খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় যোগ দিলেন চীনের আরেক চিকিৎসক দল

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ৮ জুলাই ভোরেফাইল ছবি

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় সহায়তা করতে যোগ দিলেন চীন থেকে আসা চার সদস্যের আরেকটি চিকিৎসক দল। আজ বুধবার রাত নয়টার পর তাঁরা ঢাকায় অবতরণ করেন। সেখান থেকে তাঁরা সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে আসেন।

দেশের একদল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস হাসপাতালের চিকিৎসক এবং লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অধীন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে। তাঁর চিকিৎসায় সহায়তা করতে ১ ডিসেম্বর চীনের চিকিৎসকদের পাঁচ সদস্যের একটি অগ্রবর্তী দল ঢাকায় আসে। আর আজ সকালে যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রিচার্ড বিয়েল ঢাকায় আসেন।

জানা গেছে, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত এই চিকিৎসকেরা তাঁর শারীরিক অবস্থা দেখার পর পরামর্শ দেবেন। তাঁদের পরামর্শের ওপর নির্ভর করবে, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চলবে, না কি লন্ডনে নেওয়া হবে।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, বুধবার রাত ১০টা ১০ মিনিটে এই চিকিৎসক দল এভারকেয়ার হাসপাতালে পৌঁছান। তাঁরা হলেন চি জিয়ানফান, ইয়ান ঝি, ঝং ইউহি এবং ম্যাং হং ও।

এর আগে সকালে যুক্তরাজ্য থেকে ঢাকায় আসা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রিচার্ড বিল ইতিমধ্যে এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার গঠিত মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকদের বৈঠক করেছেন।

৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্‌রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে গত ২৩ নভেম্বর দ্রুত তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। ৩০ নভেম্বর ভোরের দিকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে এসডিইউ থেকে সিসিইউতে নেওয়া হয়।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখনো বেশ উদ্বেগজনক পর্যায়েই রয়ে গেছে। বিশেষ করে তাঁর হৃদ্‌যন্ত্র, লিভার, কিডনি ও ফুসফুসের জটিলতা কাটছে না। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, দেখা যাচ্ছে চিকিৎসায় এ সমস্যাগুলোর একটির সামান্য উন্নতি হলে অন্যটির অবনতি ঘটছে; যা কয়েক দিন ধরে নানা মাত্রায় উদ্বেগজনকভাবে ওঠানামা করছে। তবে চিকিৎসকেরা এখনো এই অর্থে আশাবাদী যে তাঁরা খালেদা জিয়াকে যে চিকিৎসা দিচ্ছেন, তিনি তা গ্রহণ করতে পারছেন। ওষুধ কাজ করছে।

চিকিৎসকেরা এখনো খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থাকে ‘গুরুতর’ হিসেবে বিবেচনা করছেন। তাঁদের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, আগামী কয়েকটি দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিডনি কার্যক্ষমতায় স্থিতিশীলতা ছাড়া তাঁর সামগ্রিক শারীরিক অবস্থায় স্থায়ী উন্নতি আসা কঠিন।

যদিও কয়েক দিন ধরে সিসিইউতে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা গুজব চলছে। অনেকে তাঁর অবস্থা ‘জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে’ বলে রটাচ্ছেন।

তবে যেকোনো ধরনের গুজব ছড়ানো এবং গুজবে কান না দেওয়ার জন্য খালেদা জিয়ার পরিবার এবং দলের পক্ষ থেকে বিনীত অনুরোধ জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের অন্যতম এ জেড এম জাহিদ হোসেন।