিত পরিস্থিতি, নানা উত্থান-পতন, রাজনৈতিক ক্রমধারার এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে, গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে তিনি আজ বাংলাদেশে আসছেন। আমরা চব্বিশের অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশে তাঁকে স্বাগত জানাই।’