বিএনপির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগের ঘোষণা

নির্বাচিত ৭ জন সংসদ সদস্যই পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন

একাদশ জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন বিরোধীদল বিএনপির সংসদ সদস্যরা। দলটি থেকে নির্বাচিত ৭ জন সংসদ সদস্যই পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। আজ রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে সংসদ সদস্যরা পদত্যাগের ঘোষণা দেন।    

সমাবেশে বগুড়া–৬ আসন থেকে নির্বাচিত বিএনপির সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ প্রথম পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সাতজন এই বিশাল জনসমুদ্রকে সাক্ষী রেখে আজ পদত্যাগের ঘোষণা করতে চাই। আপনাদের সাক্ষী রেখে পদত্যাগপত্রের কয়েকটি লাইন আমি বলতে চাই। বর্তমানে বাংলাদেশে চরম স্বৈরশাসন চলছে। বর্তমান সরকরের গণতন্ত্র-গণবিরোধী কার্যকলাপে বাক্‌স্বাধীনতা, বিরোধী দলের ওপর দমন–পীড়ন, গণগ্রেপ্তার, গুম, হত্যা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ, ভোটাধিকার হরণের প্রতিবাদে সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করে এই সংসদ বাতিলের গণদাবির সঙ্গে একমত পোষণ করছি।’

এরপর অন্য সংসদ সদস্যরা একে একে পদত্যাগের কথা জানান। দেশের বাইরে থাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের মো. হারুনুর রশীদের পক্ষে গোলাম মোহাম্মদ পদত্যাগের কথা জানান।

বিএনপির চার সংসদ সদস্যদের শপথ
ফাইল ছবি

একাদশ জাতীয় সংসদে বিএনপির সংসদ সদস্যরা হলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের মো. আমিনুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের মো. হারুনুর রশীদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের আবদুস সাত্তার, বগুড়া-৪ আসনের মো. মোশাররফ হোসেন, বগুড়া–৬ গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ এবং ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের জাহিদুর রহমান। বিএনপির সংরক্ষিত সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা।

আরও পড়ুন

আগামীকাল জাতীয় সংসদে পদত্যাগপত্র পাঠাবেন বিএনপির সংসদ সদস্যরা

বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানার শপথ
ফাইল ছবি

সমাবেশে রুমিন ফারহানা বলেন, আগামীকাল (রোববার) তারা জাতীয় সংসদে পদত্যাগপত্র পাঠাবেন।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ছয়জন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বিএনপির সংসদ সদস্যের শপথ গ্রহণ নিয়ে টানাপোড়েন দেখা দেয়। বগুড়া–৬ আসন থেকে নির্বাচিত মির্জা ফখরুল ছাড়া বাকি পাঁচজনই শপথ নেন। নির্ধারিত সময়ে শপথ না নেওয়ায় ফখরুলের আসনটি শূন্য ঘোষণা করে আবার নির্বাচন হয়। আর তাতে জয়ী হন বিএনপির প্রার্থী জিএম সিরাজ।

রুমিন ফারহানা যা বললেন

পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে সংসদ সদস্য রুমির ফারহানা বলেন, আওয়ামী লীগ বলে কোনো দল বাংলাদেশে নেই। তারা আছে পুলিশ, প্রশাসন ও আমলা দিয়ে। সাধারণ মানুষ তাদের লাল কার্ড দেখিয়েছে বহু আগে।

নিজের পদত্যাগের কারণ তুলে ধরে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘সংসদে যতটুকু জায়গা আমাদের আছে ততটুকু আমরা কাজে লাগাব। সেই চেষ্টা আমরা করেছি। আপনারা দেখেছেন কীভাবে আমরা দাঁড়ালে মাইক বন্ধ করে দিয়েছে, কথা বলতে দেয়নি। যখন আমি সাধারণ মানুষের কথা বলতে চেয়েছি, গণমানুষের কথা বলতে চেয়েছি আমাকে থামিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই সংসদে থাকা আর না থাকার মধ্যে কোনো পার্থক্য নাই। এই কারণে দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকারের গুম, খুন বিচারবহির্ভূত হত্যা, বিরোধী দলের ওপর নির্যাতন, প্রকাশ্য লুটপাট সবকিছুর প্রতিবাদে আজকে আমি সংসদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

রুমিন ফারহানা বলেন, ‘আমাদের পদত্যাগপত্র আমরা অলরেডি ইমেইলে পাঠিয়ে দিয়েছি। আজ শনিবার ছুটির দিন। কাল রোববার সই করা পদত্যাগপত্র হাতে হাতে পৌঁছে দেব।’