সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে গিয়ে বিএনপিই বেকায়দায়: তথ্যমন্ত্রী

সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সঙ্গে মতবিনিময় করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ
ছবি: সংগৃহীত

সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে গিয়ে এখন বিএনপি ও তার মিত্ররাই বেকায়দায় পড়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।

আজ সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকেরা বিএনপি নিয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী এ কথা বলেন।  তথ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস এবং নেতাদের মধ্যে ইউনুস রুবেল, শরফুদ্দীন এলাহী, সহিদুর রহমান, তাপস দাশ গুপ্ত, ঈশা খান, সম্রাট শাহ ও ফারুক আহমেদ সভায় যোগ দেন। অতিরিক্ত সচিব (চলচ্চিত্র, সোশ্যাল ও নিউ মিডিয়া) মো. জাহাঙ্গীর আলম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের দেশে রাজনীতির ক্ষেত্রে হচ্ছে বিরোধী দল বিএনপির সাংঘর্ষিক রাজনীতি, তার মিত্রদের দেশবিরোধী অপতৎপরতা, বিদেশিদের পদলেহন এবং বিদেশিদের কাছে ধরনা দেওয়া। এগুলো করে তারা সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চায়। কিন্তু সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে গিয়ে এখন বিএনপি নিজেই বেকায়দায় পড়ে গেছে। এর কারণ, তারা ভেবেছিল ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনের সামনে সমাবেশ করে একটি বিশৃঙ্খলা করতে পারবে। সেটি তারা পারেনি এবং বুঝতে পেরেছে তাদের শক্তি এবং সামর্থ্য কতটুকু।’

বিএনপি কী করতে চায়, কী করতে পারে, সেটি নিয়ে ধারণা আছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সেটি মোকাবিলা করার প্রস্তুতি এবং পরিকল্পনা দুটোই আমাদের আছে। সুতরাং সেটি আমাদের কঠিন কোনো কাজ নয়।’

গত বছরের ডিসেম্বর মাসে বিএনপি দুটি হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘একটি হচ্ছে নয়াপল্টনে সমাবেশ করার গোঁ ধরা। সেই গোঁ ধরে তাদের রাজনৈতিক ক্ষতি হয়েছে। আরেকটি হচ্ছে তাদের সংসদ সদস্যদের বাধ্য করে পদত্যাগ করানো, এটাতেও তাদের ক্ষতি হয়েছে। এ ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হলো, সেই প্রশ্নই এখন বিএনপির অভ্যন্তরে ঘুরপাক খাচ্ছে। খন্দকার মোশাররফ সাহেবরা সেই হঠকারী সিদ্ধান্তের জবাব দিতে পারেন না তো, সে জন্য কর্মীদের কাছে উঁচু গলায় কথা বলে কর্মীদের আশ্বস্ত করতে চান, অন্য কোনো কিছু নয়।’

আবেদন পেলে বছরে ১০টি হিন্দি চলচ্চিত্র আমদানি

সিনেমা হলমালিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তাঁদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, চলচ্চিত্র অঙ্গনের সবার আবেদন পেলে বছরে ১০টি ভারতীয় হিন্দি সিনেমা আমদানি ও প্রদর্শন সম্ভব। তিনি বলেন, ‘যদি চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি, পরিচালক সমিতি, শিল্পী সমিতি এবং প্রযোজক সমিতি—এই চারটা সমিতি লিখিত আবেদন দেয়, তাহলে আমরা বিষয়টা নিয়ে উদ্যোগ নেব। সবাই লিখিত দিতে হবে। কারণ, অতীতে দেখা গেছে বেশির ভাগ সমিতি চাইছে কিন্তু শিল্পী সমিতি চায় না।’

মানুষের রুচির পরিবর্তনের কারণে শুধু দেশে নয়, সিনেমার শহর মুম্বাইতেও সিঙ্গেল স্ক্রিন অনেকগুলো সিনেমা হল বন্ধ হয়েছে, কলকাতাতেও তাই, কিন্তু সিনেপ্লেক্স দিন দিন বাড়ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, ‘বাংলাদেশে ব্যাংকের যে পুনঃঅর্থায়নযোগ্য ঋণ তহবিল মার্কেটের মধ্যে সিনেপ্লেক্স করলে তার জন্যও প্রযোজ্য। আলাদাভাবে শুধু সিনেপ্লেক্স করার বাধ্যবাধকতা নেই। মেট্রোপলিটন শহরগুলোতে ৫ শতাংশ সুদে আর মেট্রোপলিটন শহরের বাইরে সাড়ে ৪ শতাংশ সুদে এই ঋণ পাবেন এক বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ যেখানে সাধারণ ঋণের সুদ ৯ শতাংশ।’

‘বিএনপির ভুল ইসলামী আন্দোলন করেনি’

এদিন সকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দলের জাতীয় সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেন হাছান মাহমুদ।

এ সময় বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘বিএনপিকে ১০ ডিসেম্বর সমাবেশের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বরাদ্দ দিলেও তারা পল্টনের রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশের জন্য গোঁ ধরে থেকে শেষ পর্যন্ত গোলাপবাগে গেছে। ইসলামী আন্দোলনও বায়তুল মোকাররমের সামনে সমাবেশ করতে চাইতে পারত। নামাজের সুবিধা হতো কিন্তু রাস্তা বন্ধ হয়ে জনগণের ভোগান্তি হতো। তাঁরা সেটা করেননি, বিএনপির মতো ভুল করেননি। এ জন্য তাঁদের ধন্যবাদ।’