শুধু ফারাক্কা বাঁধ নয়, অভিন্ন সব নদীর পানিবণ্টনে সব সময় গড়িমসি করেছে ভারত: মির্জা ফখরুল

আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে ভাসানী অনুসারী পরিষদের উদ্যোগে ফারাক্কা বাঁধের বিরুদ্ধে মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর লংমার্চ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল।

ভারতে সব সময় বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করেছে, এ অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, শুধু ফারাক্কা বাঁধ বা গঙ্গার পানি নয়। বাংলাদেশের ১৫৪টি অভিন্ন নদীর পানিবণ্টনের ক্ষেত্রে ভারত সব সময় গড়িমসি করেছে।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ভাসানী অনুসারী পরিষদের উদ্যোগে ফারাক্কা বাঁধের বিরুদ্ধে মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর লংমার্চ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল।

অভিন্ন নদীগুলোর পানিবণ্টন প্রশ্নে ভারতের অবস্থানের সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল। একই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, ‘তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি করার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সরকার ব্যর্থ। কারণ, এটা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার। তারা জনগণের পক্ষে দাঁড়াতে ব্যর্থ হচ্ছে। তারা ভারতের কাছে অত্যন্ত দুর্বল।’

বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের আন্দোলনের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্র রক্ষা করতে এবং সরকার পরিবর্তনের জন্য নিজেদেরই লক্ষ্য নিয়ে এগোতে হবে। এসব অন্য কেউ এসে করে দিয়ে যাবে না।’

মির্জা ফখরুল উল্লেখ করেন, সামনে আর কোনো বিকল্প পথ নেই। বাংলাদেশকে রক্ষা করতে দলমত নির্বিশেষে এক হয়ে এই সরকারকে সরাতে হবে। বাংলাদেশের মানুষকে নিজেদের অধিকার আদায়ে নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে হবে।

সভায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আজ হোক, কাল হোক, এ সরকার বদলাবেই। সরকার এমনিই নড়ছে। রিজার্ভ নেই, ভয়াবহ রকমের অর্থনৈতিক সংকটে আছে।  তিনি আরও বলেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে বিরোধী পক্ষ হেরেছে, না  জিতেছে, সে বিতর্ক বাদ দেন। দেশের মানুষ ঠিক করবে, কে ক্ষমতায় আসবে। ভারতের যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে তারা সেই সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করবে।

সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের রক্তের সম্পর্ক বলা হয়। এই রক্তের বাঁধনের জন্য প্রতিদিন সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যা করে সম্পর্কের দায় শোধ করতে হচ্ছে। এসব হত্যার উপযুক্ত প্রতিবাদ পর্যন্ত হয় না।

দেশের পররাষ্ট্রনীতির সমালোচনা করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, রাষ্ট্রকে দাসত্বের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক দিক থেকে সার্বভৌমত্বের দিক থেকে দেশ দাসত্বের কবলে পড়েছে।

সভায় ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে  ও সদস্যসচিব আবু ইউসুফ সেলিমের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম জেএসডির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি তানিয়া রব প্রমুখ।