জামায়াত ও ধর্মীয় বিষয়ে হেফাজতের আমিরের বক্তব্য ব্যক্তিগত: মামুনুল হক

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সংবাদ সম্মেলন হয়। আজ সোমবার দুপুরেছবি: প্রথম আলো

জামায়াতে ইসলামীকে ভোট না দেওয়ার আহ্বানসহ বিভিন্ন ধর্মীয় বিষয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর বক্তব্য তাঁর ব্যক্তিগত বলে জানিয়েছেন মাওলানা মামুনুল হক।

কোনো সাংগঠনিক বক্তব্য থাকলে সেটি সাংগঠনিক ব্যানার থেকেই আসবে বলে জানান হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের সেক্রেটারি মামুনুল।

আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন মামুনুল হক। সংবাদ সম্মেলনটি আয়োজন করে হেফাজতে ইসলাম।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত শিক্ষক নিয়োগ বাতিল ও ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের নতুন বিধিমালা প্রণয়ন, পবিত্র কোরআন অবমাননার বিচার, কাঠামোগত ইসলামবিদ্বেষ ও ধর্ম অবমাননা রোধে সর্বোচ্চ কঠোর আইন প্রণয়ন এবং ৫ মে–কে ‘শাপলা গণহত্যা দিবস’ ঘোষণার দাবিতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

৩ অক্টোবর চট্টগ্রামে শানে রেসালত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের সমালোচনা করেন শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। তিনি আগামী সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীকে ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানান।

আজকের সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে মামুনুল হকের কাছে সাংবাদিকেরা হেফাজতের অবস্থান জানতে চান। জবাবে মামুনুল হক বলেন, শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী শুধু হেফাজতে ইসলামের আমির নন, তিনি দেশের বর্ষীয়ান ও শীর্ষ একজন আলেম। আলেমদের মুরব্বি হিসেবে তিনি ধর্মীয় দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকেন। বিভিন্ন ইসলামিক বিষয়ে তাঁর পক্ষ থেকে যে মতামত ও বক্তব্য আসে, সেসব খুবই প্রয়োজনীয়। ইসলামবিষয়ক কোনো বিভ্রান্তি নিরসন অথবা ভুল মতবাদের খণ্ডন করে দেওয়া বক্তব্য শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর ব্যক্তিগত।

মামুনুল হক আরও বলেন, হেফাজতে ইসলাম সরাসরি কখনোই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বা রাজনৈতিক তৎপরতার সঙ্গে জড়িত নয়; বিশেষ করে দলীয় রাজনীতির সঙ্গে হেফাজতের কোনো সাংগঠনিক সম্পৃক্ততা নেই। সে হিসেবে নির্বাচনী তৎপরতা, কোনো জোট বা অ্যালায়েন্স করা হেফাজতের মৌলিক নীতিমালার পরিপন্থী। সেটি করার সুযোগ নেই।

সংবাদ সম্মেলনে মামুনুল হক বলেন, আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে মাজারে হামলা বা আক্রমণ করাকে হেফাজত সমর্থন করে না।

হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব সাজিদুর রহমান বলেন, ‘কোনো অভিভাবক তার সন্তানকে নাচগান শেখানোর জন্য স্কুলে ভর্তি করে না। তাই গানবাজনার শিক্ষক নিয়োগের আইন প্রত্যাহার করতে হবে। স্কুলগুলোয় ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে।’

এর আগে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক ইসলামাবাদী।

হেফাজতে ইসলামের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, কঠোর আইন না থাকার সুযোগে একের পর এক ধর্ম অবমাননার মাধ্যমে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতীয় আধিপত্যবাদ অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির সুযোগ পাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।