পুলিশ চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল
ফাইল ছবি

বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে দলটির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, পুলিশ বাহিনী চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। শনিবারের (২৮ অক্টোবর) ঘটনায় একজন পুলিশ সদস্য নিহত ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১১৫ জন সদস্য আহত হয়েছেন।

২৮ অক্টোবরের সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে রোববার রাতে জাতীয় সংসদে ৩০০ বিধিতে দেওয়া বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি সংসদে ওই সংঘর্ষের ঘটনার বিভিন্ন ছবিও দেখান।

সংসদের কার্যপ্রণালিবিধির ৩০০ ধারা অনুযায়ী, মন্ত্রীরা তাঁদের মন্ত্রণালয়ের অধীন কোনো বিষয় বা ঘটনা নিয়ে সংসদে বিবৃতি দিতে পারেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘অবাক কথা হচ্ছে, তারা (বিএনপির নেতা-কর্মীরা) পুলিশকে মারল, সাংবাদিক মারল, মহিলা লীগের মেয়েদের গায়ে হাত তুলল। গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করল। তারাই আবার হরতাল ডাকল। হরতাল ডেকে তারা ক্ষান্ত হয়নি। বাসে অগ্নিসংযোগ করেছে। সেই বাসে ঘুমিয়ে থাকা হেলপারকে পুড়িয়ে মেরেছে। এই ঘটনা ২০১৫ সালের ঘটনা মনে করিয়ে দেয়।’

প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলাসহ বিভিন্ন জায়গায় হামলার কথা তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাজেজ কমপ্লেক্সে স্থাপিত আধুনিক সিসি ক্যামেরাগুলো তারা (বিএনপির নেতা-কর্মীরা) ভেঙে ফেলেছে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল তাণ্ডব চালানো। তাণ্ডবের সাক্ষী যাতে না থাকে, সে জন্য সিসি ক্যামেরাগুলো ভেঙে ফেলা হয়।

বিএনপি একটি অসাংবিধানিক সাবজেক্ট (বিষয়) নিয়ে জনসমাগম করেছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পুলিশের ওপর বৃষ্টির মতো ঢিল ছুড়েছে তারা। এটা চোখে না দেখলে অনুমান করা যাবে না। মনে হয়েছিল তারা ব্যাগে করে ইটপাটকেল নিয়ে এসেছিল। সামনে যা পেল, তা-ই ভাঙচুর করেছে তারা। এ ধরনের তাণ্ডব মনে হয় কোনো সভ্য জগতে দেখা যায় না।

আসাদুজ্জামান খান বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পুলিশ কনস্টেবলকে নৃশংসভাবে পেটানো হয়। তাঁর মৃত্যু সুনিশ্চিত করার জন্য চাপাতি দিয়ে কোপানো হয়। এ ধরনের নৃশংসতা ও বর্বরতা কোনো মানুষ সহ্য করবে না। তাদের (বিএনপির নেতা-কর্মী) আক্রমণে গুরুতর আহত পুলিশের আরেকজন সদস্য এখন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। দুজন আনসার মারাত্মক আহত হয়েছেন।

জঘন্য উদাহরণ

সংসদে দেওয়া বক্তব্যের আগে রোববার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। গত শনিবারের হামলা, আগুন ও পুলিশের সদস্য নিহত হওয়াসহ পুরো ঘটনাকে বর্বরোচিত ও জঘন্য উদাহরণ বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, তারা হাসপাতালে অগ্নিসংযোগ করেছে, ভাঙচুর করেছে, ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। এই বর্বরোচিত হামলা গাজায় হাসপাতালে ইসরায়েল যেভাবে হামলা করছে, সেই ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখনো পুলিশের একজন সদস্য ও দুজন আনসার সদস্য মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।