বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখার ‘চক্রান্ত’ আমরা বুঝতে পারিনি: মির্জা আব্বাস

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আজ শনিবার সকালে  প্রচারপত্র বিতরণ ও গণসংযোগ কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসছবি: সাজিদ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের ‘চক্রান্ত’ বিএনপি বুঝতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, ‘বিএনপি যাতে ক্ষমতায় আসতে না পারে, সে জন্য বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার চক্রান্ত ছিল। আমরা বুঝতে পারিনি।’

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রচারপত্র বিতরণ ও গণসংযোগ কর্মসূচিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিদ্যুৎ, গ্যাস, জ্বালানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রচারপত্র বিতরণ ও গণসংযোগের এই কর্মসূচির আয়োজন করে।

কর্মসূচির উদ্বোধন করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘২৮ তারিখ (২৮ অক্টোবর) ছক কষে চক্রান্ত করা হয়েছে। বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য এ চক্রান্ত ছিল। দুই বছর আগে থেকে নকশা করে বেছে বেছে আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়। আমরা বুঝতে পারিনি। বোঝার ভুল হয়েছিল।’

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, অনেক নেতা-কর্মী জেলে গেছেন একটা মামলা নিয়ে আর বেরিয়েছেন ২০-২২টা মামলা নিয়ে। আওয়ামী লীগ এ দেশের জনগণের কোনো দাবি মানেনি।

কারাগারে বিএনপির নেতা-কর্মীদের নির্যাতনের অভিযোগ করেন মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, ‘রাজনীতি করার কারণে অনেকবার জেলে গেছি, কিন্তু এবারের মতো করুণ অবস্থার কথা বর্ণনা করতে পারব না। বিএনপির লোকজনের ওপর নির্যাতন ও অত্যাচার সীমা ছাড়িয়েছে।’

এর পরেও নেতা-কর্মীরা মনোবল হারাননি জানিয়ে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এ অহিংস আন্দোলন মানুষের বাক্‌স্বাধীনতা ও ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য চলবে। গণতান্ত্রিক আন্দোলন সাময়িক বাধাগ্রস্ত হতে পারে, কিন্তু কখনো ব্যর্থ হয়নি।

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘নিজের মধ্যে মনোবল রাখতে হবে, নিজেদের আরও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে আর নিজেদের ভেতরেও গণতান্ত্রিক চর্চা করতে হবে। আপনারা অনেক অত্যাচার সহ্য করেছেন। আরও সহ্য করতে হবে। কত সহ্য করবেন, বলা যাবে না। তবে হাত-পা ভেঙে গুঁড়া করে দেওয়া হবে, এটা কোনো রাজনীতি হতে পারে না।’ পরবর্তী প্রজন্ম আন্দোলনে এগিয়ে এলে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পরাজয় হবেই বলেও মনে করেন তিনি।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, দেশে এমন একটা অবস্থা সৃষ্টি করেছে বর্তমান সরকার, যেখানে মানুষের পেটে ভাত নাই, জিনিসপত্রের দাম লাগামহীন, কিন্তু তারপরও এ সরকারের কোনো বোধ হয় নাই। কারণ, একটাই তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার নয়। তাই তাদের কোনো জবাবদিহি করতে হয় না।

কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সমাবেশ সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনু। তিনি বলেন, সরকার নির্বাচনের আগে বিএনপির হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ দিয়ে নির্যাতন করেছে। বিএনপির আদর্শ থেকে দূরে নেওয়ার চেষ্টা করেছে, কিন্তু পারেননি।
সমাবেশ শেষে বিএনপির নেতা-কর্মীরা নয়াপল্টন এলাকায় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে প্রচারপত্র বিতরণ করেন। এ ছাড়া শহরের বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়েও এ প্রচারপত্র বিতরণ করা হবে।

কর্মসূচিতে যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও  কৃষকদলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি মিরপুর এলাকায় প্রচারপত্র বিতরণ ও গণসংযোগ কর্মসূচি পালন করেছে।