ভোটের আগে বিএনপিকে মাঠছাড়া করার ষড়যন্ত্রে সরকার: মির্জা ফখরুল

রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ছবি: সংগৃহীত

আগামী সংসদ নির্বাচন থেকে বিএনপিকে সরিয়ে দিতে সরকার ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, বিএনপির নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে স্থগিত থাকা মামলাগুলো আবারও সচল করা হচ্ছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। উদ্দেশ্য একটাই—নির্বাচনের আগে বিএনপিকে মাঠছাড়া করা।

রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি বিভিন্ন কৌশলে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর সরকারের জুলুম-নির্যাতন বেড়েই চলেছে।

বিএনপিকে মাঠ থেকে সরিয়ে দিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিচার বিভাগকে ব্যবহার করার অভিযোগ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, খুন, হত্যা ও মিথ্যা মামলায় নাম দিয়ে নেতা-কর্মীদের কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। আওয়ামী লীগের লক্ষ্য একটাই, আবারও বিনা ভোটে জোর করে কারচুপি করে ক্ষমতা দখল করা।

এর আগে লিখিত বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব বলেন, সম্প্রতি নরসিংদীতে চক্রান্তমূলক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য খায়রুল কবির এবং তাঁর স্ত্রী বিএনপির স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরীন সুলতানাসহ প্রায় ৫০ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা হত্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। খায়রুল কবিরের বাসভবন ও বিএনপি কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়েছে। এটা কোনো সাধারণ ঘটনা নয়।

বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুরোনো মামলাগুলো আবার সচল করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ছবি: সংগৃহীত

মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রত্যক্ষ যোগসাজশে কিছু সন্ত্রাসী দিয়ে নরসিংদীতে এই হত্যাকাণ্ড এবং পরবর্তী সময়ে অগ্নিসংযোগ ঘটানো হয়েছে। এগুলো খায়রুল কবিরসহ বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও কাল্পনিক মামলা, চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনকে প্রতিহত করার হীন প্রচেষ্টা বলে দাবি করেন তিনি।

গতকাল বুধবার চট্টগ্রামে ‘তারুণ্যের সমাবেশকে’ কেন্দ্র করে নগরের চকবাজার এলাকায় ছাত্রলীগের সঙ্গে যুবদলের নেতা–কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। এরপর নগরের জামালখান এলাকায় বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের আলোকচিত্র—ইতিহাসসংবলিত ম্যুরাল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।

মির্জা ফখরুল বলেন, সমাবেশ থেকে ফিরে যাওয়ার সময় বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা হয়। তারা নিজেরাই ভাঙচুর করে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। যুবদলের পাঁচজন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি করেন বিএনপির মহাসচিব।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান, নরসিংদী জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মঞ্জুর এলাহী প্রমুখ।