আজিজের বিরুদ্ধে ভিসা নীতি নয়, অন্য আইনে ব্যবস্থা নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরছবি: প্রথম আলো

সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে ভিসা নীতি প্রয়োগ হয়নি বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আজিজের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র অন্য একটি আইনে ব্যবস্থা নিয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যেটা বলেছে, বাংলাদেশ মিশনকে জেনারেল আজিজের বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। জেনারেল আজিজের বিষয়ে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সেটা ভিসা নীতির প্রয়োগ নয়, এটি অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন আইনের প্রয়োগ। সেখানে অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন একটা আইন আছে, সেটা প্রয়োগ করা হয়েছে। এটা নিয়ে আমি আর কিছু বলব না। এটা নিয়ে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও কথা বলেছেন। আমরা এতটুকুই জানি, এটুকুই বললাম।’

মূলত আজ অনুষ্ঠিত ১৫৬টি উপজেলা পরিষদের ভোট নিয়ে কথা বলতে সংবাদ সম্মেলনটি ডাকা হয়েছিল। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক নেতা ও নামীদামি বুদ্ধিজীবীদের অপপ্রচারের কারণে উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে।

নির্বাচন প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে ভোটারের অংশগ্রহণ ৩০ শতাংশের বেশি। আগামীকাল প্রকৃত ভোটের হার জানা যাবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতিবেশী দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ হয় এটা বলা যাবে না। কিছু সংঘাত ও বিরোধ হয়। পশ্চিমবঙ্গের গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছিল।

ভোটের সমালোচনা করা ব্যক্তিদের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আজকে যাঁরা বলছেন ভোটাররা ভোট দিতে ভুলে গেছেন, কেন্দ্রে আসেননি। এটা তো স্থানীয় সরকার নির্বাচন। জাতীয় নির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতি ছিল ৪২ শতাংশের বেশি। তাহলে আপনারা (বিএনপি) যে নির্বাচনটি করেছেন, ১৫ ফেব্রুয়ারির (১৯৯৬) নির্বাচনে বিবিসি বলেছিল ৫ শতাংশ টার্নআউট হয়েছে। তখন সরকারিভাবে নির্বাচন কমিশন ২১ শতাংশ বলেছিল। আপনাদের জাতীয় নির্বাচনে যদি ২১ শতাংশই ধরি, তাহলে সেই তুলনায় স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ৩০ শতাংশ প্লাস, এটা কম কিসে?’

ভোটার উপস্থিতি খুব ভালো নয় জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপিসহ তাদের সমমনারা অবিরাম মিথ্যাচার করছে। মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। দেশের একধরনের বুদ্ধিজীবী আছেন তাদের অপপ্রচার তো আছেই। টিআইবির অপপ্রচার আছে। আরও কিছু নামীদামি বুদ্ধিজীবী আছেন, তাঁরাও মিথ্যাচার করেছেন, মানুষের আগ্রহ নষ্ট করার চেষ্টা করেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘তারপরও উপস্থিতি যেটাই হয়েছে, আমি খুব ভালো বলব না। তবে বলব, মোটামুটি সন্তোষজনক। তাই এ নিয়ে খুব বেশি কথা বলার প্রয়োজন নেই। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে। এ জন্য নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ। রক্তপাত ছাড়া বিএনপির আমলে কোনো স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়নি।’

ভারতে নিখোঁজ ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। কোনটা সত্য তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। সত্য বেরিয়ে আসবে।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম; সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন ও সুজিত রায় নন্দী; সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।