বিএনপি নিয়ে ‘অবিবেচক’ মন্তব্য: এলডিপি থেকে হাসান সারওয়ার্দীকে সাময়িক বহিষ্কার
বিএনপি সম্পর্কে ‘অবিবেচক ও বিভ্রান্তিমূলক’ মন্তব্য এবং দলীয় গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কার্যক্রমের অভিযোগে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডিয়াম সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে দলটি। শনিবার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই সঙ্গে কেন তাঁকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, সে বিষয়ে আগামী তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। তবে এই বহিষ্কারাদেশকে সম্পূর্ণভাবে এলডিপির গঠনতন্ত্র পরিপন্থী বলে দাবি করেছেন সারওয়ার্দী।
এলডিপির সাময়িক বহিষ্কারাদেশের চিঠিতে বলা হয়, প্রেসিডিয়াম সদস্য চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিএনপি সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর ও আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন, যা এলডিপির কোনো দলীয় সিদ্ধান্ত বা পর্যবেক্ষণ নয়। হাসান সারওয়ার্দী তাঁর মন্তব্যে বলেছেন, বিএনপির সঙ্গে এলডিপির কোনো জোট বা লিখিত চুক্তি ছিল না; ছিল বিশ্বাস ও আলোচনা। সেই বিশ্বাস ভঙ্গ হয়েছে—এমন অভিযোগ তুলে তিনি বিএনপিকে ‘পতনশীল, পচনশীল, দুর্নীতিবাজ ও চাঁদাবাজ মাফিয়া সিন্ডিকেট’ বলে আখ্যায়িত করেন।
চিঠিতে আরও বলা হয়, এ ধরনের বক্তব্য দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী এবং অত্যন্ত দুঃখজনক। বিষয়টি এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদসহ দলীয় নেতৃত্বের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, দেশের ক্রান্তিলগ্নে বিএনপি একটি উদারনৈতিক রাজনৈতিক দল হিসেবে গণতান্ত্রিক ধারায় দেশকে ফিরিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
অন্যদিকে বহিষ্কারাদেশের প্রতিবাদ জানিয়ে চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী এক বিবৃতিতে প্রথম আলোকে বলেন, বাস্তবে তিনি কোনো আলাদা স্ট্যাটাস দেননি; প্রেসিডিয়াম সদস্য নিয়ামুল বশিরের একটি স্ট্যাটাসে তিনি মন্তব্য করেছিলেন মাত্র। নিজের মত প্রকাশ করা তাঁর সাংবিধানিক, রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার বলেও দাবি করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, তাঁর মন্তব্যে এলডিপির আদর্শ, নীতি বা স্বার্থের বিরুদ্ধে কিছুই ছিল না। তিনি শুধু বলেছেন যে বিএনপির সঙ্গে এলডিপির কোনো আনুষ্ঠানিক জোট বা লিখিত চুক্তি নেই—ছিল বিশ্বাস ও সমঝোতা, যা বিএনপি ভঙ্গ করেছে।
এলডিপির গঠনতন্ত্রের প্রসঙ্গ টেনে চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী বলেন, গঠনতন্ত্রের ৬–এর ৩ ধারা অনুযায়ী প্রেসিডিয়ামের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের লিখিত সিদ্ধান্ত ছাড়া কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। অথচ এ বিষয়ে তাঁকে বা প্রেসিডিয়ামকে কিছুই জানানো হয়নি, কোনো বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়নি।