সুষ্ঠু নির্বাচনকে গোরস্তানে পাঠিয়েছে সরকার: রিজভী

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনকে গোরস্তানে পাঠিয়েছে সরকার। নির্বাচন কমিশনাররা নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনে পরিণত করেছে। তাদের ভাবখানা দেখলে মনে হচ্ছে, তারা গোটা দেশের মালিক হয়ে গেছে। এখন তারা দেশের মানুষের সাংবিধানিক অধিকারেও হস্তক্ষেপ করতে চাইছে।

বিএনপিসহ সমমনা বিরোধী দলের ডাকা ১১তম ধাপের ৩৬ ঘণ্টা অবরোধের দ্বিতীয় দিনে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল শেষে রিজভী এসব কথা বলেন। এর আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দল। সংগঠনের পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। আজ বুধবার সকালে একটি মিছিল রাজধানীর মতিঝিলে আরামবাগ মোড় থেকে শুরু হয়ে নটর ডেম কলেজের সামনের সড়ক প্রদক্ষিণের মাধ্যমে কালভার্ট রোডে গিয়ে শেষ হয়।

রিজভী বলেন, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক অধিকারকে নিয়ন্ত্রণ করতে নানা ফর্মুলা বের করার অপচেষ্টা করছে। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে আর ইসি তাতে শেষ পেরেক ঠুকতে চাইছে। কিন্তু এতে কোনো লাভ হবে না। কোনো পরিপত্র জারি করে জনগণের আন্দোলন দমানো যাবে না। অবৈধ সরকারের পতন ঠেকানো যাবে না। এবার জনগণ বিজয় নিশ্চিত করেই ঘরে ফিরবে।

মিছিলে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মৎস্যজীবী দলের কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব মো. আবদুর রহিম, কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ওমর ফারুক পাটোয়ারী, মো. শাহ আলম, কেন্দ্রীয় সদস্য ইব্রাহিম চৌধুরী, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।

এ সময় নেতা–কর্মীরা সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ গ্রেপ্তার নেতা–কর্মীদের মুক্তি দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

পরে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, আজকে বাংলাদেশের জনগণ ও গণতান্ত্রিক বিশ্ব বলছে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এটা তো জনগণের ন্যায্য দাবি। সরকারের মন্ত্রী-সংসদ সদস্যরা এত বড় বড় কথা বলেন কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা শুনলে তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে যান। তাঁরা রাষ্ট্র শক্তি ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে ব্যবহার করছে। যাতে কেউ সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি না জানায়।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সরকার সারা দেশে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দায়ের করে গ্রেপ্তার ও হয়রানি অব্যাহত রেখেছে। তবু আমাদের নেতা–কর্মীরা দাবি আদায়ে রাজপথে বুক চিতিয়ে যেভাবে চলমান কর্মসূচি সফল করছেন তা বীরোচিত।’

অবরোধের সমর্থনে আজ রাজধানীর কয়েকটি স্থানে ঝটিকা মিছিল করেছে বিএনপি ও দলটির সহযোগী সংগঠনগুলো। এসব সংগঠনের পক্ষ থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

অবরোধের সমর্থনে রাজধানীর কমলাপুরে মিছিল করেছেন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা। এতে নেতৃত্ব দেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন।

আজ সকালে মিছিলটি কমলাপুর আইসিডি থেকে শুরু হয়। পরে টিটিপাড়া রেললাইন থেকে সাদেক হোসেন কমিউনিটি সেন্টার হয়ে মতিঝিলের মধুমিতা সিনেমার হলের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় সরকার পতনের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন কর্মীরা।  

মিছিলে কেন্দ্রীয় যুবদলের সহসভাপতি গোলাম মোস্তফা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন তারেক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সাবেক সদস্য ওভি আজাদ চৌধুরী নাহিদ, ছাত্রদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুর রহিম ভূঁইয়াসহ ওয়ারী ও গেন্ডারিয়া থানা যুবদল-ছাত্রদল নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

অবরোধের সমর্থনে আজ সকালে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ থেকে দৈনিক বাংলা মোড় পর্যন্ত মিছিল করেছে ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা। এতে নেতৃত্ব দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক মো. রাকিবুল ইসলাম।

অবরোধের ধূপখোলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সিইসির কুশপুত্তলিকা দাহ করেছেন।

অবরোধের সামর্থ্যে বিএনপির সহ–স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক আবদুল কাদির ভূঁইয়ার নেতৃত্বে মিছিল করেছেন এ অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা। আজ সকালে মিছিলটি শান্তিনগর বেইলি রোড থেকে শুরু হয়ে মৌচাক মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।