যারা ১৫ ও ২১ আগস্ট ঘটায়, মানুষ পোড়ায়, তাদের বর্জন করুন: তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারী ও হামলার পরিকল্পনাকারীদের বিচারের রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবিতে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন। জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা, ২০ আগস্ট
ছবি: পিআইডি

যারা ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্ট ঘটায়, মানুষ পোড়ায় ও পবিত্র কোরআন শরিফ পোড়ায়, যারা হত্যা-ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করে, তাদের বর্জন ও প্রতিহত করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারী ও হামলার পরিকল্পনাকারীদের বিচারের রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবিতে রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ২১ আগস্ট আহত-নিহত ব্যক্তিদের পরিবারগুলোর কেন্দ্রীয় সংগঠন গণতন্ত্র যোদ্ধা ২১ আগস্ট বাংলাদেশ এ সভার আয়োজন করে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি হত্যার রাজনীতি করে। হত্যার রাজনীতির মাধ্যমেই বিএনপির উত্থান, পথচলা ও ষড়যন্ত্র। তারা হত্যার রাজনীতিতেই বিশ্বাস করে। আজ তারা লম্বা লম্বা কথা বলে। এ দেশে তাদের রাজনীতি করারই অধিকার থাকা উচিত নয়।’

২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা বিএনপি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় অর্থায়নে তারেক রহমানের পরিচালনায় খালেদা জিয়ার জ্ঞাতসারেই পরিচালনা করা হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল মুশতাক ও জিয়া আর ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা ঘটিয়েছে তারেক রহমান ও খালেদা জিয়া। গ্রেনেড হামলায় তৎকালীন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেত্রী শেখ হাসিনা আহত হন, তাঁর দলের ২২ জন নেতা-কর্মী নিহত, পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন। সমগ্র পৃথিবী নিন্দা ও ধিক্কার জানিয়েছে। কিন্তু সংসদে একটি শোক প্রস্তাব আনতে বা কোনো আলোচনাও করতে দেওয়া হয়নি।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সেদিন বিদেশি সন্ত্রাসীরাও ঢাকায় এসেছিল, এ হামলা পরিচালনার সঙ্গে তাদেরও যুক্ত করা হয়েছিল। তারা যখন শুনেছে শেখ হাসিনা মারা যাননি, তখন চলে গেছে। হামলায় ব্যবহৃত গ্রেনেড জেলখানার মধ্যে পাওয়া গেছে। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া সামরিক বাহিনীর গ্রেনেড জেলখানার অপরাধীদের হাতে যাওয়া সম্ভব নয়। কয়েকজন হামলাকারীকে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়া হলো। এইভাবে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় তারেক রহমানের নেতৃত্বে খালেদা জিয়ার জ্ঞাতসারে ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলা ঘটানো হয়।’

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলার অন্যতম সাক্ষী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘শেখ হাসিনা সেদিন ভাগ্যক্রমে স্রষ্টার অশেষ কৃপায় বেঁচে গেছেন। বুলেটপ্রুফ গাড়ি যদি না থাকত, বাঁচার কোনো উপায় ছিল না। আমার শরীরে ৪০ থেকে ৪৫টি স্প্লিন্টার আছে, অনেকের ৫০০-৬০০ আছে।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এই দেশের মালিক এই দেশের মানুষ। এই দেশের ক্ষমতার মালিক এই দেশের মানুষ। এখানে কে ক্ষমতায় থাকবে, কে ক্ষমতায় থাকবে না, সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে এই দেশের মানুষ, অন্য কোনো দেশ নয়, অন্য কেউ নয়। আমরা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করি।’

গণতন্ত্র যোদ্ধা ২১ আগস্ট বাংলাদেশ সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসানের সঞ্চালনায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ সভায় বক্তব্য দেন।