সংসদ নির্বাচনে ৩৩% নারী প্রার্থীর বাধ্যবাধকতার দাবি নারীর রাজনৈতিক অধিকার ফোরামের

বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিং করেন নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্য মাহীন সুলতানছবি: সংগৃহীত

আগামী সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো থেকে ৩৩ শতাংশ নারী প্রার্থীর মনোনয়নে বাধ্যবাধকতা আরোপসহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছে ‘নারীর রাজনৈতিক অধিকার ফোরাম’। পাশাপাশি নির্বাচনি আইন সংস্কারের দাবি জানান ফোরামের প্রতিনিধিরা।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীনের সঙ্গে বৈঠকে এসব দাবি তুলে ধরে বিভিন্ন নারী সংগঠনের এই প্ল্যাটফর্ম।

বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ, তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ও নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

আর ফোরামের পক্ষে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্য মাহীন সুলতানের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে ছিলেন নারী পক্ষের নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাদাফ সায, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত ও নারী সংহতির সভাপ্রধান শ্যামলী শীল।

বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে মাহীন সুলতান সাংবাদিকেদের জানান, আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। অনেক বিষয়ে তারা ভালো ‘আউটকাম’ পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘নারী ভোটার, নারী প্রার্থী ও নারী নাগরিকদের সমান মর্যাদা নিশ্চিতকরণে আমাদের দাবি ও প্রত্যাশা তুলে ধরেছি। নির্বাচন কমিশনও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।’

রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে ৩৩ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়নে বাধ্যবাধকতা আরোপের বিষয়ে মাহীন সুলতান বলেন, ‘আমরা সব দল থেকে ৩৩ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন চাই, যাতে নির্বাচনে যথাযথ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা যায়।’

নারীর রাজনৈতিক অধিকার ফোরামের পক্ষ থেকে নারী প্রার্থীর বাধ্যতামূলক মনোনয়ন, দলীয় কাঠামোতে নারীর নেতৃত্ব,অনলাইন ও অফলাইনে হয়রানি প্রতিরোধে নীতি ও নির্দেশনা, সংসদে সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচন এবং সব আসনে ‘না’ ভোট রাখাসহ বিভিন্ন বিষয়ে দাবি জানানো হয়।

ফোরামের তরফে এ–সংক্রান্ত লিখিত আবেদনও দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) ২০৩০ সালের মধ্যে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব রাখার বিধানটি যুক্ত রাখার বিষয়ে ফোরামের প্রতিনিধিদের জানায়।

মাহীন সুলতান বলেন, ‘সরাসরি নির্বাচনে, যে সাধারণ আসনে, আমরা ৩৩ শতাংশ মনোনয়ন চাইছি সব পার্টি থেকে। এখন এটা আইনের মধ্যে আসবে নাকি আলোচনার মধ্যে আসবে, আমরা কিন্তু নারী আন্দোলন থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে এই দাবিটা তুলে ধরছি। আমরা মনে করছি যে যথেষ্ট যোগ্য নারী প্রার্থী আছে এখানে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য।’

নারীর রাজনৈতিক অধিকার ফোরামভুক্ত সংগঠনগুলো হচ্ছে ক্ষুব্ধ নারী সমাজ, গণসাক্ষরতা অভিযান, দুর্বার নেটওয়ার্ক ফাউন্ডেশন, নাগরিক কোয়ালিশন, নারী উদ্যোগ কেন্দ্র (নউক), নারীগ্রন্থ প্রবর্তনা, নারী সংহতি, নারী পক্ষ, নারীর ডাকে রাজনীতি, ফেমিনিস্ট অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশ (ফ্যাব), বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র ও ভয়েস ফর রিফর্ম।