হামলা চালিয়ে বন্দর রক্ষার আন্দোলন থেকে বামপন্থীদের সরানো যাবে না

বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার নেতা–কর্মীরা পুলিশি হামলার প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মিছিল করেন। ঢাকা, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ছবি: আয়োজকদের সৌজন্যে

লালদিয়া টার্মিনাল ও পানগাঁও নৌ টার্মিনাল নিয়ে বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে করা ইজারা চুক্তি অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার নেতারা। তাঁরা বলেছেন, পুলিশ দিয়ে হামলা চালিয়ে নেতা–কর্মীদের আহত করে বন্দর রক্ষার আন্দোলন থেকে বামপন্থীদের সরানো যাবে না। গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পুলিশি হস্তক্ষেপ আইন করে নিষিদ্ধ ও হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

আজ শুক্রবার রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার নেতারা। সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে সম্পাদিত লালদিয়া-পানগাঁও টার্মিনাল ইজারা চুক্তি বাতিল এবং নিউমুরিং ও পতেঙ্গা টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানিকে ইজারা দেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধের দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার যমুনা অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বাম গণতান্ত্রিক জোট, ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা, বাংলাদেশ জাসদ ও জাতীয় গণফ্রন্ট। মিছিলটি রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে এলে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধাক্কাধাক্কি হয়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের লাঠিপেটা করে পুলিশ। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী আহত হন।

পুলিশি হামলার প্রতিবাদে আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেন বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার নেতা–কর্মীরা।

সমাবেশে নেতারা বলেন, দেশ ও জাতিকে অন্ধকারে রেখে নিউমুরিং, মোংলা, পতেঙ্গা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে। বর্তমান অনির্বাচিত অন্তর্বর্তী সরকারের এ ধরনের চুক্তি করার কোনো এখতিয়ার নেই। এই সরকারের উচিত গণ–অভ্যুত্থানের ম্যান্ডেট অনুযায়ী দ্রুত নির্বাচন দিয়ে সরে যাওয়া।

প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’ অভিমুখী মিছিলে পুলিশি হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে নেতারা বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারও বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের মতোই সভা-সমাবেশ, মিছিল করার নাগরিক গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করছে।

নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, পুলিশ দিয়ে হামলা চালিয়ে নেতা–কর্মীদের আহত করে বন্দর রক্ষার আন্দোলন থেকে বামপন্থীদের সরানো যাবে না। গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পুলিশি হস্তক্ষেপ আইন করে নিষিদ্ধ করা এবং হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা। সমাবেশ থেকে বন্দর রক্ষার চলমান আন্দোলনে দেশবাসীকে অংশগ্রহণেরও আহ্বান জানানো হয়।

বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন সিপিবির সভাপতি সাজ্জাদ জহির চন্দন, ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার সমন্বয়ক শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদের (মার্ক্সবাদী) সীমা দত্ত, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের শামীম ইমাম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আবদুল আলী প্রমুখ।