রাজনৈতিক দলগুলোকে বাধ্য করে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা যাবে না: আসাদুজ্জামান ফুয়াদ
রাজনৈতিক দলগুলোকে বাধ্য করে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।
তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়নের স্বার্থেই সংসদে সংরক্ষিত আসন থাকা জরুরি। কিন্তু দলগুলোকে হাতে-পায়ে বেঁধে পরিবর্তন চাপিয়ে দিলে বাস্তব অগ্রগতি সম্ভব নয়।
সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর চলমান সংলাপের এক অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
আলোচনায় এবি পার্টি নারী প্রতিনিধিত্ব ও উচ্চকক্ষ গঠনের বিষয়ে নিজেদের মতামত স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করেছে। দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২৫টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে প্রতিটি দলকে ন্যূনতম এক-তৃতীয়াংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দিতে হবে বলে কমিশন যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা বাংলাদেশের বাস্তবতায় এখনো বাস্তবায়নযোগ্য নয়।
আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘এক-এগারোপরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় রাজনৈতিক দলগুলোকে ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য রাখার বিধান দেওয়া হয়েছিল। অথচ দুই দশক পেরিয়ে গেলেও কোনো দলই সে লক্ষ্য পূরণ করতে পারেনি। তাই এখন এক-তৃতীয়াংশ মনোনয়ন বাধ্যতামূলক করা বাস্তবসম্মত নয়।’
এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সানী আবদুল হক বলেন, ‘নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে সংরক্ষিত আসনের সংস্কার প্রয়োজন। আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, রাজনৈতিক দলগুলো যেন ন্যূনতম ৫ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেয়। পরিস্থিতির উন্নয়ন হলে ভবিষ্যতে সেটা বাড়ানো যেতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সমাজ ও রাজনীতির কাঠামো এখনো এমন জায়গায় পৌঁছায়নি, যেখানে রাতারাতি বিপ্লবী পরিবর্তন আশা করা যায়। নারী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় ধাপে ধাপে এগোনোই বাস্তবসম্মত।’
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এবি পার্টির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সহসম্পাদক বেলাল হোসেন, নারী উন্নয়ন বিষয়ক সহসম্পাদক শাহিনুর আক্তার শিলা, নারী নেত্রী রাশিদা আক্তার মিতু এবং যুব নেত্রী ইশরাত জাহান উপস্থিত ছিলেন।
দিনব্যাপী এই সংলাপে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), গণসংহতি আন্দোলনসহ প্রায় ৩০টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়।
বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ সভাপতিত্ব করেন। সঞ্চালনায় ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া।