কোন ইউনিয়ন, কোন দেশ বিবৃতি দিল, তাতে কিছু আসে যায় না: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের
ফাইল ছবি

কোনো দেশের বিবৃতিতে কিছু আসে যায় না বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘কোন ইউনিয়ন, কোন দেশ বিবৃতি দিল, তাতে আমাদের কিছু আসে যায় না। আমার দেশের আইনে, আমার দেশের অপরাধীকে আমি বিচার করতে পারব না, এ কোন ধরনের গণতন্ত্র? কোথা থেকে এসেছে এই আবেগ?’

আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। ঘটনাবহুল ৭ নভেম্বর উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। আওয়ামী লীগ ৭ নভেম্বরকে ‘মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করে।

সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমার দেশের অপরাধী, খুনি, খুনের বিচার করতে পারব না, তাকে জেলে পাঠাতে পারব না? আদালত আছে। সে নিরাপদ হলে আদালত থেকে মুক্তি নেবে। আমাদের স্বাধীন বিচারব্যবস্থা আছে।’

এর আগে গতকাল সোমবার ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেওয়া এক বিবৃতি সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, তাদের তথ্য-উপাত্তের ঘাটতি আছে। ইইউ ওই বিবৃতিতে বলেছিল, বিরোধীদের আট হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় উদ্বেগও জানিয়েছিল ইইউ।

নিরীহ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হন, সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। অপরাধী ছাড়া কোনো নিরীহ লোককে যাতে হয়রানি করা না হয়। এতে বদনাম হয়, এই বদনাম সরকার নেবে কেন?’

এবার ৭ নভেম্বরে বিএনপির কর্মসূচি স্থগিত রাখা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটি বিএনপির জাতীয় দিবস। যে দল নিজেদের জাতীয় দিবসের কর্মসূচি স্থগিত করে দেয়, তাদের মতো ভীরু, কাপুরুষদের রাজনীতি করার দরকার নেই। নিজ দলের জাতীয় দিবস পালন করতেই যাদের এত ভয়, তারা নাকি আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করবে। বিএনপি নিজেরাই নিজেদের নিশ্চিহ্ন করতে যথেষ্ট বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিএনপির ‘পতন হয়ে গেছে’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা ২৮ তারিখ সরকার পতন করতে চেয়েছিল। আর সেদিনই নিজেদের পতন হয়ে গেল। অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে হত্যা, খুন ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি চালু করেছিলেন জিয়াউর রহমান। তাঁর উত্তরাধিকার খালেদা জিয়া, তারেক রহমান আগুন–সন্ত্রাসের সূচনা করেছে।

আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, যারা আগুন–সন্ত্রাস করে, তাদের ধরে আগুনে পোড়াতে হবে। ধরে ধরে পিটুনি দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে হবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি বলেন, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা বজায় আছে বলেই দেশের প্রত্যেক মানুষ খেতে পায়, সবার ঘর আছে, সবার সন্তান স্কুলে যায়, বছরের শুরুতে নতুন বই পায়।

বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, যারা মানুষ খুন করে, তাদের অবস্থা এমনই হয়। সন্ধ্যার পর সারা দেশে কয়েকটি গাড়ি পুড়িয়ে অবরোধ করে। আর আইএসের মতো ভিডিও বার্তায় কর্মসূচি ঘোষণা করে।

সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীরসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরের নেতারা। সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী।

৭ নভেম্বর উপলক্ষে এই আলোচনা সভা ডাকা হলেও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর উপস্থিতিতে এটি মহাসমাবেশে পরিণত হয়। সমাবেশস্থলে আসা নেতা-কর্মীদের মিছিলের কারণে গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের আশপাশের সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়।