যাঁদের গলায় বড়শি লাগানো, তাঁরা কথা বলবেন না

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকীফাইল ছবি

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বলেছেন, যাঁদের গলায় বড়শি লাগানো, তাঁরা কথা বলবেন না। তিনি নিজেও ৬০ বছর বলেননি। এখন তাঁর বড়শি খুলে নেওয়া হয়েছে। তাই তিনি যতক্ষণ আছেন, কথা বলার চেষ্টা করবেন।

আজ রোববার জাতীয় সংসদে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) (সংশোধন) বিল-২০২৪ উত্থাপনের আপত্তি জানিয়ে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সাবেক (বহিষ্কৃত) সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারের ধারণা নস্যাৎ করাই শুধু নয়, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাটি কোনো দিনই কার্যকর করা হয়নি, করতে দেওয়া হয়নি। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যতই গণতন্ত্রের কথা বলি, চেতনা ও চৈতন্যে জাতিগতভাবে আমরা এখনো গণতান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন হতে পারিনি।’
লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘আমার মাঝেমধ্যে মনে হয়, আমরা বঙ্গবন্ধুকে শুধু জিহ্বা থেকে উচ্চারণ করি। অন্তরে অন্য কিছু বিবেচনা করি।’

স্বতন্ত্র এই সংসদ সদস্য বলেন, আইন সংসদ সদস্যরা রচনা করেন না। আমলাদের মস্তিষ্ক থেকে যে আইন প্রণীত হয়, তা কখনো জনস্বার্থে আসতে পারে না।

লতিফ সিদ্দিকীর বক্তব্যের একপর্যায় সংসদের অধিবেশন কক্ষে সভাপতির দায়িত্বে থাকা ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক তাঁকে থাকিয়ে দিয়ে বিলের ওপর আলোচনা করতে বলেন। তখন লতিফ সিদ্দকী বলেন, গণতন্ত্রের কথা বলতে গেলে এই সংসদের সময়ের অভাব হয়। কিন্তু হাজার কোটি টাকা ঋণ খেলাপিতে অর্থের অপচয় হয় না। কিন্তু কোনো সদস্য একটু সময় বেশি চাইলেই...অভাব হয়।

লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘এই সংসদে জাতির চেতনার কথা, জাতির স্বার্থের কথা, জাতির ভবিষ্যতের কথা আলোচনা হবে। সেখানে যে বলতে পারে, তাকে বলতে দিন। যাদের গলায় বড়শি লাগানো আছে, তারা কথা বলবে না। আমিও বলিনি। ৬০ বছর আমি বলিনি। আজকে আমার গলা থেকে আপনারাই বড়শিটা খুলে নিয়েছেন। তাই আমি যতক্ষণ আছি, আপনি যতই বাধা দেন আমি কথা বলতে চেষ্টা করব।’

বক্তব্যের একপর্যায়ে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘মাননীয় স্পিকার বসে পড়ব?’ এ সময় স্পিকার কোনো উত্তর না দিলে তিনি আবার বলে ওঠেন, ‘আপনি নীরব হয়ে গেলেন, আমিও নীরব হয়ে যাই। আমি কিন্তু ওই চেয়ারকে (স্পিকার) সম্মান করি।’

এ সময় ডেপুটি স্পিকার লতিফ সিদ্দিকীকে বসতে বললে তিনি ‘আলহামদুল্লিাহ’ বলে বসে যান।

আবদুল লতিফ সিদ্দিকী পবিত্র হজ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে ২০১৪ সালে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েন। দশম সংসদে তিনি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী ছিলেন। পরে দল থেকেও তিনি বহিষ্কৃত হন। গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে টাঙ্গাইল-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।